ফাইল চিত্র।
তাঁর অন্যতম কল্যাণ প্রকল্প ‘লক্ষ্মীর ভান্ডার’ যাঁদের জন্য, যাঁরা সমাজের প্রাণভোমরা, তৃতীয় তৃণমূল সরকারের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে নিজের শপথের দিনটা সেই মা-বোনেদেরই উৎসর্গ করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সরকারের মানবিক মুখ তুলে ধরতে বৃহস্পতিবার নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামের অনুষ্ঠানে লক্ষ্মীর ভান্ডার প্রকল্পটিকেই ফের মেলে ধরল রাজ্য। এক কোটি ৫১ লক্ষ মহিলা আগে লক্ষ্মীর ভান্ডারের আওতায় এসেছেন। বিশ্ব বাংলা বাণিজ্য সম্মেলনে আরও পাঁচ লক্ষ এবং এ দিন আরও ২০ লক্ষ মহিলার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে টাকা গেল।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘ভোটের আগে আমরা বলেছিলাম, ক্ষমতায় এলে লক্ষ্মীর ভান্ডার ছাড়াও কৃষকদের অধিকারের টাকা দ্বিগুণ করব। দুয়ারে রেশন, দুয়ারে সরকার, ছাত্রছাত্রীদের ভাতা— সব প্রকল্প কার্যকর হয়েছে। প্রক্রিয়া মেনে চলার জন্য কয়েকটি কাজে সময় লেগেছে। আমরা যা বলি, করি! অন্যেরা কুৎসা করে। আমরা করেছি লক্ষ্মীর ভান্ডার, ওরা করেছে কুৎসার ভান্ডার!’’ মুখ্যমন্ত্রীর দাবি, ‘‘১১ বছরে যা কাজ করেছি, ক্ষমতা থাকলে ‘ফেস মি’। আমি সবার মুখোমুখি হওয়ার সাহস রাখি, অন্যেরা রাখে না!’’ তাঁর দাবি, ১১ বছরে রাজ্যের উন্নয়ন সূচক (গ্রস ডোমেস্টিক স্টেট প্রডাক্ট) দ্বিগুণ হয়েছে। দীর্ঘ করোনাকালে গোটা দেশের বৃদ্ধি যখন নেতিবাচক, সেই সময় পশ্চিমবঙ্গে বৃদ্ধি হয়েছে সাত শতাংশের বেশি।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘এখন লোকে গর্বের সঙ্গে হাসপাতালে যায়, চিকিৎসা করায়। আড়াই কোটি লোক পাঁচ লক্ষ টাকার স্বাস্থ্যসাথী পায়।’’ মা-হারা বাচ্চাদের জন্য মাতৃদুগ্ধের মাতৃস্নেহ ব্যাঙ্ক, গরিবের সৎকারের ভাতা, প্রাথমিকের পড়ুয়াদের জুতোর ব্যবস্থা করার কথাও বলেন মমতা।
এ দিন নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়াম থেকে বেশ কয়েকটি কাজের সূচনা করেন মুখ্যমন্ত্রী। তার মধ্যে আছে জন্ম ও মৃত্যুর সার্টিফিকেট বা শংসাপত্র দেওয়ার জন্য নতুন পোর্টাল। সরকারি হাসপাতাল, পঞ্চায়েত ও পুরসভার মাধ্যমে অনলাইনে জন্ম ও মৃত্যুর শংসাপত্রের জন্য ওই পোর্টালে আবেদন করা এবং তা সংগ্রহ করা যাবে। ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মনোরোগ বিভাগে নবনির্মিত ভবন এবং বেশ কয়েকটি নতুন পাঠ্যক্রম চালু করা হয়েছে। তুফানগঞ্জে মানসিক হাসপাতালের সম্প্রসারণের পাশাপাশি পেডিয়াট্রিক আইসিইউ চালু হয়েছে ফুলবাগানের বিধান শিশু হাসপাতালে। মে মাসে বীরভূমে এবং মেদিনীপুরে কাঁসাই নদীর উপরে নতুন সেতু উদ্বোধন করার কথা জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
রাজ্যের নতুন সব প্রকল্পের লোগো আঁকেন মুখ্যমন্ত্রীই। সেই জন্য তাঁকে কৃতজ্ঞতা জানান মন্ত্রীরা। ‘‘কোনও লোগোর জন্য পশ্চিমবঙ্গ সরকারের পয়সা লাগে না! এটাও আর এক লক্ষ্মীর ভান্ডার,’’ বললেন মমতা।