মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
বিনা ভোটাভুটিতে তৃতীয়বারের জন্য পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার অধ্যক্ষ নির্বাচিত হলেন বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। শনিবার সেই নির্বাচন উপলক্ষে সভায় বক্তৃতা করতে গিয়ে বাংলার মানুষ, নারীশক্তি এবং তরুণ প্রজন্মকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পাশাপাশিই বিরোধীদের একহাত নিলেন। এবং জানিয়ে দিলেন, রাজ্যের সকোনও এলাকায় কোনও অশান্তি তিনি বরদাস্ত করবেন না! মমতার কথায়, ‘‘বাংলার মানুষ প্রমাণ করেছেন, তাঁদের মেরুদন্ড আছে। বাংলার মেরুদন্ড আছে। তাঁরা বলেছেন, চিত্ত যেথা ভয়শূন্য, উচ্চ যেথা শির।’’
মমতা বলেন, ‘‘এ এক অবিশ্বাস্য ঘটনা। ইতিহাস। মিরাক্ল! আমি বাংলার নারীশক্তির কাছে মাথা নত করছি। পাশাপাশি, তরুণ প্রজন্মের ভোটও আমার পেয়েছি। অনেকের কোভিড হওয়া সত্ত্বেও তাঁরাদীর্ঘক্ষণ লাইনে দাঁড়িয়ে ভোট দিয়েছেন। কৃতজ্ঞতায় আমার মাথা নত হয়ে আসছে।’’ মমতার আরও বক্তব্য, ‘‘নির্বাচন কমিশনের প্রত্যক্ষ সহযেোগিতায় কোথাও কোথাও রিগিং হয়েছে। আমরা সব জানি। সব বুঝতে পেরেছি। আমরা আবার বলছি, নির্বাচন কমিশনের সংস্কার হওয়ার প্রয়োজন আছে। কয়েকজন অবসরপ্রাপ্ত অফিসার একটা চিরকুট লিখে লোককে বদলি করে দিচ্ছেন!’’ বিজেপি-র শীর্ষনেতৃত্বকে একহাত নিয়ে মমতা বলেছেন, ‘‘কত কোটি টাকা খরচ করেছে, তার কোনও বিসেব নেই। হোসপাইপে করে জল ঢালার মতো টাকা খরচ করেছে। ওই টাকাটা খরচ করে যদি সকলকে টিকা দেওয়া যেত, তা হলে এতদিনে সকলের টিকা পাওয়া হয়ে যেত। সার্বিক টিকাকরণ হত।’’
বিরোধী বিজেপি অধ্যক্ষ নির্বাচন বয়কট করেছে। তারা জানিয়েছে, বিধানসভার অভিবেশনও বয়কট করবে তারা। নিজের ভাষণে সেই প্রসঙ্গও টেনে এনেছেন মমতা। বলেছেন, ‘‘যে বিরোধিরা জিতে এসেছেন, তাঁরা বেশিরভাগই জিতে এসেছেন (নির্বাচন) কমিশনের দয়ায়। তাঁরা স্পিকার নির্বাচন বয়কট করেছেন! ওঁদের তো জনগণ বয়কট করেছে! ইলেকশন কমিশন না থাকলে ওরা ৩০টা আসনও পেত না।’’ পাশাপাশিই মুখ্যমন্ত্রী জানিয়ে দিয়েছেন, তিনি কোনও এলাকায় কোনও রকম অশান্তি বরদাস্ত করবেন না। তাঁর কথায়, ‘‘বিধায়কদের অনুরোধ, তাঁরা এলাকায় শান্তি রাখুন। আমাদের আরও বেশি করে মানুষের কাছে পৌঁছতে হবে। কোভিড রোগীদের সাহায্য করতে হবে। আমি কিন্তু কোথাও কোনও রকমের অশান্তি বরদাস্ত করব না। কোথাও কোনও দাঙ্গা করার চেষ্টা হলে সঙ্গে সঙ্গে পুলিশকে জানাবেন। ওরা প্রচারের সাম্প্রদায়িকতা ছড়ানোর চেষ্টা করেছিল। এখন হেরে গিয়েও সেই চেষ্টা করছে। কিন্তু বাংলার মানুষ এসব মেনে নেননি। নেবেনও না।’’