ছবি: সংগৃহীত।
শিয়রে পঞ্চায়েত ভোট। তার ঠিক আগেই বার্ধক্য এবং পরিবার সহায়ক ভাতা প্রাপকদের তালিকা থেকে প্রায় দেড় লক্ষ উপভোক্তার নাম বাদ দিয়েছে পঞ্চায়েত দফতর। সোমবার বিধানসভায় মন্ত্রিসভার বৈঠক এ নিয়ে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পঞ্চায়েত মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের কাছে জানতে চান, কেন এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হল? পঞ্চায়েত মন্ত্রী জানান, দিল্লি নাম বাদ দিয়েছে। যা শুনে আরও ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন মুখ্যমন্ত্রী। সঙ্গে সঙ্গে পঞ্চায়েত দফতরের ওই বিজ্ঞপ্তি খারিজ করার নির্দেশ দেওয়া হয়। ঠিক হয়েছে, রাজ্যই বাদ পড়া দেড় লক্ষ উপভোক্তাকে মাসে ৫০০ টাকা করে ভাতা দেবে।
আরও পড়ুন: পাহাড়ে রইল আর ৪ কোম্পানি
এ দিন বার্ধক্য ভাতা প্রাপকদের নাম বাদ দেওয়ার প্রসঙ্গটি তোলেন পরিবহণমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী। তিনি মুখ্যমন্ত্রীকে অনুরোধ করেন যাতে পঞ্চায়েত ভোটের আগে প্রায় দেড় লক্ষ বয়স্ক মানুষের ভাতা ফের চালু করে রাজ্য। তাঁর জেলাতেই প্রায় সাড়ে সাত হাজার বয়স্কের ভাতায় কোপ পড়েছে বলে জানান তিনি। অন্য মন্ত্রীরাও একই নালিশ জানান। যা শুনে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন মমতা। তিনি পঞ্চায়েত মন্ত্রীর কাছে জানতে চান, কেন এমন হল? সুব্রতবাবু জানান, দিল্লির নীতি অনুযায়ী সারা দেশে উপভোক্তাদের তালিকা সংশোধন হয়েছে। ফলে কিছু নাম বাদ পড়েছে। পঞ্চায়েত মন্ত্রীর যুক্তি মানতে চাননি মুখ্যমন্ত্রী। তিনি জানিয়ে দেন, যাঁদের নাম বাদ পড়েছে তাদের রাজ্য সরকারই ভাতা দেবে।
পরে পঞ্চায়েত মন্ত্রী বলেন, ‘‘দিল্লির নির্দেশে এই সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছিল। বার্ধক্য এবং পরিবার সহায়তা প্রাপকদের যাঁরা বাদ পড়েছেন, তাঁদের মুখ্যমন্ত্রী ভাতা দিয়ে দেবেন। আর কোনও সমস্যা নেই।’’ পরিবহণ মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী অবশ্য কিছু বলতে চাননি।
পঞ্চায়েত দফতর সূত্রের খবর, রাজ্যে এখন বার্ধক্য এবং পরিবার সহায়তা ভাতা প্রাপকের সংখ্যা ২৫ লক্ষ ৯৭ হাজার। এঁদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে মাসে ৫০০ টাকা ভাতা পৌঁছয়। ৩ লক্ষ ২১ হাজার প্রাপক নগদে ভাতা নেন। রাজ্যের আর্থসামাজিক সমীক্ষার ভিত্তিতে সম্প্রতি ভাতা প্রাপকদের আর্থিক পরিস্থিতি খতিয়ে দেখা হয়। দেখা যায়, প্রায় দেড় লাখ ভাতা প্রাপকের হতদরিদ্র অবস্থা কেটেছে। ফলে সেই সব নাম তালিকা থেকে বাদ পড়ে। পঞ্চায়েত কর্তাদের দাবি, মুখ্যমন্ত্রীর দফতরের অনুমোদন নিয়েই সেই কাজ করা হয়েছিল। তখন রাজ্য নিজের কাঁধে দায়ভার নেওয়ার কথা বলেনি। কিন্তু এখন পঞ্চায়েত ভোটের আগে কোনও ঝুঁকি নিতে চায় না সরকার। ফলে দায়িত্ব এখন নবান্নের।