এ বার আমের ফলন ভাল হয়েছে বলে জানিয়েছেন আমচাষিরা।
ভোটের প্রচার মালদহে এসে মমতা বলেছিলেন তাঁর আম চাই, আমসত্ত্ব চাই, সঙ্গে আমের আচারও চাই। ভোটের ফল মুখ্যমন্ত্রীর সেই ইচ্ছে কিছুটা পূরণ করেছে। তবে মালদহের আম এ বার আমসত্ত্ব আর আমের আচার হয়েই থেকে যাবে বলে আশঙ্কা আমচাষিদের। তাঁরা জানিয়েছেন, করোনা পরিস্থিতি এবং লকডাউনের জেরে বিদেশে আমের রফতানি তো দূর দেশে এমনকি রাজ্যেও মালদহের হিমসাগর এবং ফজলি আমের ক্রেতা পাওয়া যাচ্ছে না।
আম চাষের অনুকূল আবহাওয়া থাকায় এ বার আমের ফলন ভাল হয়েছে বলে জানিয়েছেন আমচাষিরা। তবে জোগান থাকলেও চাহিদা নেই। রাজ্যে আংশিক লকডাউনের জন্য অল্প সময়ের জন্য খুলছে বাজার। রাজ্যের পাইকারী ব্যবসায়ীদের মধ্যেও আম কেনার তেমন আগ্রহ দেখা যাচ্ছে না বলেই দাবি আমচাষিদের। মালদহ মার্চেন্ট চেম্বার অব কর্মাসের সম্পাদক জয়ন্ত কুণ্ডু বলেন, “এই সময় ব্যবসায়ীরা আমের ফলন দেখে দরদাম করে তা চাষিদের কাছ থেকে কিনে নিতেন। কিন্তু আংশিক লকডাউনের ফলে এ বার ক্রেতার দেখা মিলছে না। বিদেশেও আম রফতানি করা সম্ভব হবে না।’’
মালদহের আমের আমদানি-রফতানি সংক্রান্ত ব্যবসায়ী সংগঠনের সম্পাদক উজ্জ্বল সাহা বলেন, “প্রতি বছর এই সময় মালদহের আম রফতানির তোড়জোড় শুরু হয়ে যায়। ভিন্ রাজ্য থেকে ক্রেতারা মালদহের আম কিনতে জেলায় আসেন। রাজ্য সরকারও মালদহের আম রফতানির জন্য অথবা বিদেশের বাজার মালদহের আমের স্বাদের পরিচয় করানোর জন্য বিভিন্ন দেশের আমদানি রফতানির প্রতিনিধি দল জেলায় পাঠান। কিন্তু গত দু’বছরেই আমের মরসুম চলাকালীন করোনা পরিস্থিতি এবং লকডাউন হওয়ায় জেলার আম ব্যবসায়ীরা প্রবল ক্ষতির মুখে পড়েছেন।” এই পরিস্থিতিতে রাজ্য সরকারকে আম চাষি এবং ব্যবসায়ীদের পাশে দাঁড়ানোর অনুরোধ করা হবে বলে জানান উজ্জ্বল।
গত বছরও আমের মরসুম জুড়ে ছিল লকডাউন। ফলে বিপুল আম উৎপাদনের পরও মালদহের আম চাষি এবং ব্যবসায়ীরা ক্ষতির মুখে প়ড়েছিলেন। অশোক মন্ডল নামে এক আমচাষির কথায়, ‘‘এ বছরও রেকর্ড ফলন হয়েছে। কিন্তু জেলার বাজারগুলিতে কাঁচা আম বিকোচ্ছে মাত্র ১০ টাকা কেজি দরে। অন্যান্য মরসুমে এই সময় ৩০ থেকে ৪০ টাকা কেজি দরে আম বিক্রি হত।’’ করোনার ভয়েই এ বছরও আমের ক্রেতায় টান পড়েছে বলে মনে করছেন চাষিরা।