আদিবাসী ও জনজাতিভুক্ত ছাত্রছাত্রীদের কলকাতার পুজো ঘুরিয়ে দেখাল স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ‘শের’ এবং ‘বন্দিপুর প্রকৃতি প্রেমিক সমিতি’। এক অন্য রকম উদ্যোগ নিলেন তাঁরা। আদিবাসী পরিবারের পড়ুয়াদের নিয়ে এই পুজোয় কিছু সামাজিক অনুষ্ঠান, পুজো মণ্ডপে ভ্রমণের আয়োজন করা হয়েছিল। এদের অনেকের কাছেই কলকাতার ঠাকুর দর্শন কল্পনাতীত। অভিভাবকরাও কেউ কেউ ছিলেন তাঁদের ছেলেমেয়েদের সঙ্গে।
বিগত বেশ কয়েক বছর ধরে হুগলির হরিপাল ব্লক ও তার পার্শ্ববর্তী এলাকায় বন্য প্রাণ সংরক্ষণ নিয়ে কাজ করছে শের এবং বন্দিপুর প্রকৃতি প্রেমিক সমিতি। নগরায়নের দৌলতে জঙ্গলের পর জঙ্গল সাফ হয়ে গেলেও, এখনও আদিবাসী বা জনজাতিভুক্ত মানুষরা প্রকৃতির সঙ্গে নিবিড় ভাবে জড়িয়ে থাকতে চান। শহরের কাছেপিঠে চলে এলেও, শহুরে জীবনযাপন এঁদের বেশির ভাগের থেকেই অনেক দূরে। দৈনন্দিন জীবনে তাঁরা এখনও জলার মাছ ধরে বা মাঠের ইঁদুর মেরে খান। এগুলো কখনও প্রয়োজন, কখনও শুধুই প্রথা বা বিনোদনের জন্য। যেমন প্রথাগত শিকার উৎসবের সময় এঁদের কটাস, গন্ধগোকুল, ভাম ইত্যাদি শিকার করতে দেখা যায়। যদিও সারা পৃথিবী জুড়ে প্রকৃতির বিপর্যয়ের পিছনে আদিবাসী-জঙ্গলবাসী মানুষদের ভূমিকা নেই, যদিও এই পরিস্থিতির জন্য পুরোপুরিই আধুনিক সভ্যতা দায়ী, তবুও আজকের বিপজ্জনক পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে আদিবাসী সমাজের মানুষদের মধ্যেও প্রচার চালাতে হচ্ছে পরিবেশ সচেতনতা নিয়ে।
আরও পড়ুন: আপনি সবার মুখ্যমন্ত্রী, জিয়াগঞ্জ হত্যাকাণ্ডে মমতার দিকে আঙুল তুলে টুইট অপর্ণার
আরও পড়ুন: ভোটার তথ্য যাচাই কর্মসূচিতে বঙ্গকে স্থানচ্যুত করে শীর্ষে উত্তরপ্রদেশ
অন্য দিকে আবার এই আদিবাসী মানুষগুলোই গাছপালা, জীবজন্তু পরিবেশে কতটা গুরুত্বপূর্ণ, গাছ থেকে তৈরি বিভিন্ন ঔষধি প্রাত্যহিক ব্যবহারিক জীবনে তার কী গুণাগুণ তা অন্য অনেকের থেকে অনেক বেশি জানেন। জীববৈচিত্র বাঁচিয়ে রাখতেও এঁদের সহযোগিতা ভীষণ জরুরি। এই রকম কয়েকটি জনজাতি ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে হুগলির বাগানবাটি, দঁক, কাসিমেরপুর, বাগানপাড়া, জেজুর ইত্যাদি এলাকায়। তাঁদের মধ্যে সচেতনতা বাড়ানোর জন্যই এই পদক্ষেপ।
এর ফলে, আগামী দিনে তাঁরা তাঁদের ছেলেমেয়েদের ‘শিকার উৎসবের’ মতো অনুষ্ঠান থেকে দূরে সরিয়ে রাখবেন ও নিজেরাও দূরে সরে থাকবেন বলে আশা উদ্যোক্তাদের।