হে ঈশ্বর এমন দৃশ্য যেন কোনও ছেলেকে না দেখতে হয়, চোখের সামনে চাপা পড়ে গেল বাবা। আর আমাকে হাঁ করে তা দেখতে হল।
এক বছর ধরে বাবার সঙ্গে কাজ করছি। নতুন বাড়ি করেছি, বাজারে কিছু ধার দেনাও হয়েছে। তাই বাবার সঙ্গে আমিও জুতে গেছি। আমি রোজই ওই সময়ে চা খেতে যাই আর বাবাও আমাদের সঙ্গেই আসে। এসে মার সঙ্গে ফোনে কথা বলে। তার পর রাতের রান্নার ব্যবস্থা করতে চলে যায় সেতুর নীচে। তারপর আমরা চা খেয়ে যে যার কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়ি। মঙ্গলবারও বাবা চা খেতে এসেছিল। কিছুটা দূরে গিয়ে মা’কে ফোন করল। তারপর চা খেয়ে ঘরে চলে গেল। তারপর চা খেয়ে আমিও কাজের জন্য ঘরে ফিরছিলাম।
হঠাৎই বিকট শব্দ, তারপর দেখি নিমেষের মধ্যেই ভেঙে পড়ল সেতু। তার নীচে বাবা। তারপর আর কিছুই দেখতে পাইনি। তারপর চারদিকে সবাই ছোটাছুটি করছিল, কী করব আমি বুঝে উঠতে পারছিলাম না। আমাদের গ্রামের আর সবাই চায়ের কাপ ফেলেই ছুটে এল। আমি বহুবার বাবাকে ফোন করলাম কিন্তু ফোন বেজেই গেল। খুব অসহায় লাগছিল।
আরও পড়ুন: রেলকে খোঁচা মমতার, পাল্টা যুক্তি রেলেরও
ধুলোর আস্তরণ থিতিয়ে গেলে খোঁজাখুঁজির চেষ্টা করেও কিছুই করতে পারলাম না। তারপর সন্ধে সাতটা নাগাদ বাড়িতে মা’কে ফোন করে বললাম বাবার কথা। কিন্তু কী করে যে মাকে বলব, আমি বুঝতে পারছিলাম না। মা কথাটা শোনার পর মা’র শুধু কান্নার আওয়াজটাই শুনতে পেলাম। রাত যখন সাড়ে দশটা, তখন বাবার ফোনে আবার ফোন করলাম। সুইচড অফ। তারপর সারারাত শুধু বসেই থাকলাম বাবার অপেক্ষায়। ঘণ্টার পর ঘণ্টা, পেরিয়ে গেল রাত। আজ বিকেলে দেখলাম, বাবার থ্যাঁতলানো দেহ উঠে এল।