বেইলি ব্রিজ মাঝেরহাটে।
বেশ কয়েকটি নকশার প্রস্তাবনা যাচাই করেছেন পূর্ত দফতরের ইঞ্জিনিয়ারেরা। আবার করবেন। শেষ পর্যন্ত যে-সংস্থা মাঝেরহাটের নতুন সেতু তৈরির বরাত পাবে, চূড়ান্ত নকশা তৈরি করতে হবে তাদেরই। দুর্গাপুজো শেষ। মাঝেরহাটের প্রস্তাবিত নতুন সেতুর টেন্ডার বা দরপত্র দ্রুত খোলার তোড়জোড় চলছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রের খবর।
প্রশাসনিক কর্তারা মনে করছেন, নির্মাণ সংক্রান্ত সব রকম শর্ত পূরণ করে একটি আধুনিক ও মজবুত সেতু গড়তে প্রায় ১৪০ কোটি টাকা খরচ হতে পারে। সেই জন্য হাড্ডাহাড্ডি প্রতিযোগিতার আবহে প্রকল্পের বরাত পাওয়ার লড়াই চালাতে হচ্ছে দরপত্র দেওয়া সংস্থাগুলিকে।
পূর্ত দফতরের একটি অংশ জানাচ্ছে, বরাত পাওয়া সংস্থাকেই যে প্রকল্পের চূড়ান্ত নকশা তৈরি করতে হবে, সেটা প্রথম শর্ত। সেতু তৈরির যোগ্যতা হিসেবে দরপত্রে যে-সব মানদণ্ড নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়েছে, সেগুলি মান্য করার সঙ্গে সঙ্গে ‘পাওয়ারপয়েন্ট প্রেজেন্টেশন’ বা প্রস্তাবিত সেতুর নকশা তুলে ধরতে হবে প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণকারী সংস্থাগুলিকে। সব ক’টি নকশার প্রস্তাবনা যাচাই করবেন পূর্ত দফতরের ইঞ্জিনিয়ারেরা। বরাত দেওয়ার ক্ষেত্রে প্রস্তাবনাগুলিকে পৃথক ভাবে গুরুত্ব দেওয়া হবে।
এক পূর্তকর্তার কথায়, ‘‘দরপত্র প্রক্রিয়া শুরুর আগে দফতরের বিশেষজ্ঞেরা বিভিন্ন সংস্থার সঙ্গে কথা বলেছেন। কী ভাবে প্রকল্পের কাজ করা যায়, প্রকল্পের জন্য কোন সংস্থাগুলি উপযুক্ত, সেই আলোচনার সূত্রে তার সবিস্তার ধারণা পাওয়া গিয়েছে। সেই পর্বেই কয়েক দফায় বিভিন্ন নকশার প্রস্তাবনা খতিয়ে দেখা হয়েছিল। চূড়ান্ত পর্বে আবার তা খুঁটিয়ে পরীক্ষা করা হবে।’’
আরও পড়ুন: পুজোয় লক্ষ্মীলাভ শিয়ালদহ স্টেশনের
পূর্ত দফতরের অন্য একটি অংশের ধারণা, প্রাথমিক ভাবে প্রকল্পের খরচ আনুমানিক ১৪০ কোটি টাকা ধরা হলেও সেটাই চূড়ান্ত নয়। প্রয়োজন অনুযায়ী সেই হিসেব বদলাতে পারে। ইঞ্জিনিয়ারদের কারও কারও দাবি, অন্তত ১০০ বছরের স্থায়িত্বের লক্ষ্য নিয়ে নতুন সেতু তৈরি করা উচিত। অত গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় এই প্রশ্নে কোনও সমঝোতা করা ঠিক নয়। চার লেনের সেতু তৈরিতে প্রযুক্তি এবং উপাদান সর্বোচ্চ মানের হওয়া প্রয়োজন। প্রশাসনের এক কর্তা বলেন, ‘‘এই প্রকল্পের কাজে টাকাটা কোনও বাধা হবে না।’’
এক বছরের মধ্যে সেতু তৈরির কথা বলা হচ্ছে। সেটা কি সম্ভব?
নবান্নের কর্তারা জানাচ্ছেন, প্রকল্প শুরুর আগে প্রশাসনিক দিক থেকে জটিল প্রক্রিয়াগুলি সেরে রাখার ফলে সময় বেঁচেছে অনেকটা। পুজো মিটে গিয়েছে। এ বার দ্রুত সেতু তৈরির কাজ শুরু হলে এবং নির্মাণের জটিল কাজগুলি অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে করা গেলে এক বছরের মধ্যে তা শেষ করা সম্ভব। এক ইঞ্জিনিয়ারের কথায়, ‘‘সেতুর উপরিভাগের কাঠামো পৃথক ভাবে তৈরি করা যায়। ওই একই সময়ের মধ্যে স্তম্ভগুলি তৈরি করা গেলে সেতুর বাকি অংশগুলি তার সঙ্গে জুড়তে বেশি সময় লাগবে না। তবে এই সব হিসেব রয়েছে খাতায়-কলমে। কাজ শুরু হলে প্রকৃত পরিস্থিতি বোঝা সম্ভব হবে।’’