মহুয়া মৈত্র। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
ইডির তলবে সাড়া দিয়ে বৃহস্পতিবার দিল্লি যাচ্ছেন না মহুয়া মৈত্র। কৃষ্ণনগরের তৃণমূল প্রার্থী জানিয়েছেন, সকালে নিজের লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত কালীগঞ্জে প্রচার কর্মসূচি রয়েছে তাঁর। ইডির তলবে তিনি সাড়া দিচ্ছেন কি না, এই প্রশ্নের উত্তরে এক টিভি চ্যানেলকে মহুয়া বলেন, “এখন ৯টা ৪০ বাজে। আমি কৃষ্ণনগরের বাড়ি থেকে বেরোচ্ছি। আমার আজকের প্রোগ্রাম কৃষ্ণনগর লোকসভা কেন্দ্রের অধীনে কালীগঞ্জ বিধানসভার গোবরা পঞ্চায়েতে। সেখানে নয়াচর গ্রামে আমার প্রচারের প্রোগ্রাম রয়েছে।”
কালীগঞ্জ বিধানসভা এলাকায় প্রচারে গিয়ে একটি চায়ের দোকানে নিজের হাতে চা তৈরি করেন মহুয়া। দলের কর্মীসমর্থক তো বটেই, স্থানীয়দের হাতেও চায়ের ভাঁড় এগিয়ে দেন।
ইডি সূত্রে বুধবারই জানা যায়, বিদেশি মুদ্রা নিয়ন্ত্রণ আইন লঙ্ঘনের একটি মামলায় মহুয়াকে তলব করেছে তারা। বৃহস্পতিবার, অর্থাৎ ২৮ মার্চই দিল্লিতে ইডির সদর দফতরে মহুয়াকে হাজিরা দিতে বলা হয়। উল্লেখ্য, অতীতেও এই একই মামলায় কৃষ্ণনগরের বহিষ্কৃত সাংসদকে তলব করেছিল ইডি। কিন্তু সেই সময়েও হাজিরা এড়িয়ে যান তিনি। শুধু মহুয়া নন, এই একই মামলায় ব্যবসায়ী দর্শন হীরানন্দানিকেও বৃহস্পতিবার তলব করেছিল ইডি।
এই মামলা সম্পর্কে ইডি সূত্রে জানা যায়, বিদেশি মুদ্রা নিয়ন্ত্রণ আইনে মহুয়ার বিরুদ্ধে একটি মামলা হয়েছে। তদন্তকারী অফিসারদের নজরে বিদেশি মুদ্রা লেনদেনের কয়েকটি ঘটনা রয়েছে। একটি নন-রেসিডেন্ট এক্সটারনাল (এনআরই) অ্যাকাউন্টের লেনদেনও তাঁদের নজরে রয়েছে। সেই সংক্রান্ত বিষয়েই জিজ্ঞাসাবাদ করতে মহুয়া এবং দর্শনকে তলব করা হয়েছে।
‘ঘুষের বিনিময়ে প্রশ্ন’কাণ্ডে ইতিমধ্যে মহুয়ার বিরুদ্ধে তদন্ত করছে সিবিআই। গত শনিবার আলিপুরের ফ্ল্যাট, কৃষ্ণনগরের দুই দফতর এবং করিমপুরের ভাড়া বাড়ি— মহুয়ার চার ঠিকানায় তল্লাশি চালায় তারা। ‘ঘুষের বিনিময়ে প্রশ্ন’কাণ্ডেই গত ডিসেম্বরে লোকসভার সাংসদ পদ থেকে বহিষ্কার করা হয় মহুয়াকে। মহুয়াকে বহিষ্কার করার ব্যাপারে সুপারিশ করেছিল লোকসভার এথিক্স কমিটি। ৪৯৫ পৃষ্ঠার রিপোর্ট তারা জমা দেয়। ওই রিপোর্ট পড়ে দেখার জন্য সময় চেয়েছিল তৃণমূল। কংগ্রেস এবং অন্য বিরোধী দলগুলির তরফেও স্পিকারের কাছে সময়ের জন্য অনুরোধ করা হয়েছিল। কিন্তু স্পিকার সময় দেননি। বহিষ্কারের পর মহুয়া জানিয়েছিলেন, এই ঘটনার শেষ দেখে ছাড়বেন তিনি। আগামী ৩০ বছর লোকসভার ভিতরে এবং বাইরে লড়াই করবেন। এই বহিষ্কারের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে তিনি সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন। সেখানে এখনও মামলাটি বিচারাধীন।