দার্জিলিং নিয়ে চিন্তা বাড়ছে রাজ্য সরকারের। প্রশাসনিক সূত্রের খবর, কেন্দ্রকে রাজ্য অনুরোধ করেছে, চলতি পরিস্থিতিতে সেখান থেকে যেন কেন্দ্রীয় বাহিনী সরানো না-হয়।
লোকসভার ভোট ঘোষণার পর থেকেই কেন্দ্রীয় বাহিনী পৌঁছতে শুরু করেছে বিভিন্ন রাজ্যে। পশ্চিমবঙ্গেও আসছে আধাসেনা। সব রাজ্যের ভোটে নিরাপত্তা দিতে বিপুল পরিমাণ কেন্দ্রীয় বাহিনী প্রয়োজন। সেই জন্য তুলনায় যে-সব এলাকা কম উপদ্রুত, প্রধানত সেখান থেকে বাহিনী নিয়ে ভোটে ব্যবহার করতে চায় কেন্দ্র। অতীতে উত্তপ্ত দার্জিলিঙে ছয় কোম্পানি আধাসেনা ছিল। সেখানে পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ায় কিছু বাহিনী তুলে নেয় কেন্দ্র। এখন সেখানে তিন কোম্পানি বাহিনী রয়েছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক সেই তিনটি বাহিনীও প্রত্যাহার করতে চাইছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রের খবর। কিন্তু রাজ্য সরকার তাতে আপত্তি তুলেছে। রাজ্যের আধিকারিক মহলের বক্তব্য, ভোটের আগে বাহিনী তুলে নিলে নিরাপত্তায় বড়সড় ফাঁক তৈরি হতে পারে। নিজেদের বক্তব্য ইতিমধ্যে কেন্দ্রকে জানিয়েও দিয়েছে রাজ্য।
চলতি ভোট পর্বে দূরত্ব মিটিয়ে কাছাকাছি এসেছে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার বিমল গুরুং গোষ্ঠী এবং মন ঘিসিংয়ের জিএনএলএফ। দিল্লিতে কয়েক দিন আগে দার্জিলিং কেন্দ্রে বিজেপি প্রার্থী রাজু বিস্তের নাম স্থির করার বৈঠকে বিমলের সঙ্গে মনের কথাও হয়েছে বলে গুরুংপন্থীদের দাবি। কিন্তু মোর্চার অন্য গোষ্ঠী বিনয় তামাংয়ের নেতৃত্বে গোর্খা টেরিটোরিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের কাজ চালাচ্ছে রাজ্য সরকারের সহযোগী হয়ে। এত দিন বিনয়ের সহযোগী ছিলেন মন।
আরও পড়ুন: দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
পরিবর্তিত এই রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে ভোটের আগে পাহাড়ে উত্তাপ বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন রাজ্যের প্রশাসনিক এবং পুলিশকর্তাদের একাংশ। এই রাজনৈতিক সমীকরণ ভবিষ্যতে আইনশৃঙ্খলার উপরে প্রভাব ফেললে, কেন্দ্রীয় বাহিনী অনুপস্থিতিতে রাজ্যের একার পক্ষে তা সামলানো মুশকিল হতে পারে। কারণ, ভোটে বিভিন্ন জেলায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষার কাজ করতে হবে রাজ্য পুলিশকেও। আবার ভিন্ রাজ্যের ভোটে রাজ্যকেও অন্তত ১৫ কোম্পানি সশস্ত্র বাহিনী পাঠাতে হবে। প্রশাসনিক স্তরে তার প্রস্তুতি শুরুও হয়ে গিয়েছে। অন্য দিকে, জঙ্গলমহলে থাকা প্রায় ৩২ কোম্পানি বাহিনীও প্রত্যাহার করে নিতে চাইছে কেন্দ্র। আইনশৃঙ্খলার প্রশ্ন জড়িত বলে তাতেও আপত্তি আছে বলে কেন্দ্রকে জানিয়ে দিয়েছে রাজ্য সরকার।