হাসপাতালে চিকিত্সা চলছে শান্তনু ঠাকুরের। —নিজস্ব চিত্র।
পঞ্চম পর্বে আজ, সোমবার রাজ্যে যে-সাতটি লোকসভা কেন্দ্রে ভোট হচ্ছে, তার অন্যতম বনগাঁর বিজেপি প্রার্থী শান্তনু ঠাকুর শনিবার প্রচারে বেরিয়ে দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন। এটা রাজনৈতিক চক্রান্ত বলে অভিযোগ তুলেছে বিজেপি। ওই কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী মমতাবালা ঠাকুর এবং রাজ্যের মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক তাঁকে খুনের চক্রান্ত করেছিলেন বলে শান্তনুর অভিযোগ। তৃণমূল এই অভিযোগ মিথ্যা বলে উড়িয়ে দিয়েছে। তরজা শুরু হয়ে গিয়েছে দু’দলের মধ্যে।
শনিবার দুপুরে বাড়ি থেকে প্রচারে বেরোনোর সময় পথ-দুর্ঘটনায় আহত হন শান্তনু। তাঁকে প্রথমে বনগাঁ মহকুমা হাসপাতাল এবং গভীর রাতে কলকাতার ইএম বাইপাসের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। হাসপাতাল সূত্রের খবর, শান্তনুকে ২৪ ঘণ্টা পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। তাঁর ঘাড়ের বাঁ দিকের শিরায় টান ধরেছে। গাড়ির কাচের আঘাতে মাথার ডান দিকে তিন জায়গায় কেটে গিয়েছে। শান্তনুর গাড়িতে থাকা দুই বিজেপি-কর্মী দুর্ঘটনায় আহত হয়ে ওই হাসপাতালেই চিকিৎসাধীন। শান্তনুর আরোগ্য কামনায় মতুয়া সম্প্রদায়ের মানুষজন রবিবার সকাল থেকে ঠাকুরনগরে যজ্ঞ করছেন।
শনিবারের ঘটনাকে দুর্ঘটনা বলে মানতে রাজি নয় বিজেপি। তারা জানায়, ওই ঘটনা সম্পর্কে নির্বাচন কমিশনকে অবহিত করানো হয়েছে। হাসপাতালে শুয়ে শান্তনু বলেন, ‘‘শনিবার দুপুর ১২টা নাগাদ কল্যাণীতে প্রচারের উদ্দেশে বেরিয়েছিলাম। বসে ছিলাম গাড়ির সামনে। আমাদের গাড়িটি রাস্তার বাঁ দিক ঘেঁষে স্বাভাবিক গতিতেই চলছিল। হাঁসপুরের কাছে সামনে থেকে একটি গাড়ি ডান দিক চেপে এসে সোজা আমাদের গাড়িকে সজোরে ধাক্কা মারে। সিটবেল্ট পরে থাকায় এবং গাড়ির বেলুন ফেটে যাওয়ায় বরাতজোরে বেঁচে গিয়েছি।’’ তাঁর অভিযোগ, এটি পূর্বপরিকল্পিত ঘটনা। ‘‘তৃণমূল প্রার্থী মমতাবালা ঠাকুর ও জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক আমাকে খুনের চক্রান্ত করেছিলেন। গাইঘাটা থানায় ওঁদের নামে লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে,’’ বলেন শান্তনু।
শান্তনুর অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন বনগাঁর লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী মমতাবালা। শনিবার সকালে বারাসতে নির্বাচনী অফিস থেকে ফিরে দিনভর ঠাকুরনগরের বাড়িতেই কর্মীদের সঙ্গে বৈঠক করেন তিনি। তার মধ্যেই মমতাবালা বলেন, ‘‘উনি (শান্তনু) প্রলাপ বকছেন। হেরে যাওয়ার ভয়ে এখন নাটক করে চলেছেন। ঠাকুরবাড়ি নিজের দখলে রাখতে শান্তনু আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করে চলেছেন।’’ একই সুরে খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয়বাবু বলেন, ‘‘যে-গাড়িটি শান্তনুর গাড়িকে ধাক্কা মেরেছিল, সেটি কেন্দ্রীয় বাহিনীর। হেরে যাওয়ার ভয়ে উনি নানা মিথ্যা অভিযোগ করছেন। পরাজয় নিশ্চিত বুঝে মাথা খারাপ হয়ে গিয়েছে।’’