বর্ধমানের গোদা এলাকায় তৃণমূল কার্যালয়ে ভাঙচুর । নিজস্ব চিত্র।
ভোটগ্রহণ শেষ হতেই গোলমালে তেতে উঠল দুই বর্ধমানের বিভিন্ন এলাকা। নানা জায়গায় তাদের কর্মীদের উপরে হামলা হয়েছে বলে অভিযোগ বিজেপি এবং সিপিএমের। অভিযোগের আঙুল শাসক দলের দিকে। আক্রান্ত পুলিশও। অভিযোগ উড়িয়ে তৃণমূলের পাল্টা দাবি, হারবে বুঝে বিরোধীরা অশান্তি পাকিয়েছে।
সোমবার রাতে ভোট শেষের পরে পূর্ব বর্ধমানের জামালপুরে তেলনুরি প্রাথমিক স্কুলের বুথ চত্বরে বিজেপি-তৃণমূল সংঘর্ষ বাধে। বিজেপির অভিযোগ, ‘তৃণমূল-আশ্রিত’ দুষ্কৃতীরা ছাপ্পা ভোট দেওয়ার চেষ্টা করায় তাদের এক কর্মী প্রতিবাদ করেন। তাঁকে মারধর করা হয়। এর পরেই বিজেপি কর্মীরা স্কুলভবন ঘিরে ফেলেন। এক তৃণমূল কর্মীকে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। ইভিএম নিয়ে বেরোতে পারছিলেন না ভোটকর্মীরা। পুলিশ পৌঁছলে তাদের উপরে হামলা হয়। ভাঙচুর হয় পুলিশের গাড়ি। জখম হন তিন পুলিশকর্মী। পরিস্থিতি আয়ত্তে আনতে কাঁদানে গ্যাসের শেল ফাটায় পুলিশ। রাতেই গ্রেফতার হয় দশ জন।
আউশগ্রামের নানা এলাকাতেও মঙ্গলবার দিনভর গোলমাল চলে। পরস্পরের বিরুদ্ধে কার্যালয় ভাঙচুরের অভিযোগ করেছে তৃণমূল এবং সিপিএম। মঙ্গলকোটের জালপাড়ায় তৃণমূলের বিরুদ্ধে তিন বাসিন্দাকে মারধরের অভিযোগে প্রায় চার ঘণ্টা পথ অবরোধ করেন স্থানীয় আদিবাসীরা। তৃণমূল অবশ্য সে অভিযোগ মানেনি। সোমবার রাতে বর্ধমান শহরের খাঁপুকুরে তৃণমূলের অফিস ভাঙচুরের অভিযোগ ওঠে বিজেপির বিরুদ্ধে। ওই রাতে বর্ধমানের গোদায় বোমাবাজি, দোকানে আগুন, কয়েকটি টোটো ভাঙচুর হয়। তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে এই ঘটনা বলে অভিযোগ। পুলিশ এলাকা থেকে বোমা উদ্ধার করেছে। এ দিন বিকেলে বাবুরবাগে তৃণমূল ও বিজেপির মধ্যে গোলমাল বাধে। পুলিশ ও র্যাফ নামানো হয়।
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
পশ্চিম বর্ধমানের বারাবনি, পাণ্ডবেশ্বরে সোমবার রাত থেকে মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত দলের বেশ কিছু কর্মীর বাড়িতে হামলা, ভাঙচুর, মারধর করা হয়েছে বলে অভিযোগ বিজেপির। হামলা হয়েছে দুর্গাপুরেও। আহতদের দেখতে হাসপাতালে যান বর্ধমান-দুর্গাপুর কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী সুরেন্দ্র সিংহ অহলুওয়ালিয়া। অভিযোগ অস্বীকার করে তৃণমূলের দাবি, বিজেপির হামলায় তাদের দু’জন জখম হয়েছেন।
বিজেপির পূর্ব বর্ধমান জেলা (সাংগঠনিক) সভাপতি সন্দীপ নন্দীর অভিযোগ, ‘‘ভোটে হাওয়া খারাপ বুঝে তৃণমূল আমাদের এজেন্ট, কর্মীদের উপরে হামলা চালাচ্ছে।’’ তৃণমূলের জেলা সভাপতি স্বপন দেবনাথের পাল্টা অভিযোগ, ‘‘হার নিশ্চিত জেনে গোলমাল পাকাচ্ছে বিজেপিই। পুলিশও আক্রান্ত হচ্ছে!’’