মায়ের সঙ্গে। —নিজস্ব চিত্র।
এক বার শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত গাড়ি, পরক্ষণেই আবার গাড়ির বাইরে চৈত্রের কাঠফাটা রোদ্দুর। নির্বাচনে প্রার্থী হওয়া মায়ের সঙ্গে এই ঠাণ্ডা-গরমে সারা দিন ঘুরে-ঘুরে অসুস্থ হয়ে পড়েছে রূপালী বিশ্বাসের বছর দেড়েকের ছেলে সৌম্যজিৎ।
গত পাঁচ দিন হল সে অসুস্থ। প্রচারে বেরিয়ে তাই দুশ্চিন্তায় থাকতে হচ্ছে রানাঘাটের তৃণমূল প্রার্থী রূপালীকে। তাঁর পরিবার সূত্রের খবর, কাশতে কাশতে বমি হয়ে যাচ্ছে ছোট্ট ছেলের। রোগাও হয়ে গিয়েছে অনেকটা। মায়ের সঙ্গে প্রচারে বেরিয়ে খাওয়াদাওয়ায় অনিয়ম হয়েছে। কমেছে ওজন। গত চার-পাঁচ দিন মায়ের সঙ্গে প্রচারে বের হওয়া বন্ধ রয়েছে। আপাতত সে বাড়িতেই আছে। ঠাকুমা, দিদিমা তার দেখভাল করছেন। মা সকালেই বেরিয়ে পড়ছেন প্রচারে। ফিরতে-ফিরতে সেই রাত দশটা-সাড়ে দশটা। এত ক্ষণ মা ছাড়া থাকার অভ্যাস নেই তার। তাই কেঁদেকেটে চোখ লাল করে ফুঁপোতে থাকছে মায়ের অপেক্ষায়। মা না-ফেরা পর্যন্ত ঘুমও পাড়ানো যাচ্ছে না তাকে। প্রচারে বের হওয়ার আগে সকালটা তাই যত ক্ষণ পারছেন ছেলের সঙ্গে কাটাচ্ছেন রূপালী। তখন ছেলে বেজায় খুশি। ঘুর ঘুর করতে থাকে মায়ের পিছনে-পিছনে।
ছেলেকে চামচ করে জল খাওয়াতে-খাওয়াতে মঙ্গলবার রূপালী বলছিলেন, “আমাকে ছেড়ে একদম থাকতে পারে না। তাই প্রচারে সঙ্গে নিয়ে বের হতাম। কিন্তু ও তো খুব ছোট। এত ধকল সহ্য করতে পারছে না। ঠাণ্ডা-গরমে অসুস্থ হয়ে পড়েছে। তাই গত কয়েক দিন বাড়িতে রেখে যেতে বাধ্য হচ্ছি। মনটা খারাপ হয়ে থাকছে, কিন্তু ইপায় নেই। আমি ছাড়া অন্য কারও কাছে তেমন খেতেও চাইছে না। তাই ওজনটাও কমে গিয়েছে।”
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
রূপালীর স্বামী সত্যজিৎ বিশ্বাস রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত থাকায় এমনিতে বাড়িতে লোকজন লেগেই থাকত। তাই বিশেষ কোল চেনা নয় সৌম্যজিৎ। প্রচারে বেরিয়ে রূপালী মঞ্চে উঠলে তাকে কোলে নিয়ে ঘুরে বেড়াতেন দলের নেতা-কর্মীরা। তাতে মাঝেমধ্যেই সে অস্থির হত। কান্নাকাটি করত। তার উপরে জল কম খেত। প্রচারের তাড়ায় রাস্তার গাড়ি দাঁড় করিয়ে তাকে খাওয়ানোও সম্ভব ছিল না। চলন্ত গাড়িতেই সেরেল্যাক বা বিস্কুট গুলে খাওয়াতেন রূপালী। কিন্তু এই ঝোড়ো রুটিনের ধাক্কায় এখন অসুস্থ হয়ে পড়েছে সৌম্যজিৎ।