বিমল গুরুং
বুধবারই বিমলপন্থীরা সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচার করে দিয়েছিলেন, গুরুং এবং রোশন গিরি বৃহস্পতিবার দিল্লি থেকে বাগডোগরায় নেমে পাহাড়ে যাবেন। বিমানের টিকিটে নামও ছিল। কিন্তু এলেন না বিমল ও রোশনের কেউই। তবে বিমলপন্থী মোর্চার দুই নেতা যোগেন্দ্র প্রধান ও রোশন রাই এসেছিলেন। বিমানবন্দর থেকেই তাঁদের আটক করে পুলিশ। দার্জিলিঙের এসপি অমরনাথ কে বলেন, ‘‘আইন মেনেই তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
তার পরেই বিকেলে বিমলপন্থী মোর্চার মুখপাত্র বিপি বজগাই জানিয়ে দেন, বিমল এবং রোশন এলে পাহাড়ে অন্য দলগুলো অশান্তি করতে পারে এই আশঙ্কাতেই দিল্লি বিমানবন্দরে গিয়েও বাগডোগরার উড়ানে ওঠেননি বিমল ও রোশন। তবে প্রশাসনিক সূত্রে খবর, বিমল ও রোশন আসতে পারেন শুনেই রাজ্যের তরফে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবীদের সঙ্গে কথা বলা হয়। তাঁরা জানান, এনআইএ ছাড়া অন্য যে সব মামলা ওই দুই নেতার নামে রয়েছে, তাতে তাঁদের গ্রেফতার করা যায়। কিছু ক্ষণের মধ্যেই বাগডোগরায় চলে যান পুলিশের বড় কর্তারা। সে খবর পেয়েই বিমল ও রোশন দিল্লি বিমানবন্দরে পৌঁছেও ফিরে যান।
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
বিমল ও রোশন জলপাইগুড়ির সার্কিট বেঞ্চে গিয়ে আগাম জামিনের আবেদন জানাবেন, এমনটাও গুরুংপন্থীরা আগে প্রচার করেছিল। সেখানেও তাই সারা দিন পুলিশি তৎপরতা ছিল চোখে পড়ার মতো। ছিলেন জলপাইগুড়ির পুলিশ সুপার অমিতাভ মাইতিও। দুপুরের পরে যখন গুরুঙ্গদের আসা বাতিল হয়ে যায়, তার পর পুলিশের তৎপরতাও শিথিল হয়।
এ দিন মাথাভাঙার সভায় গুরুং প্রসঙ্গে নাম না করে প্রধানমন্ত্রীকে কটাক্ষ করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘গুরুংকে ডেকে নিয়ে গেলেন দিল্লিতে। পাহাড়ের সঙ্গে বাংলার ঝগড়া লাগালেন। পাহাড়ে আগুন জ্বালালেন। গোর্খাল্যান্ড করে দেবেন বলে একবার ভোট নিলেন। ভোট মিটতেই আসল চেহারা বেরিয়ে গেল। পাঁচ বছর কিছু ভাবার সময় হল না, এখন ভোটের সময় বলছেন, ভাবছি। যেন হরিদাস।’’ মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্য, ‘‘তোমাকে ভাবতে হবে না।’’ বিজেপি নেতা রাহুল সিনহা বলেন, ‘‘পাহাড়ের অশান্তির জন্য তৃণমূলই দায়ি।’’
এ দিন সমর্থকদের নিয়ে বাগডোগরায় যান বিনয় তামাংপন্থী মোর্চার মহিলা শাখার সভাপতি ছিরিং দাহাল। বিমলের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখানোর জন্যই তাঁরা গিয়েছিলেন বলেই জানান ছিরিং। কাছাকাছি ছিলেন তৃণমূলের পাহাড়ের নেতা বিন্নি শর্মাও। বজগাই বলেন, ‘‘সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মেনে জলপাইগুড়ি সার্কিট বেঞ্চে যাওয়ার জন্যই বিমলরা আসতে চেয়েছিলেন। ছিরিংদের বিমানবন্দরে যাওয়া থেকেই প্রমাণ হয় যে, বিমল ফিরলেই ওরা পাহাড়ে অশান্তি শুরু করবে।’’ বিনয়ের দাবি, ‘‘আমরাই পাহাড়ে শান্তি ফিরিয়েছি।’’