বিমান বসু ও সোমেন মিত্র। -ফাইল ছবি
লোকসভা ভোটে কংগ্রেস-বাম আসন সমঝোতা হচ্ছে না, আনুষ্ঠানিক ভাবে এমন ঘোষণা কোনও পক্ষই করেনি। দু’তরফের কার্যাবলী যদিও বুঝিয়ে দিচ্ছে, সমঝোতার রাস্তা থেকে তারা অনেকটাই দূরে সরে এসেছে। সমঝোতা না হওয়ার সমস্ত দায় শনিবার কংগ্রেসের ঘাড়েই চাপিয়ে দিয়েছেন বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু। গোটাটার জন্য তিনি ‘অর্থনৈতিক লেনদেন’কে দায়ী করেছেন। কংগ্রেস যদিও পাল্টা তোপ দেগেছে বামেদের বিরুদ্ধে।
এ দিন কংগ্রেসের নাম না করে বিমানবাবু মন্তব্য করেন, “বিজেপি-তৃণমূলের বিরোধী ভোট এক করতে চেয়েছিলাম। শোনা যাচ্ছে, মানি ব্যাগ ঘুরে বেড়াচ্ছে সর্বত্র। মানি ব্যাগ বেশি করে দিলে, কিসের এত আলোচনা? কিসের বোঝাপড়া? টাকা টাকা, মানি ইজ হানি হলে রাজনীতিতে অসম্ভব কারবার হয়।” এ দিন ধর্মতলার কাছে হবু শিক্ষকদের অনশন ধর্নায় বাম প্রতিনিধি দলের সঙ্গে এসেছিলেন বিমানবাবু। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবেতিনি টাকার প্রসঙ্গ তুলে ধরেন। বামফ্রন্ট চেয়ারম্যানের কথায়, “টাকা তোলার জন্যে অনেকে আছে। শুনতে পাচ্ছি টাকা উড়ছে অনেক। কী করা যাবে!টাকা এ দিক ও দিক ছড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে।”
বিমানবাবুর দাগা তোপের প্রেক্ষিতে জবাব দিতে ছাড়েননি প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্রও।আসন সমঝোতা না হওয়ায় তিনি কার্যত বামফ্রন্টকেই দায়ী করছেন। এ দিন চাঁচলে কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গাঁধীর জনসভা ছিল। সোমেন মিত্র সেখানে গিয়েছিলেন। বিমানবাবুর অভিযোগের প্রেক্ষিতে তিনিপাল্টা প্রশ্ন তোলেন,“খেলা যখন হয়েছে, তার ফলাফল ওরাই বের করুক। এমন কিছু হয়নি। কারা টাকা দিয়েছে, কাকে দিয়েছে, ওরা বলুক? কেন জোট ভাঙল ওরা বলতে পারবে? ওরা আমাদের প্রার্থী ঠিক করে দেবে তা তো হয় না।”
আরও পড়ুন- বাংলায় এক ব্যক্তির সরকার চলছে, কিছুই হচ্ছে না: মমতাকে বিঁধলেন রাহুল
আরও পড়ুন- সমঝোতার জন্য ২৪ ঘণ্টা সময় কংগ্রেসকে, ৪টে বাদে সব আসনে প্রার্থী ঘোষণা বামেদের
রাজনৈতিক শিবিরের মত, বাম-কংগ্রেস আসন সমঝোতা না হওয়ায় ভোট বাক্সেফায়দা তুলবে বিজেপি। কোনও কোনও জায়গায় তৃণমূলেরও লাভের সম্ভাবনা।
গত নির্বাচনে বামেদের দখলে থাকা রায়গঞ্জ এবং মুর্শিদাবাদ আসন নিয়ে সমস্যার সূত্রপাত। রায়গঞ্জ থেকে সিপিএমের মহম্মদ সেলিম ২০১৪-র লোকসভা ভোটে জয়ী হয়েছিলেন। কংগ্রেস চেয়েছিল, ওই আসনে দীপা দাসমুন্সি দাঁড়াবেন। কিন্তু তাতে রাজি হননি বামফ্রন্ট। কারণ, সমঝোতার প্রথম শর্ত ছিল, কেউ কারও জেতা আসনে প্রার্থী দেবে না। বামেরা কংগ্রেসের জেতা আসন ছেড়ে প্রাথমিক ভাবে ২৫টি আসনে প্রার্থীতালিকা প্রকাশ করে। পরে মালদহ দক্ষিণ এবং বহরমপুর আসন বাদে বাকি সব আসনেই প্রার্থীতালিকা ঘোষণা করে বামেরা।অন্য দিকে, কংগ্রেস মুর্শিদাবাদ এবং রায়গঞ্জ-সহ এ রাজ্যের মোট ১১টি আসনে প্রার্থী ঘোষণা করে দেয়। তার পরেই কার্যত ধাক্কা খায় সমঝোতার প্রক্রিয়া।