—ফাইল চিত্র।
পাহাড়ে তাঁর নিশানায় ছিলেন বিমল গুরুং এবং বিজেপি। সমতলে নেমে সিপিএম ও কংগ্রেসকে একসঙ্গে দুষলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শনিবার শিলিগুড়ির বাঘা যতীন পার্কের সভা থেকে দু’দলের প্রতি তিনি বলেন, ‘‘আপনারা গটআপ গেম খেলা বন্ধ করুন।’’ মমতার অভিযোগ, সমতলে সিপিএম, কংগ্রেস ও বিজেপি মিলে রামধনু জোট হয়েছে। সিপিএম ও কংগ্রেস যে রাজনীতি করছে, তাতে বিজেপির হাত শক্ত হচ্ছে। বামপন্থী ও কংগ্রেস সমর্থকদের তিনি আবেদন করেন, ‘‘ভোটটা নষ্ট করবেন না। দয়া করে সিপিএম, কংগ্রেসকে ভোট দেবেন না। আমরা দিল্লি দখল করব, বিজেপিকে তাড়াব।’’
কংগ্রেসের গড় থেকে এর আগেও তাদের আক্রমণ করেছেন মমতা। গত মঙ্গলবার রায়গঞ্জের সভা থেকে তিনি বলেন, কংগ্রেস-সিপিএম একসঙ্গে বিজেপির সুবিধা করে দিচ্ছে। এক দিন পরে উত্তর দিনাজপুরের করণদিঘির সভায় কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গাঁধী কটাক্ষ করে বলেন, ‘‘বিজেপির সঙ্গে কে জোট করেছিল, কংগ্রেস না মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়?’’ এ দিন শিলিগুড়ি থেকেও লক্ষণীয় ভাবে কংগ্রেস এবং সিপিএমকে এক বন্ধনীতে এনে আবার আক্রমণ করলেন মমতা। বলেন, ‘‘যে সিপিএম করে, সে সকালে সিপিএম, দুপুরে বিজেপি আর রাতে লুকিয়ে কংগ্রেস করে।’’ এটাকেই তিনি আবার ‘গটআপ গেম’ বলেও কটাক্ষ করেন। সিপিএমের প্রতি তাঁর বক্তব্য, ‘‘আমি কেরলে আপনাদের ভোট ভাঙতে যাইনি। দয়া করে এখানে আমাদের ভোট ভাঙবেন না।’’
কেন সমতলে নেমে বাম-কংগ্রেসকে নিশানা করলেন মুখ্যমন্ত্রী? তৃণমূল নেতাদের একাংশের ব্যাখ্যা, শিলিগুড়ি এখনও বাম ও কংগ্রেসের শক্ত ঘাঁটি। কংগ্রেসের সমর্থনে শিলিগুড়ি পুরসভা এখনও বামেদের দখলে। শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদে ক্ষমতায় আছে বামেরা। দার্জিলিং জেলায় সমতলের তিনটি বিধানসভার কোনওটিতেই ২০১৬ সালে জিততে পারেনি তৃণমূল। ফাঁসিদেওয়া ও মাটিগাড়া-নকশালবাড়িতে জয়ী হয়েছে কংগ্রেস। আর শিলিগুড়িতে সিপিএম।
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
মুখ্যমন্ত্রীর এ দিনের বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে শিলিগুড়ির মেয়র অশোক ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘শিলিগুড়ির মানুষ মুখ্যমন্ত্রীকে প্রত্যাখ্যান করেছেন। ফাঁকা মাঠে উনি বক্তৃতা করে চলে গিয়েছেন। শিলিগুড়িকে উনি বঞ্চিত করেছেন, তাই ওঁর মুখে শিলিগুড়ির কথা মানায় না।’’ সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী কালিয়াগঞ্জে বলেন, ‘‘বিজেপি, তৃণমূল সেটিং করে চলে।
এ রাজ্যে তৃণমূলই বিজেপিকে এনেছে।’’ একই সুরে প্রদেশ কংগ্রেসের কার্যকরী সভাপতি শঙ্কর মালাকারের বক্তব্য, ‘‘যিনি বিজেপির সঙ্গে জোট করে ক্ষমতার মধু খেয়েছেন, তাঁর মুখে বিজেপি বিরোধিতার কথা মানায় না। আমরা কি করব না করব, সেটা নিয়ে ওঁর মাথা ঘামানোর দরকার নেই।’’