মনীষী স্মরণে বাম

মনোনয়নের আগে আজ, বৃহস্পতিবার মনীষী স্মরণ করতে চলেছে বামেরা। কী ভাবে হবে এই মনীষী স্মরণ?

Advertisement

বরুণ দে

মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ১৮ এপ্রিল ২০১৯ ০১:০৬
Share:

—ফাইল চিত্র।

রাম নয়। মন্দিরও নয়। মনোনয়নের আগে বামেদের ভরসা মনীষীরা।

Advertisement

আজ, বৃহস্পতিবার মনোনয়ন জমা দেওয়ার কথা মেদিনীপুরের সিপিআই প্রার্থী বিপ্লব ভট্ট এবং ঘাটালের সিপিআই প্রার্থী তপন গঙ্গোপাধ্যায়ের। মনোনয়নের আগে আজ, বৃহস্পতিবার মনীষী স্মরণ করতে চলেছে বামেরা। কী ভাবে হবে এই মনীষী স্মরণ? ঠিক হয়েছে, বিপ্লব এবং তপন দু’জনে একই সঙ্গে মিছিল করে মনোনয়নপত্র জমা দিতে যাবেন। এই মিছিলের রুটেই রয়েছে মনীষী-স্মরণ। সোমবার বামেদের বৈঠকে ঠিক হয়েছে, মিছিল শুরু হবে মাতঙ্গিনী হাজরার মূর্তির সামনে থেকে। শেষ হবে ক্ষুদিরাম বসুর মূর্তির পাদদেশের সামনে। মাতঙ্গিনী হাজরার মূর্তি রয়েছে মিরবাজারে। অদূরেই জেলা সিপিএমের দফতর। আর ক্ষুদিরাম বসুর মূর্তি রয়েছে কালেক্টরেট মোড়ে। অদূরেই জেলাশাসকের দফতর। মিছিলের যাত্রাপথে রয়েছে সুভাষচন্দ্র বসু, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, মোহনদাস কর্মচন্দ গাঁধী, ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের মূর্তি। রয়েছে ডান্ডি অভিযান, ভারত ছাড়ো আন্দোলন ও চুঁয়াড় বিদ্রোহের মতো তিনটি ঐতিহাসিক আন্দোলনের মূর্তিও। বামেরা ঠিক করেছে, মিছিল যাওয়ার সময়ে সব মনীষীর মূর্তিতে মাল্যদান হবে। সোমবার মেদিনীপুরে বামেদের এক বৈঠকে মনোনয়নে মনীষী-স্মরণের এই প্রস্তাব দেন সিপিআইয়ের জেলা সম্পাদক অশোক সেন। সম্মতি দেন সিপিএমের জেলা সম্পাদক তরুণ রায়।

রামনবমী উপলক্ষে মেদিনীপুরে মিছিল করেছিলেন বিজেপি-ঘনিষ্ঠরা। বুধবার মিছিল করেছেন তৃণমূল- ঘেঁষারা। প্রচার বা মনোনয়নে নেমে মন্দির-মসজিদে ছোটেন অনেকে। মেদিনীপুরের বিজেপি প্রার্থী দিলীপ ঘোষ মন্দিরে পুজো দিয়ে প্রচার শুরু করেছিলেন। মেদিনীপুরের তৃণমূল প্রার্থী মানস ভুঁইয়াও মন্দিরে পুজো দিয়ে, মাজারে চাদর চড়িয়ে প্রচার শুরু করেছিলেন। মেদিনীপুরের কংগ্রেস প্রার্থী শম্ভুনাথ চট্টোপাধ্যায়ও মন্দিরে, মসজিদে গিয়েছেন। কিন্তু দুই বাম প্রার্থী মন্দির-মসজিদে যাননি।

Advertisement

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

তা হলে মনোনয়নের আগে মনীষী স্মরণ কেন? সিপিআইয়ের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য তথা মেদিনীপুরের প্রাক্তন বিধায়ক সন্তোষ রাণার কথায়, ‘‘ভারতবর্ষের একটা ইতিহাস রয়েছে। তা এখন বিকৃত করার চেষ্টা চলছে। স্বাভাবিকভাবেই মনীষীরা পিছনে চলে যাচ্ছেন। অনেক দেব- দেবী সামনে চলে আসছেন।’’ সন্তোষ বলেন, ‘‘ভারতবর্ষের ইতিহাস যাঁরা গড়ে দিয়েছেন, তাঁদেরকে অশ্রদ্ধা করে আমরা এগোতে পারি না। তাই আমরা যখন মনোনয়ন করতে যাব, তাঁদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনের মধ্য দিয়েই আমরা যাব।’’ তিনি বলেন, ‘‘আমরা যে নীতির জন্য লড়ছি সেটা কঠিন। কিন্তু লাগাতার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। জয় একদিন আমাদের হবেই।’’

শহর ছড়িয়ে রয়েছে মন্দির, মসজিদ, গির্জা। জেলা সিপিএমের এক নেতা বলেন, ‘‘মনীষীদের স্মরণ করা ভাল। মনোনয়নের আগে এমন ভাবনা সত্যিই ভাল।’’ যা শুনে জেলা তৃণমূল সভাপতি অজিত মাইতির প্রতিক্রিয়া, ‘‘বামেরা তো আগে মনীষীদের সম্মান দেয়নি। এখন ঘুম ভেঙেছে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement