সুভাষ নস্করের শুশ্রূষা করছেন দলীয় কর্মীরা। ছবি: সামসুল হুদা।
প্রচারে বেরিয়ে রবিবার রাজ্যের দু’প্রান্তে হেনস্থার মুখে পড়লেন দুই বাম প্রার্থী। হাওড়ার উলুবেড়িয়া লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী জয় বন্দ্যোপাধ্যায়ের মিছিলেও হামলা হল। তিনটি ক্ষেত্রেই অভিযোগ উঠেছে রাজ্যের শাসকদলের বিরুদ্ধে। তৃণমূল অবশ্য অভিযোগ মানেনি।
এ দিন গোসাবার পাঠানখালিতে জয়নগর লোকসভা কেন্দ্রের বাম প্রার্থী সুভাষ নস্কর এক দলীয় কর্মীর মোটরবাইকে চড়ে প্রচার করছিলেন। কয়েকটি মোটরভ্যানে ছিলেন দলের কিছু কর্মী। প্রার্থীর সঙ্গে গ্রামবাসীদের পরিচয় করানোর ছবি ক্যামেরাবন্দি করছিলেন আরএসপি কর্মী পিকাই দেবনাথ। অভিযোগ, হঠাৎই তৃণমূলের দলীয় কার্যালয় থেকে জনা তিরিশ লোক বেরিয়ে এসে সুভাষবাবুর প্রচারে বাধা দেয়। পিকাইকে মারধর করে ক্যামেরা কেড়ে নেয়। সেই ছবি তুলতে গেলে আদিত্য জোয়ারদার নামে আর এক আরএসপি কর্মীকেও মারধর করে তাঁর মোবাইল ভেঙে দেওয়া হয়। সুভাষবাবুকেও ধাক্কাধাক্কি করা হয় বলে অভিযোগ। জনাছয়েক বামকর্মী জখম হন বলে দাবি আরএসপি-র। পরে সুভাষবাবুর মিছিল ঘুরিয়ে অন্য রাস্তায় নিয়ে গেলে সেখানেও তাঁদের বাধা দেওয়া হয় বলে অভিযোগ।
সিপিএম পুলিশকে জানালে তাদের সহযোগিতায় তৃণমূলের দলীয় কার্যালয় থেকে পিকাইয়ের ক্যামেরা উদ্ধার হয়। ক্যামেরার সব ছবি মুছে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ। ঘটনায় জড়িত অভিযোগে পুলিশ পাঠানখালি থেকে মুকুল মণ্ডল ও সনৎ হালদার নামে এলাকায় তৃণমূল কর্মী হিসেবে পরিচিত দু’জনকে গ্রেফতার করে।
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
সুভাষবাবু বলেন, ‘‘ওরা বিরোধীদের কণ্ঠরোধ করতে প্রচারে বাধা দিচ্ছে। আমার মতো বর্ষীয়ান নেতাকেও হেনস্থা করে।’’ অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে তৃণমূলের জেলা সভাপতি শুভাশিস চক্রবর্তীর দাবি, ‘‘ঘটনার সঙ্গে দলের কেউ জড়িত নয়। এলাকায় বামফ্রন্ট ৩৪ বছরে কিছু করেনি। বাসিন্দারা ক্ষোভ দেখান।’’
আরামবাগ কেন্দ্রের বাম প্রার্থী শক্তিমোহন মালিককে হেনস্থা করা হয় খানাকুলের পানশিউলিতে। সেখানে তৃণমূলের লোকেরা তাঁর প্রচার-গাড়ি আটকে টানাটানি ও গালিগালাজ করে বলে অভিযোগ। প্রচার না-করেই ফিরতে হয় প্রার্থীকে। সিপিএম প্রার্থীর অভিযোগ, “তৃণমূলের ঝান্ডা লাগানো শতাধিক মোটরবাইক আরোহী মারমুখী হয়ে পথ আটকায়। প্রচার করতে দেওয়া হবে না বলে হুমকি দেয়। পুলিশকে দেখতে পাইনি। কমিশনকে জানানো হয়েছে।” দলের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ নস্যাৎ করেছেন খানাকুলের তৃণমূল নেতা অসিত সিংহরায়। তাঁর দাবি, ‘‘ওই ঘটনায় দলের যোগ নেই। সিপিএম ভোট চাইতে যাওয়ায় গ্রামবাসীই বিক্ষোভ দেখান।’’
বিকেলে বাগনানের শান্তি মোড়ের কাছে উলুবেড়িয়ার বিজেপির প্রার্থী জয় বন্দ্যোপাধ্যায়ের মিছিলে হামলা হয়। অভিযোগ, ১০-১২ জন দুষ্কৃতী গাড়ি করে এসে ধারাল অস্ত্র নিয়ে মিছিলে ঝাঁপিয়ে পড়ে। দু’তিন জন সামান্য আহত হন। জয়ের সঙ্গে থাকা আধাসেনা ভয় দেখালে হামলাকারীরা চম্পট দেয়। জয়ের অভিযোগ, ‘‘তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীদের কাজ। নিরাপত্তারক্ষীরা রুখে দাঁড়ানোয় বেঁচে যাই।’’