জিতব আমিই, কর্মিসভায় প্রত্যয়ী লক্ষ্মণ      

এদিন বিকেল ৪টে নাগাদ লক্ষ্মণ আসার আগেই জেলা কংগ্রেস কার্যালয়ে আসেন দলের জেলা  সভাপতি মানিক ভৌমিক-সহ বিভিন্ন এলাকার নেতা-কর্মীরা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

তমলুক শেষ আপডেট: ০৩ এপ্রিল ২০১৯ ০০:১৮
Share:

কর্মিসভায় লক্ষ্ণণ। মঙ্গলবার। —নিজস্ব চিত্র।

কলকাতায় প্রদেশ কংগ্রেস অফিসে গিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে কংগ্রেসে যোগদান করেছিলেন প্রাক্তন সিপিএম সাংসদ লক্ষ্মণ শেঠ। মঙ্গলবার তমলুকে জেলা কংগ্রেস অফিসে দলের কর্মীদের নিয়ে নির্বাচনী প্রস্তুতি সভা করলেন তিনি। সভার পর প্রত্যয়ী লক্ষণের দাবি, জিতবেন তিনিই। প্রদেশ সভাপতি সোমেন মিত্র তমলুক লোকসভা কেন্দ্র থেকে লক্ষণ প্রার্থী হওয়ার বিষয়ে জানালেও সরকারি ভাবে এখনও দলের তরফে তাঁর নাম ঘোষণা হয়নি। তবে তাঁর নামে দেওয়াল লিখন শুরু হয়ে গিয়েছে।

Advertisement

এদিন বিকেল ৪টে নাগাদ লক্ষ্মণ আসার আগেই জেলা কংগ্রেস কার্যালয়ে আসেন দলের জেলা সভাপতি মানিক ভৌমিক-সহ বিভিন্ন এলাকার নেতা-কর্মীরা। লক্ষ্মণবাবু তাঁর ঘনিষ্ঠ প্রণব দাস, সুদর্শন মান্না, ময়নার প্রাক্তন সিপিএম বিধায়ক মুজিবর রহমান, তমলুক পঞ্চায়েত সমিতি প্রাক্তন সভাপতি শক্তিপদ বেরা সহ বেশ কিছু অনুগামীকে নিয়ে জেলা কংগ্রেস কার্যালয়ে আসেন। সেখানে তাঁকে ফুলের তোড়ায় অভ্যর্থনা জানান মানিকবাবু। কার্যালয় প্রাঙ্গণে রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী অজয়কুমার মুখোপাধ্যায়, প্রাক্তন সাংসদ সতীশ সামন্ত ও স্বাধীনতা সংগ্রামী রজনীকান্ত প্রামাণিকের মূর্তিতে মাল্যদান করে শ্রদ্ধা জানান লক্ষ্ণণবাবু। সাংবাদিক বৈঠকে মানিকবাবু বলেন, ‘‘কংগ্রেসের ওয়ার্কিং কমিটি লক্ষ্মণবাবুকে দলে নেওয়ায় সম্মতি দিয়েছেন। প্রদেশ সভাপতি স্বয়ং লক্ষ্মণবাবুর হাতে দলের পতাকা তুলে দিয়েছেন। আমরাও তাঁর প্রার্থীপদকে সমর্থন জানাচ্ছি।’’

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

Advertisement

নন্দীগ্রাম কান্ডে অভিযুক্ত হিসেবে লক্ষ্মণবাবুর বিরুদ্ধে বিরোধীদের তোলা অভিযোগ খন্ডন করে মানিকবাবু বলেন, ‘‘ব্যক্তি লক্ষ্মণবাবুকে নিয়ে অভিযোগ থাকতে পারে। উনি যখন নন্দীগ্রামকাণ্ডে অভিযুক্ত ছিলেন তখন কংগ্রেসের মঞ্চে ছিলেন না। বাম সাংসদ ছিলেন। বামফ্রন্ট মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্ত ছিল নন্দীগ্রাম। তাই শুধু লক্ষ্মণবাবুকেই আজকে অভিযুক্ত করা হচ্ছে কেন।’’ তাঁর পাল্টা প্রশ্ন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের রাজত্বে নন্দীগ্রাম কান্ডে দোষী পুলিশ অফিসারদের শাস্তি না দিয়ে তাঁদের ‘প্রাইজ পোস্টিং’ দেওয়া হল কেন? আজ নন্দীগ্রামের আর্থ সামাজিক পরিকাঠামোর কী হাল! হাজার মানুষকে মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। তাঁদের মামলা কেন প্রত্যাহার করা হচ্ছে না।’’ তিনি জানান, নন্দীগ্রামে গণতন্ত্র নেই। একটি পরিবার নন্দীগ্রামকে তাঁদের পৈতৃক জমিদারি ভেবে সেখানকার মানুষের সমস্ত অধিকার কেড়ে নিয়েছে। এই নির্বাচনে সেই গণতান্ত্রিক অধিকার ফিরিয়ে দেওয়ার লড়াই চালাচ্ছেন তাঁরা।

সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে লক্ষ্মণবাবু বলেন, ‘‘নন্দীগ্রাম কান্ডের সঙ্গে আমার কোনও সম্পর্ক নেই। নন্দীগ্রামে মেগা কেমিক্যাল হাব গড়ার সিদ্ধান্ত ছিল কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের। হলদিয়া উন্নয়ন পর্ষদ জমি অধিগ্রহণের কোনও নোটিস দেয়নি। এটা নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়ানো হয়েছিল। যাতে নন্দীগ্রামে শিল্পাঞ্চল গড়ে না ওঠে। এ ভাবে গণ আন্দোলন হয় না। মাওবাদীদের সহযোগিতায় সন্ত্রাসমূলক আন্দোলন হয়েছিল।’’ এর পরেই তিনি দাবি করেন, ‘‘নন্দীগ্রামে যদি অবাধ ভোট হয়, আমি ওখানে লিড পাব এবং জিতব।’’

লোকসভা ভোটে প্রার্থী হিসেবে নন্দীগ্রামে তিনি প্রচারে যাবেন বলেও জানান লক্ষ্মণবাবু। তাঁকে নিয়ে কংগ্রেস নেতা-কর্মীদের একাংশের ক্ষোভ নিয়ে তিনি বলেন, ‘‘কংগ্রেসের মধ্যে ক্ষোভ আছে বলে আমার জানা নেই।’’ যদিও এদিন জেলা কংগ্রেসের প্রাক্তন সভাপতি আনোয়ার আলির নেতৃত্বে তমলুকে পৃথক একটি বৈঠক হয়। তবে সেখানে লক্ষ্মণবাবুকে নিয়ে কোনও আলোচনা হয়নি বলে দাবি করা হয়েছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement