নালিশের মুখে সব বুথে বাহিনী দেওয়ার আশ্বাস

চতুর্থ দফার ভোট চলাকালীনই সিইও দফতরে গিয়ে ভোট-নিরাপত্তা নিয়ে অভিযোগ জানায় বিজেপি, কংগ্রেস এবং সিপিএম।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ৩০ এপ্রিল ২০১৯ ০০:৫৭
Share:

বাড়ান হল কেন্দ্রীয় বাহিনী।—ফাইল চিত্র।

চতুর্থ দফার ভোটে অন্তত ৯৮% বুথ কেন্দ্রীয় বাহিনীর নিরাপত্তায় মোড়া থাকবে বলে জানিয়েছিল সিইও বা রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী অফিসারের দফতর। কিন্তু সোমবার কার্যক্ষেত্রে সেই আশ্বাসের প্রতিফলন দেখা যায়নি বলে বিরোধীদের অভিযোগ। এই অবস্থায় সিইও দফতরের আশ্বাস, পঞ্চম দফার ভোটে ১০০% বুথেই কেন্দ্রীয় বাহিনীর নিরাপত্তা মিলবে।

Advertisement

এ দিন চতুর্থ দফার ভোট চলাকালীনই সিইও দফতরে গিয়ে ভোট-নিরাপত্তা নিয়ে অভিযোগ জানায় বিজেপি, কংগ্রেস এবং সিপিএম। দিনের ভোট শেষ হওয়ার পরে কমিশন জানায়, আগামী দফাগুলি থেকে পর্যাপ্ত সংখ্যায় নিরাপত্তারক্ষীর বন্দোবস্ত থাকবে।

এ দিন সাংবাদিক বৈঠকে রাজ্যের এডিজি (আইনশৃঙ্খলা) সিদ্ধিনাথ গুপ্তকে পাশে নিয়ে সিইও আরিজ আফতাব জানান, পঞ্চম দফার ভোটে প্রায় ৫৮০ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকবে রাজ্যে। আধাসেনা দেওয়া হবে ১০০% বুথেই। এডিজি (আইনশৃঙ্খলা) জানান, এ দিনের ভোটে ৯৬% বুথে বাহিনী মোতায়েন ছিল। তবে বিভিন্ন জেলা প্রশাসন সূত্রের দাবি, চার বা তার বেশি সংখ্যায় বুথ যেখানে একসঙ্গে রয়েছে, সেখানে নিরাপত্তা দিয়েছে রাজ্য পুলিশ। এডিজি (আইনশৃঙ্খলা) বলেন, ‘‘নির্বাচন কমিশন যে-রকম পরিকল্পনা করেছিল, সেই অনুযায়ী বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে।’’ তবে ৯৬% বুথে বাহিনী ব্যবহার হলেও বাস্তবে তার প্রতিফলন সে-ভাবে দেখা গেল না কেন, তার উত্তর মেলেনি। যদিও সিইও এ দিন বলেছেন, ‘‘কয়েকটি বিক্ষিপ্ত ঘটনা ছাড়া ভোট মোটের উপরে শান্তিপূর্ণ ভাবেই হয়েছে।’’

Advertisement

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

ভোট নিরাপত্তা নিয়ে এবং বীরভূম জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের বিরুদ্ধে এ দিন সিইও-র কাছে অভিযোগ জানান কংগ্রেস নেতা প্রদীপ ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, ‘‘বিরোধীদের ভোট দিতে দেওয়া হচ্ছে না। তা হলে কেন্দ্রীয় বাহিনী থেকে লাভ কী? অনুব্রত মণ্ডলকে নজরবন্দি করে কী লাভ হল?’’ একই সুরে বিজেপি নেতা জয়প্রকাশ মজুমদার বলেন, ‘‘অনুব্রত গণতন্ত্রের হত্যাকারী। কেমন নজরবন্দি হল? নখদন্তহীন নির্বাচন কমিশন। বাকি ২৪টা আসনের জন্য নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তার ব্যবস্থা করতে হবে। পুরো বীরভূম, আসানসোলের বরাবনি, পাণ্ডবেশ্বর, কৃষ্ণনগরের চাপড়া এবং রানাঘাটের চাকদহে পুনর্নির্বাচনের দাবি জানাচ্ছি।’’ সিপিএম নেতা রবীন দেবের কথায়, ‘‘কমিশন যত গর্জায়, তত বর্ষায় না। অনুব্রতের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারল না। ১০০% জায়গায় কেন্দ্রীয় বাহিনী চাই।’’

সিইও দফতর জানিয়েছে, অনুব্রত মণ্ডলের সারা দিনের গতিবিধি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। জেলা প্রশাসনের সঙ্গেও আলোচনা হবে। ৬ মে পঞ্চম দফায় ভোট হবে বনগাঁ, ব্যারাকপুর, হাওড়া, উলুবেড়িয়া, শ্রীরামপুর, হুগলি এবং আরামবাগ কেন্দ্রে।

এ দিন বীরভূমের পাড়ুই এবং দুবরাজপুরে গুলি চালিয়েছে কেন্দ্রীয় বাহিনী। দু’টি ক্ষেত্রেই মোবাইল নিয়ে বুথে ঢোকার চেষ্টাকে কেন্দ্র করে কেন্দ্রীয় বাহিনীর নিরাপত্তারক্ষীদের সঙ্গে স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের বচসা হয়। সেখান থেকেই গুলি চালানোর ঘটনা ঘটেছে বলে কমিশন সূত্রের খবর। দু’টি ক্ষেত্রেই কেন্দ্রীয় বাহিনীর বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করেছেন বাসিন্দাদের একাংশ। কেন্দ্রীয় বাহিনীর তরফেও পাল্টা অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে বলে জানান এডিজি (আইনশৃঙ্খলা)। এ দিন নির্বাচনী সভায় তৃণমূল নেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ওদের (কেন্দ্রীয় বাহিনী) গুলি চালানোর এত সাহস হয় কী করে?’’

এ দিন বিকেল ৫টা পর্যন্ত আটটি আসনে ভোটের হার ৭৬.৪৪ শতাংশ। মোট ছ’টি এফআইআর দায়ের হয়েছে। গোটা দিনে বিভিন্ন ঘটনায় পাঁচ জন আহত হয়েছেন। গ্রেফতার করা হয়েছে ১৪৫ জনকে। তিনটি বুথের প্রিসাইডিং অফিসারকে সরিয়ে দিয়েছিল কমিশন। সিইও দফতর সূত্রের খবর, এ দিন বিভিন্ন মাধ্যমে দু’হাজারের কিছু বেশি অভিযোগ পেয়েছে কমিশন। যা আগের দফার ভোটগুলির থেকে কিছুটা বেশি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement