সাংবাদিক বৈঠকে রাজ্যের অতিরিক্ত মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক সঞ্জয় বসু। —ভিডিয়ো থেকে নেওয়া ছবি
আগামী লোকসভা ভোটে অশান্তি এড়াতে পশ্চিমবঙ্গের সব বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনীর দাবি জানাল বিজেপি। সোমবার দিল্লিতে বিজেপি-র সদর দফতরে এক সাংবাদিক বৈঠকে পশ্চিমবঙ্গের দায়িত্বে থাকা দলের কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয় এ কথা জানিয়েছেন। তাঁর আশঙ্কা, গত বিধানসভা এবং পঞ্চায়েত নির্বাচনে যে ভাবে এ রাজ্যে ভোটের সময় হিংসার ঘটনা ঘটেছে, লোকসভা ভোটেও তাই অশান্তির আশঙ্কা থেকে যাচ্ছে।
এ দিন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের দফতরে সর্বদলীয় বৈঠকেও বিজেপির প্রতিনিধিরা এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। কেন্দ্রীয় বাহিনী প্রসঙ্গে রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের একটি মন্তব্যের তীব্র বিরোধিতা করে কমিশনকে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধও করেছেনতাঁরা। বিজেপি নেতা জয়প্রকাশ মজুমদারের অভিযোগ, “রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম ভোটের নির্ঘণ্ট ঘোষণার পর বলেছেন, কেন্দ্রীয় বাহিনী দু’দিনের জন্য। আসবে, চলে যাবে। তার পর তো রাজ্য পুলিশই থাকবে। এর মানে কী? ভোটারদের ভয় দেখানো হচ্ছে। একই ভাবে অনুব্রত মণ্ডলও বিতর্কিত মন্তব্য করে চলেছেন।”পাশাপাশি রাজ্য পুলিশের কর্মীদের বদলি নিয়েও সরব হয়েছে বিজেপি। তাদের অভিযোগ, “এক থানা থেকে পাশের থানায় বদলি করা হচ্ছে পুলিশকর্মীদের। এ ভাবে হবে না। ওই পুলিশ অফিসারদের সঠিক জায়গায় বদলি করতেই হবে।”
বৈঠকে শাসক দলের তরফে ছিলেন তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় এবং সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক সুব্রত বক্সী। ইভিএম-এর পাশাপাশি ভিভিপ্যাট-এর ‘ভোটার স্লিপ’ গণনা করার দাবি জানানো হয় তৃণমূলের তরফে। বৈঠক শেষে পার্থবাবু জানান, “রাজ্য সরকার সব রকমভাবে সাহায্য করবে। মে মাসে এমনিতেই গরম পড়ে। একটি সম্প্রদায়ের ধর্মীয় অনুষ্ঠানও রয়েছে। সবাই যাতে ভোটে যেতে পারে, সেটা দেখতে হবে। আমরা নানা প্রশ্ন তুলেছি।”
লোকসভা ভোটের ইতিহাস, আপনি কতটা ওয়াকিবহাল?
আরও পড়ুন: কাল প্রার্থী চূড়ান্ত করবেন মমতা, বিজেপির ঘোষণা দফায় দফায়, বাম-কং সমঝোতা এখনও ঝুলে
সর্বদলীয় বৈঠকে সংবাদপত্র এবং বৈদ্যুতিন সংবাদমাধ্যমে প্রার্থীদের বিজ্ঞাপনের খরচ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে রাজনৈতিক দলগুলি। কমিশনের নির্দেশ, বিজ্ঞাপনের খরচ প্রার্থীকেই দিতে হবে। তাতে একমত নয় দলগুলি।
বামফ্রন্টের তরফে সরকারি বিজ্ঞাপন থেকে প্রধানমন্ত্রী ও মুখ্যমন্ত্রীর ছবি সরানোর দাবি জানানো হয়। সিপিএমের রবিন দেব বলেন, “নির্বাচনী আচরণবিধি চালু হয়ে যাওয়ার পর সেই ছবি সরিয়ে নেওয়া উচিত ছিল। শুধু মুখ্যমন্ত্রী নন, একইভাবে বিভিন্ন পেট্রল পাম্প থেকে শুরু করে রেল স্টেশনে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ছবি দেওয়া বিজ্ঞাপন রয়েছে।”
আরও পড়ুন: আমেরিকার পর ভারত, নির্বাচনের জন্য আলাদা ‘ওয়ার রুম’ খুলছে ফেসবুক
কমিশনের ‘সি-ভিজিল’ অ্যাপ নিয়েও এ দিন প্রশ্ন উঠেছে। অভিযোগ, ভোটের নির্ঘণ্ট ঘোষণার পরে এখনও ওই অ্যাপ কার্যকর হয়নি। এ দিন বৈঠকের পর সাংবাদিক সম্মেলনে রাজ্যের অতিরিক্ত মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক সঞ্জয় বসু বলেন, ‘‘সর্বদলীয় বৈঠকে রাজনৈতিক দলগুলি যেঅভিযোগগুলি এনেছে, তা দিল্লির নির্বাচন কমিশনকে জানানো হবে। নির্দেশ মতো পরবর্তী পদক্ষেপ করা হবে।’’
(বাংলার রাজনীতি, বাংলার শিক্ষা, বাংলার অর্থনীতি, বাংলার সংস্কৃতি, বাংলার স্বাস্থ্য, বাংলার আবহাওয়া -পশ্চিমবঙ্গের সব টাটকা খবর আমাদের রাজ্য বিভাগে।)