প্রতীকী ছবি।
অর্থে অনর্থ হয়, সে তো জানা কথা! কারণও কিন্তু কিছু কম যায় না। অকারণে কখনও কখনও হাওয়াবদল হয় বইকি!
মুর্শিদাবাদ জেলা প্রশাসনের এক কর্তা বলছেন, ‘‘ভোটের জন্য শুধু টাকাই ওড়ে না, ঢালা হয় মদও। অনেক সময় ভোটারদের প্রভাবিত করতে মদকে কাজে লাগানো হয়। আর সেই কারণেই নির্বাচন কমিশন নথিপত্রহীন নগদ টাকা বা ব্যাঙ্কে বড় ধরনের লেনদেনের পাশাপাশি মদ বিক্রির উপরেও নজরদারির নির্দেশ দিয়েছে।’’
জেলাশাসক পি উলাগানাথন বলছেন, ‘‘জেলা জুড়ে বেআইনি মদের কারবারিদের বিরুদ্ধে অভিযান চালানো হচ্ছে। এ ছাড়াও লাইসেন্সপ্রাপ্ত মদের দোকানেও নিয়মিত নজরদারি চালানো হচ্ছে।’’
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, জেলায় ৮৬টি বিদেশি এবং ৯৫টি দেশি মদের দোকান আছে। নির্বাচন কমিশনের নির্দেশে জেলার ১৩টি মদের দোকানকে স্পর্শকাতর হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। রেজিনগরের দাদপুর, ডোমকলের ভগীরথপুর, সালারের মাকালতোড়, শিবপুর, তালিবপুর, বড়ঞার মাজিয়াড়া, বহরমপুরের খাগড়া, সাগরদিঘির বেরুলিয়া সাহাপাড়া, যোগপুর, সাহাপুর, মোড়গ্রাম, অমরকুণ্ডু এবং রানিতলার খড়িবোনার একটি করে মদের দোকানকে স্পর্শকাতর হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। স্পর্শকাতরের কারণ হিসেবে দেখানো হয়েছে, কোনওটি গ্রামীণ এলাকা, কোনওটি প্রত্যন্ত গ্রামীণ এলাকা। এই ১৩টি মদের দোকানে কী পরিমাণ মদ বিক্রি হচ্ছে সে বিষয়ে নিয়মিত নজরদারি চালানো হচ্ছে।
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
এ ছাড়া গত বছরের তুলনায় এ বছর চলতি মাসে মদ বিক্রির বৃদ্ধি ৩০ শতাংশের উপরে হলেই সেই দোকানগুলিও নির্বাচন কমিশনের নির্দেশে নজরদারির আওতায় আনা হবে। প্রতিদিন এই বিষয়ে নজরদারি চালিয়ে নির্বাচন কমিশনকে জেলা থেকে রিপোর্ট পাঠানো হচ্ছে। গত ৩১ মার্চের হিসেব বলছে, জেলার ১১টি মদের দোকানে গত বছরের তুলনায় ৩০ শতাংশের উপরে মদ বিক্রি হয়েছে। সর্বোচ্চ মদের বিক্রি বেড়েছে জিয়াগঞ্জের একটি মদের দোকানে। সেখানে গত বছরের তুলনায় ১৯৪ শতাংশ বেশি মদ বিক্রি। আজিমগঞ্জের একটি দোকানে ১৬৮ শতাংশ বেশি মদ বিক্রি হয়েছে।
দু’টি দোকানেই মদ বিক্রির কারণ হিসেবে দেখানো হয়েছে, পাশের দোকান বন্ধ থাকায় সেখানে এমন বেশি বিক্রি হয়েছে। জলঙ্গির একটি মদের দোকানে মদ বিক্রি বেড়েছে ১০৪.৭ শতাংশ। গত বছর রাস্তার পাশে মদের দোকানে বিক্রির বিষয়ে নিষেধাজ্ঞা থাকায় বিক্রি কম হয়েছিল বলে দাবি অনেকের।
নবগ্রামের পলসণ্ডায় একটি মদের দোকানে ৯৫ শতাংশ বিক্রি বেড়েছে। বৃদ্ধির কারণ হিসেবে স্থানীয় একটি মেলার উল্লেখ করা হয়েছে। ফরাক্কার বেওয়াতে একটি দোকানে মদের বিক্রি বেড়েছে ৬৯ শতাংশ। কারণ হিসেবে দেখানো হয়েছে সেতু সংস্কারের কাজ চলছে। বাইরের বহু শ্রমিক আছে। তাদের সৌজন্যেই এমন লক্ষ্মীলাভ!
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, জেলা জুড়ে বেআইনি মদের কারবারিদের বিরুদ্ধেও অভিযান চলছে। নির্বাচন ঘোষণার দিন থেকে ৩১ মার্চ পর্যন্ত জেলায় ১৬ হাজার ৭২৫ লিটার চোলাই মদ, ৫ হাজার ৯৬৮ লিটার চোলাই মদের উপকরণ, ১৩২৫ লিটার দেশি মদ, ১০৫ লিটার বিদেশি মদ, ১৩৯ লিটার বিয়ার উদ্ধার করা হয়েছে। এ ছাড়াও বেআইনি মদের কারবার চালানোর অভিযোগে ৩৭ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।