রমা বিশ্বাস, সিপিএম প্রার্থী।
গত বিধানসভা ভোটে বামেদের হয়ে নদিয়ার এক মাত্র আসনটি জিতেছিলেন তিনি। সেই পুরনো ঘোড়ার উপরেই বাজি ধরল সিপিএম। আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে রানাঘাটে প্রার্থী করা হল রানাঘাট দক্ষিণের বিধায়ক রমা বিশ্বাসকে।
তবে কৃষ্ণনগর লোকসভার প্রার্থী ঘোষণা এ দিন ঝুলেই রইল। শুক্রবার রাত পর্যন্ত যা খবর, কংগ্রেস যদি চায়, ওই আসনটি তাদের ছেড়ে দেওয়া হতে পারে। ওই আসনটিতে সিপিআই (এম) লিবারেশন প্রার্থী দিতে চেয়েছিল। কিন্তু তাদের আসনটি ছাড়া সম্ভব হচ্ছে না বলে বামফ্রন্টের তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।
এ দিন রাজ্যের ৪২টির মধ্যে ২৫টি লোকসভা কেন্দ্রের জন্য প্রার্থী ঘোষণা করে বামফ্রন্ট। তার মধ্যেই রয়েছে রমা বিশ্বাসের নাম। খেলার মাঠের জবানিতে রমা তাঁর দলের ‘পয়া খেলোয়াড়’। গত বছর পঞ্চায়েত ভোটে যখন বিভিন্ন জায়গায় সন্ত্রাসের অভিযোগ উঠেছে, জেলা পরিষদে প্রার্থী হন প্রাক্তন জেলা সভাধিপতি রমা। মূলত কর্মীদের উৎসাহ দিতেই সে দিন তাঁর ভোটে দাঁড়ানো। শুধু তিনিই নন, পঞ্চায়েত নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছিলেন তাঁর মা এবং বোনও। ২০১৬ সালে বিধানসভা ভোটে বস্তুত তাঁর হাত ধরেই রানাঘাট দক্ষিণ কেন্দ্রে উলটপুরাণ ঘটিয়েছিল সিপিএম। রাজ্য জুড়ে গোহারান হারার বাজারে এই কেন্দ্রটি তারা তৃণমূলের হাত থেকে ছিনিয়ে নিয়েছিল।
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
লোকসভা ভোটে রানাঘাটে সদ্য প্রয়াত বিধায়ক সত্যজিৎ বিশ্বাসের স্ত্রী রুপালী বিশ্বাসকে প্রার্থী করেছে তৃণমূল। রুপালী রাজনীতিতে নবাগত হলেও মতুয়া পরিচয় এবং ঘটে যাওয়া ট্র্যাজেডি তাঁর পক্ষে যাবে। কেননা এই কেন্দ্রে মতুয়া ভোটই অন্যতম নির্ণায়ক হতে পারে এ বার। তা নিয়ে তৃণমূল এবং বিজেপির মধ্যে টানাটানি চলছে। কৃষ্ণগঞ্জে উপনির্বাচনেও মতুয়া মুখের উপরেই ভরসা করেছে শাসক দল।
বিজেপির প্রার্থী ঘোষণা হয়নি এখনও। ফলে রানাঘাট দখলের লড়াই কী চেহারা নিতে যাচ্ছে, তা এখনও স্পষ্ট নয়। কিন্তু এর মধ্যেই বামেরা রমা বিশ্বাসকে মাঠে নামিয়ে দেওয়ায় লড়াই আরও বর্ণময় হয়ে উঠল। এর আগে বিধানসভা এবং পঞ্চায়েত স্তরে একাধিক বার প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলেও লোকসভা নির্বাচনে ময়দানে এ বারই তাঁর প্রথম নামা। কিন্তু বিজেপি বনাম তৃণমূল একবগ্গা লড়াইয়ের অঙ্কটা যে কিছুটা জটিল হল, তাতে সন্দেহ নেই।
প্রত্যাশিত ভাবেই, উজ্জীবিত বাম কর্মীরাও। এ দিন রমা বিশ্বাসের নাম ঘোষণা হতেই সন্ধায় ঝড়বৃষ্টির মধ্যে দেওয়াল লিখতে নেমে পড়েন তাঁরা। রাতে রমা বলেন, “বিজেপি এবং তৃণমূলের দুর্নীতি ও জনবিরোধী নীতির বিরুদ্ধে আমাদের আন্দোলন। দল যা দায়িত্ব দিয়েছে, পালন করব। দেশে ধর্মনিরপেক্ষ গণতান্ত্রিক সরকার গড়ে তুলতে হবে।” সিপিএমের জেলা সম্পাদক সুমিত দে বলেন, “তৃণমূল এবং বিজেপি বিরোধী সব শক্তিকে একজোট করতে হবে।”