‘মেরামত’ সংগঠনে, দাবি বামের

২০১১-র বিধানসভা ভোটে রাজ্যে পালাবদলের সময়েও সিপিএম পাণ্ডবেশ্বর, জামুড়িয়ায় জয় পায়। সে বার রানিগঞ্জ হাতছাড়া হলেও ২০১৬-র বিধানসভা ভোটে তা ফের বামের ঘরে আসে।

Advertisement

নীলোৎপল রায়চৌধুরী

রানিগঞ্জ শেষ আপডেট: ০১ এপ্রিল ২০১৯ ০৬:৪৪
Share:

আসানসোল লোকসভা কেন্দ্রের এই তিন বিধানসভা এলাকা বরাবরই বামেদের শক্ত ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত। মাঝে কিছু টালমাটাল অবশ্য সেই ঘাঁটিতে খানিকটা ফাটল ধরিয়েছে, তেমনটাই মনে করেন এলাকার রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত লোকজনের একাংশ। তবে, গত কয়েক বছরে রানিগঞ্জ, জামুড়িয়া, পাণ্ডবেশ্বর বিধানসভা এলাকায় সেই ক্ষত অনেকটাই মেরামত করা গিয়েছে বলে দাবি সিপিএম নেতৃত্বের। দলীয় কার্যালয় পুনরুদ্ধার, কর্মী সংখ্যা বৃদ্ধি সেই ‘মেরামতের’ কথাই বলছে, দাবি একাধিক সিপিএম নেতার।

Advertisement

২০১১-র বিধানসভা ভোটে রাজ্যে পালাবদলের সময়েও সিপিএম পাণ্ডবেশ্বর, জামুড়িয়ায় জয় পায়। সে বার রানিগঞ্জ হাতছাড়া হলেও ২০১৬-র বিধানসভা ভোটে তা ফের বামের ঘরে আসে। ২০১৬-র ভোটে জামুড়িয়ায় ফের সিপিএম জিতলেও অল্প ব্যবধানে হাতছাড়া হয় পাণ্ডবেশ্বর কেন্দ্রটি। যদিও ওই ভোটেও পাণ্ডবেশ্বর বিধানসভা কেন্দ্রের পাণ্ডবেশ্বর ব্লকে অল্প ব্যবধানে হলেও এগিয়ে ছিল সিপিএম। তবে ২০১৪-র লোকসভা ভোটে জামুড়িয়ায় অল্প ভোটে ‘লিড’ পান সিপিএম প্রার্থী। পাণ্ডবেশ্বরে এগিয়ে ছিল তৃণমূল। লোকসভার অন্তর্গত বাকি পাঁচটি বিধানসভা কেন্দ্রই বিজেপির দখলে যায়। পরে পঞ্চায়েত ভোটে বেশির ভাগ এলাকায় জেতে তৃণমূল।

এর পাশাপাশি, এই তিন বিধানসভা এলাকায় সিপিএমের সাংগঠনিক সক্রিয়তা নিয়েও প্রশ্ন ওঠে, মনে করছেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা, কর্মীদের একাংশ। পশ্চিম বর্ধমান জেলা সিপিএম সূত্রেই জানা যায়, ২০১১ থেকে পরবর্তী পাঁচ বছরে এই তিন বিধানসভা এলাকায় অন্তত ৪৮টি দলীয় কার্যালয় দখল হয়ে যায়। ভাটা পড়ে গণসংগঠনগুলির সক্রিয়তা ও সদস্যের সংখ্যাতেও।

Advertisement

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

কিন্তু এর পরেও ২০১৯-র লোকসভা ভোটের আগে নিজেদের ভোট ধরে রাখার ব্যাপারে তাঁরা আত্মবিশ্বাসী, জানান সিপিএমের এক শীর্ষ নেতা। ওই নেতার ব্যাখ্যা, এই তিন এলাকায় সাংগঠনিক ভাবে দলের মেরামত অনেকটাই করা গিয়েছে। ওই নেতারই দাবি, ৪৮টি দখল হওয়া কার্যালয়ের অন্তত ২০টি কার্যালয় পুনরুদ্ধার করা গিয়েছে। সিপিএমের জেলা সম্পাদক মণ্ডলীর সদস্য মনোজ দত্তের দাবি, ‘‘গত পাঁচ বছরে দল ও সংগঠনে সদস্য সংখ্যা ১০ শতাংশ কমেছে। কিন্তু বেড়েছে কর্মীর সংখ্যা।’’ মনোজবাবুদের দাবি, এই পরিস্থিতিতে গ্রামেগঞ্জে প্রচার পর্বেও কোনও রকম অসুবিধা হচ্ছে না। মিলছে সাড়াও। সেই সঙ্গে সিপিএম নেতৃত্বের আশা, এই এলাকায় শ্রমিক পরিবারের সংখ্যা বিশাল সংখ্যায়। ফলে আসানসোল লোকসভা কেন্দ্রে দলের প্রার্থী, শ্রমিক নেতা গৌরাঙ্গ চট্টোপাধ্যায় ভোট-যুদ্ধে অবশ্যই এগিয়ে থাকবেন, আশা মনোজবাবুদের।

যদিও সিপিএমের সংগঠন ‘মেরামতে’র কথা মানতে চাননি বিজেপি নেতৃত্ব। সেই সঙ্গে তাঁদের পাল্টা দাবি, এই তিন এলাকায় বিজেপির সাংগঠনিক শক্তি আগের তুলনায় বেড়েছে। বিজেপি নেতা জিতেন চট্টোপাধ্যায়, মদন ত্রিবেদীদের দাবি, ২০১৪-য় এই তিন বিধানসভা এলাকায় তাঁদের পাঁচটি দলীয় কার্যালয় ছিল। পাঁচ বছরে নতুন করে আরও ১৬টি দলীয় কার্যালয় হয়েছে। বেড়েছে সদস্য সংখ্যাও। জিতেনবাবুর দাবি, ‘‘সিপিএম নয়, গোটা লোকসভার মতো এই তিন এলাকাতেও আমরাই তৃণমূলের মূল প্রতিদ্বন্দ্বী। সিপিএমের অস্তিত্ব নেই।’’ যদিও এ সব কোনও কথাতেই আমল দেননি তৃণমূলের পশ্চিম বর্ধমান জেলা সভাপতি ভি শিবদাসন। তাঁর কথায়, ‘‘কোথাও সিপিএম, কোথাও বিজেপির সঙ্গে আমাদের লড়াই হবে। জয় আমাদেরই হবে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement