চেনা সেনায় আস্থা, প্রতীক রেজাউলকেও

তৃণমূলের তালিকায় কিছু রুপোলি চমক আছে, কিছু পরিবর্তন আছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২০ মার্চ ২০১৯ ০৩:২০
Share:

সিপিএম এবং শরিক দলের পরিচিত নেতা ও তরুণ প্রজন্মের কিছু মুখই জায়গা পেয়েছে বামেদের প্রার্থী তালিকায়। ছবি: সংগৃহীত।

লোকসভার কঠিন লড়াইয়ে রাজনৈতিক সৈনিকদের উপরেই ভরসা রাখছে বামফ্রন্ট। সিপিএম এবং শরিক দলের পরিচিত নেতা ও তরুণ প্রজন্মের কিছু মুখই জায়গা পেয়েছে বামেদের প্রার্থী তালিকায়। এই তালিকায় একমাত্র চমক চিকিৎসক রেজাউল করিম। তাঁকে নিয়ে কংগ্রেসের সঙ্গে বিবাদ ও বিতর্কের পরে শেষ পর্যন্ত করিমকে নিজেদের প্রতীকেই বীরভূম আসনে দাঁড় করানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সিপিএম।

Advertisement

তৃণমূলের তালিকায় কিছু রুপোলি চমক আছে, কিছু পরিবর্তন আছে। বিজেপির তালিকা ঘোষণা না হলেও তারা কিছু চমক দেখাতে পারে বলে জল্পনা প্রবল। কিন্তু দু’দফায় বামফ্রন্টের ঘোষিত ৩৮ প্রার্থীর তালিকায় সে অর্থে কোনও ‘চমক’ নেই। বরং, তৃণমূল ও বিজেপির বিরুদ্ধে শক্ত লড়াইয়ে এঁটে ওঠার জন্য কিছু ক্ষেত্রে নতুন মুখের ভাবনা সরিয়ে প্রথম সারির নেতাদের ভোটের ময়দানে নামিয়েছে আলিমুদ্দিন।

বামেদের প্রথম তালিকাতেই চিকিৎসক রেজাউলের নাম ছিল। তবে তাঁর নামের পাশে দলের উল্লেখ ছিল না। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্র অভিযোগ করেছিলেন, তাঁদের দলের চিকিৎসক শাখার চেয়ারম্যান রেজাউলের নাম নিজেদের তালিকায় তুলে দিয়ে অন্যায় করেছিল বামফ্রন্ট। নিজেরা প্রার্থী ঘোষণা করে রেজাউলকে কংগ্রেসের প্রতীক দেওয়ার অনুরোধ কেন সিপিএম নেতারা করেছেন, তা নিয়েও ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন সোমেনবাবু। বিতর্কের জেরে রেজাউলকে প্রদেশ কংগ্রেসের চিকিৎসক শাখা থেকে বহিষ্কারও করা হয়। এমন বিতর্কের পরেও সিপিএম বীরভূমে প্রার্থী পরিবর্তন না করে তাঁকে দলের প্রতীক দেওয়ারই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

Advertisement

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

বামফ্রন্টের প্রার্থী তালিকা

• দার্জিলিং, সমন পাঠক (সিপিএম)
• কৃষ্ণনগর, শান্তনু ঝা (সিপিএম)
• আসানসোল, গৌরাঙ্গ চট্টোপাধ্যায় (সিপিএম)
• বোলপুর, রামচন্দ্র ডোম (সিপিএম)
• ব্যারাকপুর, গার্গী চট্টোপাধ্যায় (সিপিএম)
• হাওড়া, সুমিত্র অধিকারী (সিপিএম)
• শ্রীরামপুর, তীর্থঙ্কর রায় (সিপিএম)
• তমলুক, শেখ ইব্রাহিম আলি (সিপিএম)
• কাঁথি, পরিতোষ পট্টনায়ক (সিপিএম)
• ঝাড়গ্রাম, দেবলীনা হেমব্রম (সিপিএম)
• বাঁকুড়া, অমিয় পাত্র (সিপিএম)
• মথুরাপুর, শরৎ হালদার (সিপিএম)
• উত্তর কলকাতা, কনীনিকা বসু ঘোষ (সিপিএম)

সোমেনবাবুদের অভিযোগের জবাবে বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু মঙ্গলবার ব্যাখ্যা দিয়েছেন, ‘‘কংগ্রেসের সদস্যপদ রেজাউল করিমের ছিল না। ছাত্র সংগঠনের পরে তিনি কোনও দলের সদস্য হননি। রাজ্যে চিকিৎসক আন্দোলনের একটি মুখ হিসেবেই তাঁকে আমরা প্রার্থী হিসাবে ভেবেছিলাম। এখন আমরা তাঁকে সরাসরি সিপিএমের প্রার্থী করছি।’’ পাশের কেন্দ্র বোলপুরে (সংরক্ষিত) রামচন্দ্র ডোম ফের প্রার্থী হওয়ায় বীরভূম জেলার দুই আসনেই সিপিএমের দুই চিকিৎসক-প্রার্থী থাকছেন।

আসানসোলে প্রার্থী হয়েছেন সিপিএমের পশ্চিম বর্ধমান জেলা সম্পাদক গৌরাঙ্গ চট্টোপাধ্যায়। বাঁকুড়ায় তৃণমূল সূব্রত মুখোপাধ্যায়কে প্রার্থী করার পরে সিপিএম দাঁড় করাচ্ছে প্রাক্তন জেলা সম্পাদক ও কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য অমিয় পাত্রকে। বাঁকুড়ার রানিবাঁধের প্রাক্তন বিধায়ক দেবলীনা হেমব্রম এ বার ঝাড়গ্রাম লোকসভা আসনের প্রার্থী। ফেব্রুয়ারিতে বামেদের ব্রিগেড সমাবেশে বাংলা ও সাঁওতালিতে ঝাঁঝালো বক্তৃতা করে নজর কেড়েছিলেন দেবলীনা।

এখনও পর্যন্ত ৩৮ জনের তালিকায় মহিলা মুখ ৭। প্রথম বার লোকসভা ভোটে লড়ছেন, এমন প্রার্থী ১৮ জন। শাখা সংগঠন থেকে এনে লোকসভা ভোটের যুদ্ধে নামানো হয়েছে আর এক চিকিৎসক তথা বিধানসভার প্রাক্তন স্পিকার হাসিম আব্দুল হালিমের ছেলে ফুয়াদ হালিমকে। তবে গত বার সিপিএম প্রার্থীদের মধ্যে সর্বোচ্চ ভোট পাওয়া তাপস সিংহকে এ বার প্রার্থী না করায় প্রশ্ন উঠেছে দলের অন্দরেই। কাঁথিতে এ বার নতুন প্রার্থী পরিতোষ পট্টনায়ক।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement