শুরু হচ্ছে সিপিএমের দেওয়াল লেখা। বনগাঁয়। ছবি: নির্মাল্য প্রামাণিক
লোকসভা ভোটে বনগাঁ আসনে প্রার্থী দিতে চলেছে বামেরা। কংগ্রেসের সঙ্গে বাম নেতৃত্বের জোট সংক্রান্ত আলোচনায় তেমনই ইঙ্গিত মিলেছে।
সিপিএমের জেলা সম্পাদক মণ্ডলীর সদস্য পঙ্কজ ঘোষ বৃহস্পতিবার জানিয়েছেন, ‘‘এখনও পর্যন্ত আলোচনায় ঠিক হয়েছে বনগাঁ কেন্দ্রে আমরাই প্রার্থী দিচ্ছি। কংগ্রেস আমাদের সমর্থন করবে।’’
বনগাঁ কেন্দ্রে কে হচ্ছেন বাম প্রার্থী?
দলীয় একটি সূত্র জানাচ্ছে, প্রার্থী হিসাবে কল্যাণীর বাসিন্দা অলকেশ দাসের নাম চুড়ান্ত হয়ে গিয়েছে। সম্ভবত ১৬ মার্চ প্রার্থীর নাম ঘোষণা হবে। সিপিএম সূত্রে জানা গিয়েছে, কল্যাণীর বাসিন্দা অলকেশ পরিচিত মুখ। তিনি অতীতে নবদ্বীপ কেন্দ্রের সাংসদ ছিলেন। বনগাঁয় এক সময় সিপিএমের দাপট থাকলেও এখন অনেকটা দুর্বল। পঞ্চায়েত ভোটে বামেদের সরিয়ে বিজেপি বিরোধী দল হিসাবে উঠে এসেছে। তবে সম্প্রতি ভারত বন্ধ ও ব্রিগেড সভাকে কেন্দ্র করে সিপিএম নিজেদের সংগঠন অনেকটাই মজবুত করেছে বলে দলীয় সূত্রের খবর। বহু পুরনো বসে যাওয়া কর্মীরা দলীয় কাজে সক্রিয় ভাবে ফিরে এসেছেন।
সাংগঠনিক ভাবে কংগ্রেস উত্তর ২৪ পরগনা জেলায় দু’টি ভাগে বিভক্ত। একটি জেলা গ্রামীণ কংগ্রেস কমিটি, অন্যটি শহর কংগ্রেস কমিটি। জেলা গ্রামীণ কংগ্রেস কমিটির অধীনে রয়েছে তিনটি লোকসভা আসন। আসনগুলি হল, বসিরহাট, বনগাঁ ও বারাসত।
কংগ্রেস ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, তিনটি আসনের মধ্যে একমাত্র বসিরহাট আসন ছাড়া বাকি আসনগুলিতে কংগ্রেসের সাংগঠনিক শক্তি খুবই দুর্বল। গত পঞ্চায়েত ভোটে বনগাঁ লোকসভা এলাকা থেকে কংগ্রেস কার্যত মুছে গিয়েছে। প্রদেশ কংগ্রেসের নির্বাহী কমিটির সদস্য অমিত মজুমদার বলেন, ‘‘আমরা মূলত বসিরহাট আসনটি দাবি করেছি। কারণ এখানে আমাদের বিধায়ক, পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য, পঞ্চায়েত সদস্য, কাউন্সিলর রয়েছেন। সাংগঠনিক ভাবেও আমরা শক্তিশালী।’’
কংগ্রেস সূত্রে জানা গিয়েছে,তিনটি লোকসভা কেন্দ্রের জন্যই দলের পক্ষ থেকে প্রাথমিক প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত করে রাখা হয়েছে। প্রতিটি আসনের জন্য তিনজন করে সম্ভাব্য নামের তালিকা প্রদেশ কংগ্রেসের কাছে পাঠানো হয়েছে। প্রতিলিপি দিল্লিতে হাইকমান্ডের কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। বামেদের সঙ্গে কোনও কারণে জোট প্রক্রিয়া যদি ভেস্তে যায়, তা হলে যাতে প্রার্থী খুঁজতে সমস্যা না হয় সে কারণেই ওই ব্যবস্থা করা হয়েছে বলে দল জানায়।
অমিত বলেন, ‘‘রাজ্যে বসিরহাট ও পুরুলিয়া আসন দু’টি নিয়ে এখন বামেদের সঙ্গে সমাধান সূত্র বের হয়নি। আলোচনা চলছে। শীঘ্রই মিটে যাবে।’’
তবে বসিরহাটে কংগ্রেসকে ছাড়া নিয়ে কিছু জটিলতা রয়েছে। সিপিএমের এক জেলা নেতার কথায়, ‘‘বসিরহাটে সিপিআই প্রার্থী দিয়ে থাকে। সেখানে আমরা তো কিছু করতে পারি না।’’
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
সিপিআই এর রাজ্য কমিটির সম্পাদক রণজিৎ কর্মকার বলেন, ‘‘বুধবার বামফ্রন্টের বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে বসিরহাট আসনে আমরাই প্রার্থী দেব।’’ কংগ্রেস নেতৃত্ব এখন কী সিদ্ধান্ত নেবেন, সে দিকেই তাকিয়ে জেলা রাজনৈতিক মহল।