ছবির পোস্টার।
একটি কাহিনিচিত্র ‘বাঘিনী’, যার ক্যাচলাইন ‘বেঙ্গল টাইগ্রেস’। ছবির কেন্দ্রীয় চরিত্রের নাম ইন্দিরা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি সাদা শাড়ি এবং হাওয়াই চটি পরেন। কাঁধে ঝোলা নেন। মাথায় হাতখোঁপা বাঁধেন। বিপন্ন মানুষের পাশে দাঁড়ান। অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে গিয়ে তাঁকে মাথায় লাঠি খেতে হয়। এক নির্যাতিতা মহিলাকে নিয়ে ক্ষমতার অলিন্দে যাওয়ার জন্য পুলিশ তাঁকে জোর করে সেখান থেকে বের করে দেওয়ার পরে ‘বাঘিনী’ আঙুল তুলে জানিয়ে আসেন, ‘‘এক দিন কিন্তু আমি মাথা উঁচু করে এখানে ঢুকব। আপনারা সে দিন মাথা নিচু করে আমাকে স্যালুট জানাবেন।’’ ছবির সেই ‘বাঘিনী’ উপসংহারে নির্বাচনে জিতেছেন, তেমনটা দেখানো হলেও সরাসরি মুখ্যমন্ত্রীর চেয়ারে তাঁকে দেখানো হয়নি। এমনকী, সিঙ্গুর-নন্দীগ্রাম শব্দগুলিও ছবির কোথাও নেই। আছে জমি আন্দোলনের কথা। আছে ২১ জুলাই গুলি চালনার প্রসঙ্গও।
ছবিটি ৩ মে মুক্তি পাওয়ার কথা। আর এ সব নিয়েই প্রশ্ন তুলেছে বিজেপি। নির্বাচন কমিশনে বুধবার চিঠি দিয়ে তারা অভিযোগ করেছে, এই ছবি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জীবনভিত্তিক। তাই নির্বাচনের সময় তা মুক্তি পাওয়া উচিত নয়। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর জীবনভিত্তিক ছবি মুক্তির ক্ষেত্রে কমিশন যেমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে, এ ক্ষেত্রেও তা-ই করা হোক। রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানিয়েছেন।
ছবির পরিচালক নেহাল দত্ত অবশ্য ‘বাঘিনী’কে মমতার জীবনীচিত্র বলে মানতে চাননি। তাঁর বক্তব্য, ‘‘আমি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনুরাগী। দিদির অনুপ্রেরণা আমার ছবিতে কাজ করেছে। দিদি শব্দটিও ছবিতে ব্যবহৃত হয়েছে। কিন্তু এটা ওঁর প্রামাণ্য জীবনীচিত্র নয়। আমি তা তৈরিও করিনি।’’ এখন এই ভোটের মরসুমে ছবিটি মুক্তির দিন ধার্য করা হচ্ছে কেন? পরিচালকের জবাব, ‘‘ভোটের সময়ে নতুন ছবির বেশি বেরোয় না। তাই হল পেতে সুবিধা হয়। আর সেন্সর বোর্ডের ছাড়পত্রও তো এখনই পেয়েছি।’’ ছবিতে ইন্দিরা চরিত্রে অভিনয় করেছেন যিনি, সেই রুমা চক্রবর্তী এর আগে মমতার জীবনভিত্তিক দু’টি যাত্রাপালাতেও তাঁর ভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন।