আদ্রায় সাতসকালে ভোট দিলেন বাসুদেব আচারিয়া। ছবি: সঙ্গীত নাগ
ঘুরে ঘুরে ভোট দেখার অনুমতি শরীর দেয়নি। নির্বাচনের আগেই দলকে জানিয়ে দিয়েছিলেন, ভোট-ময়দানে অবতীর্ণ হওয়ার অবস্থায় নেই তিনি। প্রচারের জন্য বেছে নিয়েছিলেন পুরুলিয়া লোকসভার কাশীপুর এবং বাঁকুড়া লোকসভার রঘুনাথপুর বিধানসভা এলাকা। ভোটের দিন রঘুনাথপুরের পার্টি অফিসে অনেকটা সময় কাটালেন বর্ষীয়ান সিপিএম নেতা, বাঁকুড়ার প্রাক্তন সাংসদ বাসুদেব আচারিয়া।
আদ্রার পলাশকোলা গ্রামে দলীয় এক কর্মীর বাড়িতে থাকেন বাসুদেববাবু। বুথ সেখান থেকে ৫০০ মিটার দূরে কাটারাঙ্গুনি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। রবিবার সকাল পৌনে ৮টা নাগাদ গাড়িতে চেপে ভোটকেন্দ্রে পৌঁছন এই প্রবীণ নেতা। ভোটার কার্ড হাতে নিয়ে দাঁড়ান লাইনে। তখন তাঁর আগে দাঁড়িয়ে অন্তত জনা কুড়ি। সকাল থেকেই গরম ছিল চড়া। দরদরিয়ে ঘামছিলেন। ভিজে উঠছিল ফতুয়ার পিঠ।
প্রাক্তন সাংসদকে দেখে এগিয়ে আসেন লাইনের গোড়ার দিকে থাকা স্থানীয় বাসিন্দা মধুসূদন চৌধুরী। বলেন, ‘‘আপনি অসুস্থ। দাঁড়িয়ে থাকবেন না। চলুন, ভোটটা দিয়ে দিন।’’ অসুস্থতা থাকলেও লাইন ভেঙে ভোট দিতে প্রবল আপত্তি ছিল বাসুদেববাবুর। তবে কেউ আপত্তি না করায়, এক রকম জোর করেই তাঁকে লাইনের সামনে নিয়ে যান মধুসূদন। সেখানে বাসুদেববাবু কথা বলেন পরিচিত এক স্কুলশিক্ষকের সঙ্গে। অতঃপর ভোটগ্রহণ কক্ষে প্রবেশ এবং ভোট দিয়ে বেরিয়ে লাইনে দাঁড়ানো কয়েকজনের সঙ্গে কুশল বিনিময়। কারও সঙ্গে হাত মেলানো। কারও মাথায় হাত বুলিয়ে দেওয়া।
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
দলের লোকেরা মনে করাচ্ছেন, ১৯৮৪ থেকে ২০১৪ পর্যন্ত প্রত্যেকবার ভোটের দিন বাঁকুড়া লোকসভা চষে বেড়াতে বেড়াতে দেখা যেত সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির এই সদস্যকে। দলের বাঁকুড়া জেলা কমিটির কার্যালয়ই ছিল তাঁর ‘কন্ট্রোল রুম’। এ দিন কী করবেন? বাসুদেববাবু বলেন, ‘‘টিফিন করে ওষুধ খাব। তারপরে রঘুনাথপুর পার্টি অফিসে আজ গোটা দিনটা কাটাব। ভোট কেমন হচ্ছে, খোঁজ রাখতে হবে।’’ সঙ্গে জুড়ছেন, ‘‘আমরা আশাবাদী। বাঁকুড়ায় সুব্রতবাবুর (তৃণমূল প্রার্থী তথা রাজ্যের মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়) সঙ্গে লড়াইটা আমাদেরই হচ্ছে।’’