অভিনব: মানব বাগচীর স্টুডিয়ো। নিজস্ব চিত্র
ভোটকেন্দ্রে ভোটারদের লাইন! হুইল চেয়ারে বসে অপেক্ষা করছেন বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন ভোটার। গ্রামীণ ভোটার, শহুরে ভোটার সকলে হাজির। বুথের ভিতরে প্রিসাইডিং অফিসার, তিনজন পোলিং অফিসার, ভোটদান কক্ষে ইভিএম, ভিভিপ্যাট সব আছে। ভোটগ্রহণ কেন্দ্রের পাহারায় কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানেরা।
এক ঝলক দেখলে চোখে ধাঁধা লেগে যেতে পারে। জঙ্গলমহলে ভোটের এখনও এক মাসেরও বেশি বাকি। তা হলে! কাছে গেলে ভাঙবে ভুল। প্রিসাইডিং অফিসার, পোলিং অফিসার, জওয়ান প্রত্যেকেই এক একটি কাট আউট। হুবহু যেন আসল। নতুন ভোটার এবং সাধারণ ভোটারদের ভোটদানে আগ্রহী করে তুলতে নানা ভাবে প্রচার চালাচ্ছে নির্বাচন কমিশন। তাই আদর্শ নির্বাচন প্রক্রিয়ার বিষয়গুলি তুলে ধরার জন্য ফাইবার বোর্ড কেটে তৈরি করা হয়েছে ভোটগ্রহণ কেন্দ্র, ভোটার, জওয়ান, ভোটকর্মীদের অবয়ব। ঝাড়গ্রামের বিশিষ্ট শিল্পী মানব বাগচীর স্টুডিয়োতে তৈরি করা হয়েছে কাটআউট গুলি। মানব বলেন, ‘‘জেলা নির্বাচনী দফতর থেকে বলা হয়েছিল প্রতিটি কাটআউট আকর্ষণীয় ভাবে বানাতে হবে। দেখে যাতে আসল মনে হয়।’’ তাঁর কথায়, ‘‘কারও সঙ্গে যাতে প্রতিকৃতির মিল না হয়, সেই কারণে নিজে প্রতিটি কাটআউট হাতে এঁকেছি।’’
ভোটকেন্দ্রের চেয়ার-টেবিল, নির্বাচনী দফতরের নজরদারি গাড়ি সব কিছুই এভাবেই বানিয়েছেন মানব। দু’এক দিনেই মধ্যেই অরণ্যশহরের বৈকালিক উদ্যানে মানবের তৈরি কাটআউট দিয়ে তৈরি হবে আদর্শ ভোটকেন্দ্র ও নির্বাচন পরিচালনা সংক্রান্ত বিশেষ ব্যবস্থা সমূহের প্রদর্শনী। মানব বলেন, ‘‘সারা বছর নানা ধরনের শিল্পকর্ম করি। মূর্তিও বানাই। তবে নির্বাচনের জন্য এ ধরনের কাজ এই প্রথম করলাম। কাজটা রীতিমতো চ্যালেঞ্জের ছিল।’’ নির্বাচনী দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, অবাধ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন করার ক্ষেত্রে মানুষের সচেতন হওয়াটা বেশি জরুরি। এ বছর কয়েক হাজার নতুন ভোটারের নাম উঠেছে তালিকায়। ফলে, লোকসভা নির্বাচন প্রক্রিয়ার সঙ্গে ভোটারদের পরিচয় করানোটাও জরুরি। কিন্তু এ ক্ষেত্রে প্রয়োজন মানুষকে আগ্রহী করে তুলতে পারে এমন মাধ্যম। এক মাত্রিক ঝকঝকে কাটআউটগুলি এমন ভাবে তৈরি করা হয়েছএ, সেগুলি দেখলে দর্শকেরা আকর্ষিত হবেন বলে শিল্পীর দাবি।
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
ঝাড়গ্রামের জেলাশাসক তথা জেলা নির্বাচনী আধিকারিক আয়েষা রানি বলেন, ‘‘ভোটারদের ভোটদানে আগ্রহী করে তুলতে এবং ভোটদান প্রক্রিয়া সম্পর্কে অবহিত করতে এই উদ্যোগ। মানবের তৈরি কাটআউট দিয়ে কয়েক দিনের মধ্যেই বৈকালিক পার্ক চত্বরটি ভোটকেন্দ্র হিসেবে সাজিয়ে তোলা হবে।’’