গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
রাজ্যে ষষ্ঠ দফা ভোটের আগে কেন্দ্রীয় বাহিনী নিয়ে রাজনৈতিক তরজা চলছিলই। বাহিনীর ভূমিকা নিয়ে তৃণমূল সরব হল বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি ৮ কেন্দ্রের ১০০ শতাংশ বুথেই কেন্দ্রীয় বাহিনীর দাবি জানায়। বিজেপি আরও একধাপ এগিয়ে মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের দফতরের সামনেই ধর্নায় বসে পড়ে।শেষ পর্যন্ত এই চাপের মুখে জওয়ানের সংখ্যা কয়েকগুণ বাড়াতে হল নির্বাচন কমিশনকে। আপাতত ঠিক হয়েছে, ষষ্ঠ দফায় মাত্র ৮ কেন্দ্রে মোট ৭৭০ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা হবে। যা এ রাজ্যের নির্বাচনের ইতিহাসে রেকর্ড বলেই মনে করছেন কমিশনের আধিকারিকরা।
একটা সময়ে জঙ্গল মহলের যে সব এলাকা মাওবাদী প্রভাবিত ছিল, সেই সমস্ত জায়গারনিরাপত্তায় জোর দেওয়া হয়েছে। ওই এলাকায় ভোটের ডিউটির সময়ে জওয়ানদের বুলেট প্রুফ জ্যাকেট, মাথায় হেলমেটপরতে বলা হয়েছে। হঠাৎ যদি হামলার ঘটনা ঘটে, সে জন্যেও সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।গত দু’দিনে দফায় দফায় কেন্দ্রীয় বাহিনীর সংখ্যা বাড়েছে। প্রথমে ঠিক ছিল ষষ্ঠ দফায় ৬৪২ কোম্পানি বাহিনী দিয়েই ভোট করানো হবে। যে সব বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকবে না, সেখানে রাজ্যের সশস্ত্র পুলিশ থাকবে নিরাপত্তার দায়িত্বে।
গত ৪৮ ঘণ্টায় দিল্লির নির্বাচন সদনে এবং এ রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের দফতরে বহু অভিযোগ জমা পড়ার পরবাহিনীর সংখ্যা এক লাফে ৬৮৩ কোম্পানি করা হয়। এর পর বাহিনীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়়ায় ৭১০ কোম্পানি। তাতেও সন্তুষ্ট হতে পারেনি রাজনৈতিক দলগুলি। চাপ বাড়াতে থাকে বিজেপি।কমিশন সূত্রে খবর, রাজ্যে নিযুক্ত পুলিশ পর্যবেক্ষক বিবেক দুবে বিষয়টি নিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্টমন্ত্রকের দ্বারস্থ হন। ভোটের নিরাপত্তায় রাজ্যে আরও বাহিনী পাওয়া যাবে কিনা, তা নিয়েজানতেচান। কেন্দ্রের তরফে সবুজ সঙ্কেত পাওয়ার পরেই বাহিনীর সংখ্যা ৭৭০ কোম্পানি করা হয়েছে। ফলে ষষ্ঠ দফাতে প্রায় ১০০ শতাংশ বুথেই থাকছে কেন্দ্রীয় বাহিনী।
আরও পড়ুন: এখানে এক জনের গায়েও হাত দিতে দেব না, আশোকনগরে এনআরসি নিয়ে চ্যালেঞ্জ মমতার
আরও পড়ুন: আকাশপথ লঙ্খন, করাচি থেকে দিল্লিগামী বিমান নামাল বায়ুসেনার জেট
মহারাষ্ট্রের গঢ়চিরৌলিতে মাওবাদী হামলায় ১৫ জন জওয়ানের মৃত্যু হয় সম্প্রতি। ঘটনার পরের দিনই ছত্তীসগঢ়ের সুকমাতেও মাওবাদীরা গ্রামে ঢুকে ২ জনকে গুপ্তচর সন্দেহে খুন করে। এ বারও মাওবাদীরা নির্বাচন বয়কটের ডাক দিয়েছে। তাই এ রাজ্যেও আট কেন্দ্রের মধ্যে, বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, ঝাড়গ্রাম, মেদিনীপুরের মতো এক কালের মাওবাদী প্রভাবিত এলাকায় সব রকমের সতর্কতামূলক ব্যবস্থা রাখা হচ্ছে। আধা সেনা যাতায়াতের সময় আইইডি বিস্ফোরণের মতো ঘটনার আশঙ্কা থেকে ওই এলাকাগুলিতে নজরদারি চালানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।