Pradeep Bhattacharya

মেরু-লড়াইয়ে জোটের নজর স্থানীয় বিষয়ে

জোট করেই কলকাতা-সহ সব পুরসভায় লড়াই করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাম ও কংগ্রেস

Advertisement

সন্দীপন চক্রবর্তী

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০২:৩০
Share:

বিধান ভবনে সোমবার প্রদীপ ভট্টাচার্যের নেতৃত্বে পুরভোট সংক্রান্ত কমিটির বৈঠক হল কলকাতায়।—ফাইল চিত্র।

সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) এবং জাতীয় নাগরিকপঞ্জির (এনআরসি) বিরুদ্ধে জোরালো প্রতিবাদ চলছে। কিন্তু সেই প্রতিবাদের ধোঁয়ায় স্থানীয় স্তরের ক্ষোভের আগুন চাপা পড়ে গেলে চলবে না! আর মসৃণ ভাবে এমন জোট করতে হবে, যাতে বিধানসভা নির্বাচনের আগের বছরে গোটা রাজ্য জুড়ে বার্তা দেওয়া যায়। এই জোড়া সূত্র হাতে নিয়েই পুরভোটের প্রস্তুতি শুরু করছে বাম ও কংগ্রেস। তাদের অগ্রাধিকার কলকাতা পুরসভার দিকেই।

Advertisement

জোট করেই কলকাতা-সহ সব পুরসভায় লড়াই করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাম ও কংগ্রেস। জেলায় জেলায় এই নিয়ে প্রাথমিক আলোচনাও শুরু হয়েছে। প্রাথমিক ভাবে বামেদের ভাবনা, কলকাতা পুরসভার ১৪৪টি ওয়ার্ডের মধ্যে ৮০টি তারা লড়তে চায়। বাকি ৬৪টি ওয়ার্ডে কংগ্রেস প্রার্থী দিক। গত বার যে দল যে ওয়ার্ড জিতেছে, তারাই সেখানে লড়বে। দ্বিতীয় স্থান পাওয়া ওয়ার্ডগুলিও যে যার নিজের দখলে রাখার কথা। তবে এই দ্বিতীয় সূত্র মানতে গিয়ে কোনও এলাকায় যদি দেখা যায় পরের পর ওয়ার্ডে শুধু বাম বা কংগ্রেস যে কোনও এক পক্ষের প্রার্থীই দেখা যাচ্ছে, তখন কিছু অদল-বদল করার দরকার হতে পারে। ওয়ার্ড ভাগাভাগি নিয়ে বাম ও কংগ্রেস নেতৃত্ব আলোচনার টেবিলে মুখোমুখি হওয়ার আগে দু’পক্ষই নিজেদের ঘর গুছিয়ে রাখতে চাইছে।

কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের সিএএ, এনআরসি-সহ নানা নীতির বিরুদ্ধে গোটা দেশ এখন উত্তাল। সেই আন্দোলনের রেশ পুরসভার ভোট পর্যন্ন থাকবে বলেই বাম ও কংগ্রেস নেতৃত্বের ধারণা। তবে তারই সঙ্গে এলাকা ধরে ধরে স্থানীয় বিষয় খুঁজে বার করে সেগুলিকে প্রচারে তুলে আনার জন্য দলীয় স্তরে পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। কলকাতা জেলা সিপিএমের এক নেতার কথায়, ‘‘সিএএ বা সার্বিক নীতিগত বিষয় তো থাকবেই। কিন্তু এই শহরের নানা এলাকায় বিভিন্ন সমস্যা আছে, মানুষের অভাব-অভিযোগ আছে। যে মানুষ সিএএ বা এনআরসি-র বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করছেন, তিনিও স্থানীয় স্তরে কোনও সমস্যায় হয়তো তিতিবিরক্ত। এই দিকে খেয়াল রেখেই পুরভোটের প্রস্তুতি হবে।’’ বিধান ভবনে সোমবার প্রদীপ ভট্টাচার্যের নেতৃত্বে পুরভোট সংক্রান্ত কমিটির বৈঠকে কলকাতার নানা এলাকার কংগ্রেস নেতৃত্বকেও একই পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

Advertisement

সম্ভাব্য প্রার্থী বাছাইয়ের প্রস্তুতিও শুরু হয়ে যাচ্ছে একই সঙ্গে। আগের পুরভোটের নিরিখে বাম বা কংগ্রেস, কোনও পক্ষেরই প্রাপ্তির ঝুলি বলার মতো নয়! বিজেপি ও তৃণমূলের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য স্থানীয় বিষয় ধরার পাশাপাশিই এলাকায় যথাসম্ভব ‘সর্বজনগ্রাহ্য’ মুখকে প্রার্থী করার কথা বলছেন বাম ও কংগ্রেস নেতৃত্ব। প্রদেশ কংগ্রেসের এক নেতার বক্তব্য, ‘‘এক দলের পছন্দ কিন্তু জোটসঙ্গী দলের কর্মীরা তাঁর সঙ্গে কাজ করতে স্বচ্ছন্দ নন— এমন প্রার্থী পরিহার করে চলার কথাই বলা হয়েছে।’’ কংগ্রেস সূত্রের খবর, সিএএ-বিরোধী আন্দোলনের আবহে জেলায় জেলায় বাম ও কংগ্রেসের জোট-আলোচনা ‘ইতিবাচক’ পথেই এগোচ্ছে। বিধান ভবনের বৈঠকে প্রদেশ কংগ্রেসের কার্যকরী সভাপতি শঙ্কর মালাকার জানিয়েছেন, শিলিগুড়িতে বর্তমান মেয়র ও সিপিএম নেতা অশোক ভট্টাচার্যের সঙ্গে সমন্বয় রেখেই তাঁরা এগোচ্ছেন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement