মঙ্গলবার রাতে ধর্মতলায় অনশনমঞ্চে জুনিয়র ডাক্তারেরা। —নিজস্ব চিত্র।
জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলনের সমর্থনে মঙ্গলবার দুপুরে ‘গণইস্তফা’ দিয়েছেন আরজি করের সিনিয়র ডাক্তারেরা। দেবাশিস বলেন, ‘‘আমাদের আন্দোলনে পাশে দাঁড়াতেই আমাদের সিনিয়েরা গণইস্তফার সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন। আমরা শুনেছি তার পর থেকেই তাঁদের উপর প্রশাসনিক চাপ সৃষ্টি করা হচ্ছে। আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখব। যদি সত্যি তেমন কিছু হয় তবে আমাদের আন্দোলন আরও তীব্রতর হবে।’’
সোমবারই সাংবাদিক বৈঠক করে জুনিয়র ডাক্তারদের কাজে ফেরার আহ্বান জানিয়েছেন রাজ্যের মুখ্যসচিব। তাঁর এই মন্তব্য ‘অপমানজনক’ বললেন জুনিয়র ডাক্তারেরা। তাঁদের কথায়, ‘‘আমরা ইতিমধ্যেই কর্মবিরতি তুলে কাজে ফিরেছি। তার পরও মুখ্যসচিব কাজে ফেরার কথা বলেছেন। উনি কী বোঝাতে চেয়েছেন, আমরা বুঝতে পারিনি। উনি যদি অনশনকারীদের উদ্দেশে বলে থাকেন, তা আমাদের কাছে অপমানজনক।’’
সোমবার মুখ্যসচিব যে কাজের হিসাব দিয়েছিলেন, তা নিয়ে মঙ্গলবার অনশনমঞ্চ থেকে প্রশ্ন তুললেন জুনিয়র ডাক্তারেরা। দেবাশিসের কথায়, ‘‘উনি (মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ) যা বলেছেন, তা একটাও নতুন কথা নয়। ১০০ শতাংশ ঠিক হল কী ভাবে? আমাদের সঙ্গে এ ব্যাপারে কোনও কথা বলা হয়নি। রাজ্য সরকার সুপ্রিম কোর্টে যে ২৬ শতাংশ কাজ শেষের কথা বলেছে, সেটা কিসের ভিত্তিতে আমাদের জানা নেই।’’
সোমবার স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণস্বরূপ নিগমকে সঙ্গে নিয়ে সাংবাদিক বৈঠক করেন মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ। সেই সাংবাদিক বৈঠকে তিনি জানান, ১০ তারিখের মধ্যে মেডিক্যাল কলেজগুলির উন্নয়ন এবং সংস্কারমূলক সব কাজ ৯০ শতাংশ শেষ হয়ে যাবে। সিসি ক্যামেরা বসানো থেকে ডিউটি রুম, শৌচাগার থেকে বিদ্যুৎ সংযোগের কাজ— চিকিৎসকদের দাবির মধ্যে যেগুলি আছে, তার সবই প্রায় শেষের পথে। মুখ্যসচিবের সেই কাজের খতিয়ান নিয়ে প্রশ্ন তুললেন জুনিয়র ডাক্তারেরা। তাঁরা বলেন, ‘‘কাজের অগ্রগতি নিয়ে আমরা সন্দিহান।’’
সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে অনশনকারীদের শারীরিক অবস্থার কথা জানালেন আন্দোলনকারী ডাক্তার দেবাশিস হালদার। তিনি বলেন, ‘‘অনশনকারীদের রক্তে শর্করার মাত্রা কমছে। শারীরিক অবস্থাও উদ্বেগজনক। তবে তাঁদের মনোবল এখনও দৃঢ়।’’
সোমবারই ধর্নামঞ্চ থেকে জুনিয়র ডাক্তারেরা ঘোষণা করেছিলেন, মঙ্গলবার সকাল ৯টা থেকে প্রতীকী অনশনের কথা। ১২ ঘণ্টা অনশন করবেন তাঁরা। তাঁদের এই অনশনে যোগ দেবেন সিনিয়র ডাক্তার, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মীরা। মঙ্গলবার রাত ৯টার পর সাংবাদিক বৈঠক করে প্রতীকী অনশন তুলে নেওয়ার অনুরোধ করলেন জুনিয়র ডাক্তারেরা।
শনিবার রাত থেকে ধর্মতলায় ‘আমরণ অনশনে’ বসেছেন জুনিয়র ডাক্তারের। শনিবার প্রথমে ছ’জন চিকিৎসক অনশন শুরু করেছিলেন। রবিবার সেই অনশনে যোগ দেন আরজি করের জুনিয়র ডাক্তার অনিকেত মাহাতো। সেই অনশন ৭২ ঘণ্টা পার। তবে এখনও সরকারের তরফে কোনও সাড়া মেলেনি, দাবি আন্দোলনকারীদের।