প্রতীকী ছবি
বারো মাসে তেরো পার্বণের দেশে এখন সাতাশ অনুরোধের আসর। যার ফলে পূর্ণ লকডাউনের দিন ঠিক করতেও জেরবার রাজ্য সরকার। এই পটভূমিতেই স্রোতের বিপরীতে হাঁটার বার্তা উঠে এল নাগরিকদের একাংশের একটি চিঠিতে।
সোমবার নিজেদের ‘অরাজনৈতিক মুসলিম নাগরিক’ বলে পরিচয় দিয়ে বেশ কয়েক জনের স্বাক্ষরিত একটি ই-মেল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে পাঠানো হয়েছে। তাতে দেশ তথা রাজ্যে করোনা সংক্রমণের বাড়বাড়ন্তের মধ্যে ইদের নমাজের ঢালাও অনুমতিতে ক্ষোভ প্রকাশ করা হয়। চিঠিটির বক্তব্য— মসজিদে নমাজের জমায়েতে মাস্ক পরে লোকে ঢুকলেও পারস্পরিক দূরত্ব রাখা কার্যত সম্ভব হয়নি। এই অবস্থা চলতে থাকলে বিপজ্জনক দৃষ্টান্ত তৈরি হয় যা আরও অজস্র ধর্মীয় জমায়েতের জন্য যথেচ্ছাচারের বাঁধ খুলে দেয়।
সমাজকর্মী মুদার পাথেরিয়া, চিত্রশিল্পী ওয়াসিম কপূর, পুষ্টিবিশারদ হিনা নাফিস থেকে শুরু করে চিকিৎসক, ব্যবসায়ী প্রমুখদের দাবি, এক দিকে রাজ্যে কয়েকটি দিন পূর্ণ লকডাউন জারি করা হচ্ছে, অন্য দিকে মাঝেমধ্যেই জমায়েতের অনুমতিতে রাজ্য নরম মনোভাব দেখাচ্ছে। তা এক ধরনের স্ববিরোধ। চিঠিতে লেখা হয়েছে, ‘ইদের নমাজ বাড়িতে বসে পড়লেও ক্ষতি নেই।’
মুখ্যমন্ত্রীকে লেখা চিঠির স্বাক্ষরকারীরা বলছেন, তথাকথিত মুসলিম ভোটব্যাঙ্কের ধারণা থেকে বেরিয়ে সরকার কাজ করুক। এর আগে আইনের শাসন কার্যকর করার ক্ষেত্রে মুসলিম নাগরিকদের প্রতি পক্ষপাতের অভিযোগ মুছতেও সরকারকে সচেষ্ট হতে বলেছিলেন কলকাতাবাসী মুসলিমদের একাংশ।
আসন্ন পুজো থেকে নানা উৎসবে দূরত্ব-বিধি মানা কার্যকর করা নিয়ে নানা মহলে এখন দুশ্চিন্তা কাজ করছে। তার প্রেক্ষিতে এই চিঠিকে স্বাগত জানিয়ে সাহিত্যিক বাণী বসু বলেন, ‘‘সংখ্যাগুরু সমাজের মধ্যেও অনেকেই উৎসব এড়িয়ে চলতে চান। রাজনীতিকে জব্দ করতে সময়ে সময়ে এ কথাগুলোই শুনিয়ে দেওয়া দরকার, যেমনটি কয়েক জন মুসলিম সহ-নাগরিক পেরেছেন।’’