নির্যাতিতার বাপের বাড়িতে বাম প্রতিনিধিরা

মধ্যমগ্রামের নির্যাতিতার সঙ্গে দেখা করতে শাসনের বোয়ালঘাটায় এল বামপন্থীদের একটি দল। ওই এলাকায় মহিলার বাপের বাড়ি। বামপন্থীদের প্রতিনিধি দলে এ দিন ছিলেন ভারতী মুৎসুদ্দী, কিন্নর রায়-সহ চার জন। গণধর্ষণের ঘটনার সূত্র ধরে দীর্ঘ দিন বাদে শাসনে বামেদের কোনও প্রতিনিধি দলের দেখা মিলল। ভারতীদেবী অবশ্য জানান, তাঁরা কোনও রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিত্ব করতে আসেননি। মানবিক কারণেই নির্যাতিতার সঙ্গে দেখা করতে এসেছেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বনগাঁ শেষ আপডেট: ৩০ মে ২০১৫ ০৩:১৪
Share:

মধ্যমগ্রামের নির্যাতিতার সঙ্গে দেখা করতে শাসনের বোয়ালঘাটায় এল বামপন্থীদের একটি দল। ওই এলাকায় মহিলার বাপের বাড়ি।

Advertisement

বামপন্থীদের প্রতিনিধি দলে এ দিন ছিলেন ভারতী মুৎসুদ্দী, কিন্নর রায়-সহ চার জন। গণধর্ষণের ঘটনার সূত্র ধরে দীর্ঘ দিন বাদে শাসনে বামেদের কোনও প্রতিনিধি দলের দেখা মিলল। ভারতীদেবী অবশ্য জানান, তাঁরা কোনও রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিত্ব করতে আসেননি। মানবিক কারণেই নির্যাতিতার সঙ্গে দেখা করতে এসেছেন। মহিলা ও তাঁর পরিবারের সঙ্গে দেখা করার পরে ভারতীদেবী এ দিন বলেন, ‘‘রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলার অবস্থা ভয়াবহ। ঘুমন্ত শিশুর মাথায় বন্দুক ঠেকিয়ে এখানে মহিলাকে গণধর্ষণ করা হচ্ছে। সব থেকে বড় কথা, মহিলা আতঙ্কিত। তাঁকে বাপের বাড়িতে এসে আশ্রয় নিতে হয়েছে।’’

ভারতীদেবী শাসন থানায় গিয়ে অভিযোগ করেন, ঘটনার পর দিন নির্যাতিতাকে বাড়িতে নজরবন্দি করে রাখা হয়েছিল। কোনও
মতে তিনি মায়ের সঙ্গে বাড়ি ছেড়ে বাপের বাড়িতে এসে আশ্রয় নিয়েছেন। প্রসঙ্গত, শাসনের সিপিএম নেতা মজিদ আলি ওরফে মজিদ মাস্টার গত বিধানসভা ভোটের আগে থেকেই এলাকা ছাড়া। বাড়ি ফেরার চেষ্টা করায় এর আগে শাসনে হেনস্থাও হতে হয়েছে তাঁকে। মজিদ এ দিন বলেন, ‘‘ভারতীরা গিয়েছেন, এটা খুবই আনন্দের কথা।’’ ঘটনাচক্রে, নির্যাতিতা মহিলার বাবা সিপিএমের দলীয় সদস্য এবং শাসনে মজিদ-ঘনিষ্ঠ বলেই পরিচিত।

Advertisement

সিপিএমের উত্তর ২৪ পরগনা জেলা ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক নেপালদেব ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘ওখানে তো আমাদের প্রচুর লোক ঘরছাড়া। গত পঞ্চায়েত ভোটের রেখা সিপিএম নেত্রী রেখা গোস্বামী শাসনে গিয়ে হেনস্থা হন। ওখানে আমাদের মিটিং-মিছিল করা নিষিদ্ধ।’’ এ প্রসঙ্গে তৃণমূলের জেলা সভাপতি জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বলেন, ‘‘এ দিনের ঘটনায় প্রমাণ হল, শাসনের আইন-শৃঙ্খলা ঠিক আছে। সিপিএমের লোকেরা ওখানে অবাধেই ঘুরে এল।’’

এর আগে শাসনে মজিদ মাস্টার ঢুকতে গেলে মেয়ে-বৌরা বঁটি-কাটারি নিয়ে তা রুখে দেবেন বলে একাধিক বার হুমকি দিয়েছিলেন জ্যোতিপ্রিয়। এ দিন তিনি ফের বলেন, ‘‘দুষ্কৃতীরা যদি এলাকায় ঢোকে, আর স্থানীয় মানুষ প্রতিরোধ করেন, তা হলে আমরা কী করতে পারি!’’

ইতিমধ্যে, বুধবার রাতে মধ্যমগ্রামের রাজবাটি এলাকায় গণধর্ষণের ঘটনায় জড়িত সন্দেহে পুলিশ আরও দুই যুবককে গ্রেফতার করেছে। এই নিয়ে মূল অভিযুক্ত মহম্মদ শাহাবুদ্দিন ওরফে ক্যাশ-সহ গ্রেফতার হল অভিযুক্ত সকলেই।

পুলিশ জানায়, বৃহস্পতিবার রাতে দত্তপুকুর থানার সিঁথিবড়া এলাকার একটি গোপন আস্তানা থেকে নুর ইসলাম ওরফে শেখ রাজু এবং মহম্মদ শফিক নামে দু’জনকে ধরা হয়। তাদের বাড়ি রাজবাটি এলাকাতেই। উত্তর ২৪ পরগনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ভাস্কর মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘জেরায় ধৃতেরা অপরাধের কথা কবুল করেছে।’’

ধৃতদের সকলকে এ দিন বারাসত আদালতে তোলা হলে বিচারক তাদের ৪ দিন পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। মহিলার স্বামীকে এ দিনও দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন পুলিশ আধিকারিকেরা।

বুধবার রাত ১২টা নাগাদ রাজবাটি গ্রামের বাসিন্দা বছর একুশের এক বধূকে গণধর্ষণ করে এলাকারই তিন যুবক। তাদের মধ্যে ক্যাশকে মহিলা চিনতে পেরেছিলেন। বাকি দু’জন তাঁর মুখচেনা হলেও ওই মহিলা তাদের নাম জানতেন না। অভিযোগ, ওই তিন যুবক মাঝরাতে কাঠ-দরমার দরজা লাথি মেরে খুলে ঘরে ঢুকে পড়ে। সাড়ে তিন বছরের ঘুমন্ত শিশুর মাথায় বন্দুক ধরে তার মাকে ধর্ষণ করে তিন জন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement