গ্রাম পঞ্চায়েত, পুরসভা থেকে জেলা পরিষদ পর্যন্ত দখল হয়ে যাচ্ছে। বিধানসভা ভোটে জেতার কয়েক মাসের মধ্যেই বিরোধী দল থেকে বিধায়কেরা পর্যন্ত পা বাড়িয়েছেন শাসক শিবিরে। লাগাতার এই দল ভাঙার খেলায় রাজ্যে গণতন্ত্র বিপন্ন হচ্ছে বলে অভিযোগ করে এ বার বিধানসভার অধিবেশনে সরব হওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে বিরোধী শিবির। এবং এ ক্ষেত্রেও ভুক্তভোগী দুই পক্ষ কংগ্রেস ও বামফ্রন্টের মধ্যে ফের সমন্বয় রেখেই প্রতিবাদের পরিকল্পনা হচ্ছে।
বিধানসভার বিশেষ অধিবেশন শুরু হচ্ছে কাল, শুক্রবার। রাজ্যের নাম বদলই অধিবেশনের মূল আলোচ্য। সঙ্গে কেন্দ্রের আদলে জিএসটি বিল ও রাজ্যের প্রতি কেন্দ্রের বঞ্চনার প্রতিবাদে প্রস্তাব এনে আলোচনা হওয়ার কথা। রাজ্যে ডেঙ্গি ও বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনার জন্য বিরোধীরা অধিবেশনের সময়সীমা আরও দু-এক দিন বাড়ানোর দাবি তুলেছিল। কিন্তু এখনও সরকার পক্ষ তাতে রাজি হয়নি। সংক্ষিপ্ত এই সময়ের মধ্যেই কংগ্রেস ও বাম বিধায়কেরা দল ভাঙানো নিয়ে হইচই বাধাতে তৈরি হচ্ছেন।
সিপিএম রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর বৈঠকে বুধবার প্রাথমিক ভাবে আলোচনা হয়েছে, দল ভাঙানোর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ বিধানসভায় তোলা হবে। দক্ষিণ ২৪ পরগনার মহেশতলা এলাকার চটা গ্রাম পঞ্চায়েত অনাস্থা এনে দখলের পরিকল্পনা সম্প্রতি আদালতের দ্বারস্থ হয়ে রুখতে পেরেছে বামেরা। এর পরে বিধানসভায় কী ভাবে প্রতিবাদ করা যায়, তা নিয়ে বাম পরিষদীয় দলনেতা সুজন চক্রবর্তী কথা বলবেন বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নানের সঙ্গে। সুজনবাবুর বক্তব্য, ‘‘প্রশাসন যদি শাসকের হয়ে দল ভাঙাতে সক্রিয় হয়, আর কী করার থাকে? তবু প্রতিবাদ তো করতেই হবে।’’ মান্নান এখন দিল্লিতে। কংগ্রেসের সহ-সভাপতি রাহুল গাঁধী তাঁকে পরামর্শ দিয়েছেন, তৃণমূলের এই অগণতান্ত্রিক কাজের বিরুদ্ধে মানুষের দরবারে যেতে। দিল্লি থেকেই মান্নান এ দিন বলেছেন, ‘‘বিধানসভায় প্রতিবাদ করলে সেই আওয়াজ মানুষের কাছেই পৌঁছবে। যৌথ ভাবেই আমরা প্রতিবাদ করব।’’
বিধানসভার বাইরে সাধারণ ধর্মঘট এবং অন্য বিষয় নিয়েও রাস্তায় ফিরতে চায় বামেরা। রাজ্যে শিল্প নেই, কাজ নেই, শিক্ষক নিয়োগ বন্ধ— এ সবের প্রতিবাদে ১৫ সেপ্টেম্বর কলেজ স্কোয়ার থেকে মিছিল করে ‘রাজভবন অভিযানে’র ডাক দিয়েছে ১২টি বামপন্থী ছাত্র ও যুব সংগঠন। সে দিন বিপুল ছাত্র-যুবদের সামিল করতে চায় তারা। ডিওয়াইএফআইয়ের রাজ্য সভাপতি সায়নদীপ মিত্রের কথায়, ‘‘রাজ্যপাল সময় দিলে প্রতিনিধিদল তাঁর সঙ্গে দেখা করবে। নয়তো রাস্তায় বসে প্রতিবাদ হবে।’’