কাটমানি নিয়ে তর্ক, বিষ খেলেন নেতা

কাটমানি ফেরত দেওয়া নিয়ে গত দেড় মাস ধরে সরগরম মেখলিগঞ্জ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মেখলিগঞ্জ শেষ আপডেট: ২২ অগস্ট ২০১৯ ০২:১২
Share:

হাসপাতালে আনা হয়েছে মন্টু মণ্ডলকে। নিজস্ব চিত্র

গত এক মাসে তিনি কয়েক বার কাটমানি ফিরিয়েছেন। কয়েক বার টাকা ফেরানোর জন্য মুচলেকাও দিয়েছেন। কিন্তু এই নিয়ে স্থানীয় চাপ এখনও সমান ভাবে রয়েছে, দাবি তাঁর পরিবারের। তেমনই কয়েক জন মুচলেকার দিন ধরে বুধবার টাকা চাইতে আসেন তাঁর কাছে।

Advertisement

এই নিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে কথা কাটাকাটিও হয়। পরিবারের দাবি, তার পরেই ঘরে ঢুকে বিষ খান মেখলিগঞ্জ পুরসভার প্রাক্তন কাউন্সিলর মন্টু মণ্ডল। ঘটনার পরপরই তাঁকে মেখলিগঞ্জ মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু সেখানে শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে মন্টুকে জলপাইগুড়ি সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে রেফার করা হয়।

কাটমানি ফেরত দেওয়া নিয়ে গত দেড় মাস ধরে সরগরম মেখলিগঞ্জ। এই নিয়ে জুলাইয়ের গোড়ায় মেখলিগঞ্জ পুরসভার প্রাক্তন পুরপ্রধান তথা তৃণমূল নেতা মিঠু সিংহ সরকারের স্বামী বিষ্ণু অধিকারীকে ঘেরাও করেন হাউসিং ফর অল প্রকল্পের উপভোক্তারা। পর দিন ঘেরাও হন পুরসভার প্রাক্তন উপপ্রধান। এর কয়েক দিন পরে, ১১ জুলাই কাটমানির টাকা ফেরত দিতে নিজেই উপভোক্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন মন্টু মণ্ডল। এক মাসের মধ্যে তিনি টাকা ফেরতের মুচলেকা দেন বলে পুরসভা সূত্রে দাবি।

Advertisement

স্থানীয় সূত্রে বলা হচ্ছে, সেই অনুযায়ী ১১ অগস্ট উপভোক্তারা তাঁর কাছে টাকা ফেরত আনতে যান। অভিযোগ, তখন মন্টু জানান, তিনি টাকা ফেরত দিতে পারবেন না। পরিবার সূত্রে দাবি, অনেক তর্কাতর্কির পরে শেষ পর্যন্ত পাঁচ জনকে পাঁচ হাজার টাকা করে, অর্থাৎ মোট ২৫ হাজার টাকা ফেরত দেন তিনি। এর পরে তিনি টাকা ফেরত দেওয়ার আর একটি মুচলেকা দেন বলে জানা গিয়েছে। ১৪ অগস্ট মোট আড়াই লক্ষ টাকা ফেরান মন্টু।

পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে বলা হচ্ছে, মুচলেকা অনুযায়ী বুধবার ছিল টাকা ফেরতের দিন। এ দিন সকাল থেকে প্রচুর উপভোক্তা তাঁদের বাড়ির সামনে ভিড় জমান। কিন্তু মন্টু বেরিয়ে এসে জানান, তিনি গত রাতে ও এই দিন সকালে কয়েক জন উপভোক্তার বাড়ি গিয়ে টাকা দিয়ে এসেছেন। তাই আপাতত আর কিছু দিতে পারবেন না। উপভোক্তারা দাবি করেন, টাকা তো মন্টুর বাড়ি থেকে মেটানোর কথা ছিল, তা হলে তিনি অন্যের বাড়িতে গেলেন কেন? পরিবারের দাবি, এই নিয়ে তর্কাতর্কির পরে ঘরে ঢুকে বিষ খান তিনি।

মন্টুর ছেলে সুমন বলেন, ‘‘এ দিন বাড়ির সামনে টাকা ফেরত নিতে অনেকেই আসেন। তাঁরা বাবাকে হেনস্থা করেন। তুলে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা হয়। চূড়ান্ত অপমানিত হয়ে বাবা বিষ খান।’’ মন্টুর পরিবারের অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন বলে জানান বিজেপি নেতা আসেকার রহমান। তিনি বলেন, ‘‘মুচলেকায় টাকা ফেরত দেওয়ার কথা মন্টুবাবু নিজেই লিখেছেন। সেই মতো উপভোক্তারা এ দিন টাকা ফেরত নিতে এসেছেন। মন্টুবাবুকে কোনও রকম হেনস্থা করা হয়নি। কথার মধ্যেই তিনি টাকা আনার কথা বলে ঘরে যান। ঘরে গিয়েই বিষ খান বলে শুনেছি।’’

মেখলিগঞ্জ থানায় কোনও অভিযোগ দায়ের হয়নি এখনও। তবে ছেলে সুমন জানান, বাবার চিকিৎসার দিকটা দেখে তার পরে তাঁরা অভিযোগ জানাবেন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement