দুর্ব্যবহারের অভিযোগ তুলে কিছু দিন আগেই শ্রীরামপুরে এক মহিলা বিচারকের এজলাস বয়কট করেছিলেন এক শ্রেণির আইনজীবী। শেষ পর্যন্ত পরিস্থিতি সামাল দিতে সেখানে হস্তক্ষেপ করতে হয় কলকাতা হাইকোর্টকে। এ বার হাইকোর্টেরই এক প্রবীণ বিচারপতি তাঁদের একাংশের সঙ্গে ঠিকঠাক আচরণ করছেন না বলে অভিযোগ তুলে এবং তার প্রতিবাদে ওই বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ বয়কটের সিদ্ধান্ত নিল হাইকোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশন।
ওই কৌঁসুলি সংগঠন সূত্রের খবর, বুধবার দুপুরে বিচারপতি গিরীশ গুপ্তের ডিভিশন বেঞ্চে একটি জামিনের মামলার শুনানিতে যোগ দিয়েছিলেন প্রবীণ আইনজীবী মিলন মুখোপাধ্যায়। ওই মামলার প্রসঙ্গে অন্য এক প্রবীণ বিচারপতির আগাম জামিনের একটি রায়ের উল্লেখ করে মিলনবাবু তাঁর মক্কেলকে জামিন দেওয়ার আবেদন জানান।
এই আর্জির পরিপ্রেক্ষিতে আগাম জামিন সংক্রান্ত সংশ্লিষ্ট রায়ের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন বিচারপতি গুপ্ত। তা নিয়ে আইনজীবী মিলনবাবুর সঙ্গে বিচারপতি গুপ্তের উত্তপ্ত বাদানুবাদ শুরু হয়। এবং সেটা চলে বেশ কিছু ক্ষণ। তার পরেই বিচারপতির কথাবার্তায় মর্যাদাহানি হয়েছে বলে অভিযোগ তুলে আদালত কক্ষ ছেড়ে বেরিয়ে যান মিলনবাবু।
এজলাসে বিতণ্ডার জেরে মিলনবাবু কক্ষ ত্যাগ করেছিলেন। আর বিচারপতি গুপ্ত এবং তাঁর বেঞ্চের অন্য বিচারপতি শিবসাধন সাধু এজলাস ত্যাগ করেন বিচার কক্ষের বাইরে কৌঁসুলি-বিক্ষোভের দরুন। ক্ষিপ্ত মিলনবাবু বেরিয়ে যেতেই আইনজীবীদের একাংশ বিচারপতি গুপ্তের আদালত কক্ষের বাইরে প্রতিবাদ জানাতে থাকেন। সেই বিক্ষোভে ক্ষুব্ধ হয়েই দুই বিচারপতি এজলাস ছেড়ে চলে যান।
আইনজীবী শিবিরের একাংশের বক্তব্য, বাগ্বিতণ্ডা ও বিক্ষোভের জেরে কৌঁসুলি এবং বিচারপতিদের পরপর কক্ষত্যাগের ঘটনা নজিরবিহীন না-হলেও বেশ বিরল। এ দিন ওই ঘটনার পরেই হাইকোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশন বেলা সাড়ে ৩টেয় জরুরি সভা ডাকে। সংগঠনের সম্পাদক রানা মুখোপাধ্যায় জানান, সভায় শতাধিক আইনজীবী প্রস্তাব দেন, বিচারপতি গুপ্ত নিঃশর্ত ক্ষমা না-চাওয়া পর্যন্ত তাঁর ডিভিশন বেঞ্চ বয়কট করুক বার অ্যাসোসিয়েশন। সম্পাদক বলেন, ‘‘ওই প্রস্তাবের ভিত্তিতেই বয়কটের সিদ্ধান্ত সর্বসম্মতিতে গৃহীত হয়েছে।’’