প্রতীকী ছবি।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশ মেনে কী করে তোলাবাজির টাকা ফেরত দেওয়া যাবে, তা নিয়ে সংশয়ে রাজ্যের উকিলদের একাংশ।
মঙ্গলবার নজরুল মঞ্চে দলীয় সভায় মমতা বলেছেন, ‘‘গরিবদের জন্য বাংলার বাড়ি প্রকল্পের টাকা থেকে ২৫ শতাংশ কমিশন দলের লোকেরা নিচ্ছে, আমি সব খবর রাখি। সমব্যথী প্রকল্পে দু’হাজার টাকার মধ্যে ২০০ টাকা কেন নেওয়া হচ্ছে? দল এ সব বরদাস্ত করবে না। যাঁরা টাকা নিয়েছেন, ফেরত দিয়ে দিন।’’ মুখ্যমন্ত্রী এই কথা বলার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই পূর্ব বর্ধমান, বীরভূম, হুগলি-সহ বিভিন্ন জেলায় টাকা ফেরত চেয়ে তৃণমূল নেতাদের বাড়ির সামনে বিক্ষোভ শুরু হয়েছে। অনেক জায়গায় পুলিশও ডাকতে হয়েছে। পরিস্থিতি ক্রমশ ঘোরালো হয়ে উঠছে।
সত্যিই কি এ ভাবে টাকা ফেরানো সম্ভব? আইনজীবীদের একাংশের মতে, এ ভাবে টাকা ফেরত দিতে গেলে আইনি ঝামেলায় জড়িয়ে পড়তে হবে ওই তৃণমূল নেতাদের। কী ভাবে? আইনজীবী জয়ন্তনারায়ণ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘টাকা ফেরত দিতে গেলে প্রথমে মেনে নিতে হবে, তিনি তোলা আদায় করেছিলেন। তোলাবাজি জামিন অযোগ্য অপরাধ। তাই টাকা ফেরত দিলেই তার বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা করা যেতে পারে।’’ আইনজীবী বিকাশ ভট্টাচার্যের কথায়, ‘‘তোলাবাজির টাকা ফেরালেও অপরাধ মাফ হবে না। টাকা ফেরালে অভিযুক্ত অপরাধ কবুল করেছেন বলেই আইনের চোখে ধরা হবে।’’
কী ধারায় এই মামলা হবে? আইনজীবীদের কথায়, ভারতীয় দণ্ডবিধিতে তোলাবাজির (এক্সটরশন) জন্য ৩৮৪ এবং ৩৮৬ ধারা রয়েছে। এর মধ্যে ৩৮৪ ধারাটি সাধারণ তোলাবাজির জন্য। এর শাস্তি তিন বছরের জেল ও জরিমানা। প্রাণের ভয় বা গুরুতরভাবে জখম করার দেখিয়ে তোলা আদায় করা হলে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৮৬ ধারা প্রয়োগ করা হয়। এতে সর্বোচ্চ দশ বছরের জেল ও জরিমানা হতে পারে।
এই অবস্থায় কোনও নেতা কেন তোলার টাকা ফেরত দিতে আসবেন—তা নিয়েই তাই প্রশ্ন তুলেছেন আইনজীবীরা।