অন্তিম শয়ানে অশোক ঘোষ। মাটি দিচ্ছেন বিমান বসু এবং অন্যেরা। রবিবার সুইসার আশ্রমে সুজিত মাহাতোর তোলা ছবি।
সুইসা স্টেশনের কাছে পতাকা-ফেস্টুন নিয়ে দাঁড়িয়ে ফরওয়ার্ড ব্লক। তার অল্প খানিকটা দূরেই পতাকা, ব্যানার-সমেত তৃণমূল। তারও পরে কংগ্রেস এবং সিপিএম। বিধানসভা ভোট ঘোষণা হয়ে যাওয়ার পরে তৃণমূল এবং বাম যখন আরও যুযুধান, শেষ যাত্রায় তাদের মিলিয়ে দিলেন অশোক ঘোষ!
সব রাজনৈতিক দল এবং সব ধরনের মানুষের একসঙ্গে সমাবেশ ঘটল রবিবার পুরুলিয়ার সুইসায়। স্কুল পড়ুয়া থেকে গৃহবধূ, সাধারণ কৃষক থেরে অবসরপ্রাপ্ত কর্মচারীর ভেঙে পড়া ভিড়ে সুইসার সুভাষ আশ্রমে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় সমাহিত করা হল ফ ব-র রাজ্য সম্পাদককে। প্রবীণতম বাম নেতাকে শ্রদ্ধা জানাতে নিজের ভ্রাতৃবিয়োগ সত্ত্বেও পুরুলিয়ায় ফ ব-র দফতরে উপস্থিত হয়েছিলেন মন্ত্রী শান্তিরাম মাহাতো। অশক্ত শরীরে এসেছিলেন সিপিএমের প্রাক্তন জেলা সম্পাদক নকুল মাহাতোও। সুইসায় সমাহিত করার সময়ে রাজ্য সরকারের তরফে হাজির ছিলেন মন্ত্রী মলয় ঘটক।
শ্রদ্ধা জানাতে এসেছিলেন কংগ্রেস বিধায়ক নেপাল মাহাতো। ফ ব-র সর্বস্তরের নেতা-কর্মীরা তো ছিলেনই। আর সমাহিত করার আগে শেষ বারের জন্য অশোকবাবুকে নিয়ে
মিছিলে ছিলেন বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিমান বসু।
কলকাতায় শোকমিছিল শেষে শনিবার বেশি রাতে পুরুলিয়ায় পৌঁছেছিল অশোকবাবুর মরদেহ। সেখান থেকে এ দিন সকালে রওনা হয়ে বাঘমুণ্ডির সুইসায় মরদেহ পৌঁছতে দুপুর গড়িয়ে গিয়েছিল। বাংলাদেশ থেকে শনিবার সন্ধ্যায় কলকাতায় ফিরেই সোজা বাঁকুড়া হয়ে পুরুলিয়া চলে গিয়েছিলেন বিমানবাবু। ফ ব-র সাধারণ সম্পাদক দেবব্রত বিশ্বাসের পাশাপাশি তাঁর প্রিয় ‘অশোকদা’কে অন্তিম শ্রদ্ধা জানিয়েছেন বিমানবাবুও। প্রয়াত নেতাকে ঘিরে এ দিন বাঘমুণ্ডিতে যে আবহ তৈরি হয়েছিল, তাতে আবেগাপ্লুত ফ ব নেতারা। দলের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য নরেন চট্টোপাধ্যায়ের কথায়, ‘‘জীবদ্দশায় সিঙ্গুর-নন্দীগ্রামের সময়ে সর্বদল বৈঠক ডেকে সব পক্ষকে একসঙ্গে বসিয়েছিলেন অশোকদা। মৃত্যুতেও তিনি মিলিয়ে দিয়ে গেলেন!’’ অশোকবাবুর স্মরণসভা হবে ১২ মার্চ, মৌলালির রামলীলা ময়দানে।