—ফাইল চিত্র।
তমলুক লোকসভার উপ নির্বাচনের আগে বিজেপি-তে যোগ দিতে চান সেখানকার প্রাক্তন সাংসদ এবং সিপিএম থেকে বহিষ্কৃত নেতা লক্ষ্মণ শেঠ। বস্তুত, তাঁর ইচ্ছে— তমলুকের উপ নির্বাচনে বিজেপি তাঁকে প্রার্থী করুক। বিজেপি অবশ্য লক্ষ্মণবাবুর প্রস্তাব নিয়ে ‘ধীরে চলো’ নীতিতে এগোচ্ছে।
বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ শনিবার বলেন, ‘‘লক্ষ্মণবাবুর সঙ্গে আমাদের কথা হয়েছে। উনি আমাদের দলে যোগ দেওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন। ওঁর তৈরি দল ভারত নির্মাণ পার্টিকেও বিজেপি-তে মিশিয়ে দিতে চেয়েছেন। তবে আমাদের দলে এখনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি।’’ লক্ষ্মণবাবুকে এ নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘‘আমি তো বিজেপি-তে যোগ দিইনি। ফলে তাদের ঘরের কথা আমি বলতে পারব না। আর এখনও কোনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত কোথাও হয়নি। এর বেশি কোনও মন্তব্য করব না।’’
বিজেপি সূত্রের খবর, ওই দলে যোগদানের ইচ্ছা নিয়ে লক্ষ্মণবাবু দিলীপবাবুর সঙ্গে দেখা করেছিলেন কয়েক মাস আগে। তখন তিনি তমলুক লোকসভার উপ নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার ইচ্ছের কথাও জানান। কিন্তু দিলীপবাবু তখন কোনও প্রস্তাবেই তাঁকে কোনও কথা দেননি। বলেছিলেন, দলে আলোচনা করে জানাবেন। পরে বিজেপি-র পক্ষ থেকে লক্ষ্মণবাবুকে বুঝিয়ে দেওয়া হয়, তমলুকের উপ নির্বাচনে তাঁকে প্রার্থী করা হবে, এর কোনও নিশ্চয়তা নেই। এই শর্ত ছাড়াই যদি তিনি যোগ দিতে চান, তা হলে ভেবে দেখা হবে। সাম্প্রতিক কালে লক্ষ্মণবাবু বিজেপি-কে বার্তা দিয়েছেন, তিনি নিঃশর্ত ভাবেই যোগ দিতে রাজি।
বিজেপি সূত্রের আরও খবর, শুক্রবার দলের কোর কমিটির বৈঠকে তমলুক এবং কোচবিহার লোকসভার উপ নির্বাচনের সম্ভাব্য প্রার্থীদের নাম নিয়ে আলোচনা হয়। তখন তমলুকের জন্য লক্ষ্মণবাবুর নামও ওঠে। বৈঠকে হাজির সিংহভাগ নেতাই ওই প্রস্তাবের বিরুদ্ধে মত দেন। তাঁদের যুক্তি, নন্দীগ্রাম-কাণ্ডের কলঙ্ক থেকে লক্ষ্মণবাবু এখনও মুক্ত নন। সিবিআই তদন্তে তিনি ক্লিন চিট পাননি। সুতরাং, তাঁকে তমলুকে প্রার্থী করা হলে নন্দীগ্রামের কেলেঙ্কারির দায় বিজেপি-র ঘাড়ে চাপবে। যে ঘটনায় বামফ্রন্ট সরকারের হাত পুড়েছিল, তার আঁচ নিজেদের গায়ে ডেকে আনা অর্থহীন। তমলুকে বিজেপি-র গর্ব করার মতো সংগঠন নেই। সেখানে লক্ষ্মণবাবুকে প্রার্থী করা যেতে পারে শুধু তাঁর নামডাককে কাজে লাগিয়ে সাংগঠনিক ঘাটতি পূরণের সুযোগ থাকলে। কিন্তু এ ক্ষেত্রে সেটা করতে গেলে হিতে বিপরীত হতে পারে বলে বিজেপি-র বেশির ভাগ নেতা মনে করছেন। তমলুকের জন্য তাঁদের বরং বেশি পছন্দ শমীক ভট্টাচার্য বা লকেট চট্টোপাধ্যায়কে। জয় বন্দ্যোপাধ্যায়ও ওই আসনে দাঁড়াতে চান। কোচবিহারের সম্ভাব্য প্রার্থী হিসাবে রাজ্য নেতাদের পছন্দ হেমচন্দ্র বর্মনকে। যিনি ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে ওই আসনে প্রার্থী হয়েছিলেন। এর পাশাপাশি তমলুক এবং কোচবিহারের জন্য সংশ্লিষ্ট দুই জেলা কমিটিও প্রার্থীর নাম পাঠাবে।
রাজ্য বিজেপি নেতৃত্বের অবশ্য লোকসভার প্রার্থী ঠিক করার এক্তিয়ার নেই। এ ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধাম্ত নেওয়ার অধিকারী কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। রাজ্য বিজেপি কেবল দু’টি আসনের জন্য পছন্দের ক্রম অনুসারে নামের তালিকা সুপারিশ করবে।