প্রদেশ কংগ্রেসের সহ-সভাপতি হলেন প্রাক্তন সিপিএম সাংসদ লক্ষ্মণ শেঠকে। ফাইল চিত্র।
প্রদেশ কংগ্রেসের সহ-সভাপতি পদে বসানো হল প্রাক্তন সিপিএম সাংসদ লক্ষ্মণ শেঠকে। মঙ্গলবার একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করে লক্ষ্মণের নিয়োগের কথা জানিয়েছে প্রদেশ কংগ্রেস। তাতে জানানো হয়েছে, প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীর নির্দেশে অবিলম্বে লক্ষ্মণকে এই পদের দায়িত্ব দেওয়া হল।
পূর্ব মেদিনীপুরের তমলুক লোকসভা কেন্দ্রের প্রাক্তন সাংসদ লক্ষ্মণ এক সময় দাপুটে সিপিএম নেতা হিসাবেও পরিচিত ছিলেন। নন্দীগ্রামে জমিরক্ষা আন্দোলনকারীদের উপর হামলায় জড়িত থাকার অভিযোগে তৃণমূল সরকারের আমলে মুম্বই থেকে গ্রেফতার করা হয়েছিল ‘আত্মগোপনকারী’ লক্ষণকে। বাম আমলে হলদিয়া শিল্পাঞ্চলের একচ্ছত্র রাজত্ব ছিল তাঁর। শ্রমিক আন্দোলনের হাত ধরেই ওই শিল্পাঞ্চলে উত্থান ঘটে লক্ষ্মণের। রাজ্যের প্রয়াত প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসুর জমানায় সিপিএমে অন্তর্ভুক্তি ঘটেছিল তাঁর।
১৯৮২-৯১ তিন বার সুতাহাটা থেকে বিধানসভা ভোটে জয়ী হয়েছিলেন সিপিএম নেতা লক্ষ্মণ। ১৯৯৬ সালে তমলুক লোকসভা কেন্দ্রে লড়ে হেরে গিয়েছিলেন। জেতেন ১৯৯৮ থেকে ২০০৪ পর্যন্ত তিন বার। ২০০৯ সালে তমলুক লোকসভা কেন্দ্রে বামেদের হয়ে লড়লেও শুভেন্দু অধিকারীর কাছে পরাজিত হন তিনি। তবে বাম শাসনের পতনের পর দীর্ঘ দিন সিপিএমের সদস্য লক্ষ্মণের সঙ্গে ওই দলের সম্পর্ক ছেদ হয়। জনসমক্ষে দলের ভাবমূর্তিকে হেয় করার অভিযোগে ২০১৪ সালে সিপিএম থেকে বহিষ্কৃত হন তিনি। পরে ‘ভারত নির্মাণ মঞ্চ’ নামে নিজের দলও গড়েছিলেন। যদিও ২০১৬ সালে বিজেপিতে যোগ দেন লক্ষ্মণ। এর বছর দু’য়েক পর বিজেপি থেকে তাঁকে বহিষ্কার করা হয়েছিল। ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনের আগে কংগ্রেসে যোগদান করেন লক্ষ্মণ। তাঁর যোগদান নিয়ে আপত্তি তুলেছিলেন তৎকালীন বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান। যদিও মান্নানের সেই বিরোধকে উপেক্ষা করেই লক্ষ্মণকে দলে নেন তৎকালীন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্র।
’১৯-এর লোকসভা নির্বাচনের তমলুক থেকেই কংগ্রেসের টিকিটে দাঁড়িয়েছিলেন লক্ষ্মণ। তবে তাঁর জামানত বাজেয়াপ্ত হয়েছিল। অনেকের দাবি, সে সময় দলীয় অন্তর্দ্বন্দ্বের কারণে কংগ্রেসের সঙ্গেও তাঁর দূরত্ব বেড়েছিল। চলতি বছরে একাধিক বার তাঁর তৃণমূলে যোগদানের জল্পনাও জোরালো হয়েছিল। খোদ লক্ষ্মণও প্রকাশ্যে তৃণমূলে যোগদানের ইঙ্গিত দিয়েছিলেন। যদিও বাস্তবে তা হয়নি।