মে দিনে প্রচারে শ্রমিকের কথা কই, উঠল প্রশ্ন

মে দিনে তবু কিছু অনুষ্ঠানে গিয়েছেন বামপন্থীরা। তারাতলায় রাজ্য পরিবহণকর্মীদের মধ্যে মে দিবসের কিছু অনুষ্ঠানে ছিলেন নন্দিনী।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০২ মে ২০১৯ ০১:০৪
Share:

ছবি এএফপি।

মে দিবস শ্রমিকদের দিন। মে দিনের ভোট-প্রচারে সেই শ্রমিকদের দাবিটাই কি ব্রাত্য থাকল?

Advertisement

বুধবার দুপুরে তারাতলা নেচার পার্কের কাছে বন্ধ কারখানা পোদ্দার প্রজেক্টের সুতোকল তল্লাটে প্রশ্নটা উঠে এল। দলহীন ট্রেড ইউনিয়ন কর্মীদের ডাকে অনুষ্ঠানে যাঁরা জড়ো হয়েছিলেন, তাঁদের কেউ কেউ অন্য সময়ে তৃণমূল বা সিপিএমের পতাকা নিয়ে হেঁটে থাকেন। তাঁদের বেশির ভাগেরই আক্ষেপ, ভোট-প্রচারের লব্জে শ্রমিকের ন্যূনতম মজুরি বা অসংগঠিত শ্রমিকদের সুরক্ষার মতো দাবিগুলি কোথায় হারিয়ে যাচ্ছে!

দুপুরে গার্ডেনরিচের অ্যাসবেস্টস মোড় থেকে বিচালিঘাটের দিকে পদযাত্রায় যেতে যেতে কলকাতা দক্ষিণ কেন্দ্রের সিপিএম প্রার্থী নন্দিনী মুখোপাধ্যায় সেটা অস্বীকার করলেন না। তাঁর কথায়, ‘‘কেন্দ্রের বিদায়ী শাসক দল বিজেপি এক ধরনের উগ্র দেশপ্রেমের বুলি তুলে ধরছে। রাজ্যের শাসক দল তাদের সঙ্গে তরজায় ব্যস্ত। সুতরাং শ্রমিক, ছাত্রছাত্রী, বেকার যুবক— কারও স্বার্থই দেখা হচ্ছে না।’’ দমদমের তৃণমূল প্রার্থী সৌগত রায়ের অবশ্য দাবি, ‘‘বিজেপি যেমনই প্রচার করুক, কেন্দ্র-ভিত্তিক প্রচারে আমরা তা আমল দিচ্ছি না।’’ সরাসরি মে দিনের কথা না-বললেও এ দিন কামারহাটিতে কলকারখানা অধ্যুষিত এলাকাতেই বড় মিছিল করেন তিনি।

Advertisement

মে দিনে তবু কিছু অনুষ্ঠানে গিয়েছেন বামপন্থীরা। তারাতলায় রাজ্য পরিবহণকর্মীদের মধ্যে মে দিবসের কিছু অনুষ্ঠানে ছিলেন নন্দিনী। পোস্তায় মুটিয়াদের মধ্যে পতাকা উত্তোলনের অনুষ্ঠানে মে দিন নিয়ে দু’কথা বললেন কলকাতা উত্তর কেন্দ্রের সিপিএম প্রার্থী কনীনিকা বসু ঘোষও। সকালে খানপুর ইন্ডাস্ট্রিয়াল বেল্টে প্রচারের পরে যাদবপুরের সিপিএম প্রার্থী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্যকে ওই তল্লাটে কয়েকটি আবাসনে ব্যস্ত থাকতে দেখা গেল। শহর কলকাতার ভোট-চিত্রে সামগ্রিক ভাবে কিন্তু মে দিনের থেকেও একটা ছুটির দিনের গুরুত্বটাই বেশি। প্রার্থীরা যে-দিন অনেক বেশি লোকজনের সঙ্গে কথা বলার সুযোগ পাবেন।

দমদমের বিজেপি প্রার্থী শমীক ভট্টাচার্য এ দিন দুপুর পর্যন্ত কল্যাণীতে অমিত শাহের সভা নিয়েই ব্যস্ত ছিলেন। সন্ধ্যায় বরাহনগরে কিছু সভা করতে দেখা গেল তাঁকে। কলকাতা দক্ষিণের বিজেপি প্রার্থী চন্দ্র বসুর দাবি, বস্তি এলাকাগুলিতে ঘুরে এক প্রস্ত প্রচার তিনি সেরে ফেলেছেন। আপাতত আবাসনে আবাসনে ‘চায়ে পে চর্চা’য় ব্যস্ত তিনি। বিজেপির জাতীয় রাজনীতির লব্জে ইতিমধ্যেই সড়গড় এই প্রার্থী বলছিলেন, সকাল থেকেই কার্যকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক আর ‘জনসম্পর্ক’ চলছে। এই সব কাজ সারতে সারতে চন্দ্রবাবুর দুপুরের খাওয়া সারতেই বিকেল ৪টে।

কলকাতা উত্তরের তৃণমূল প্রার্থী সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় এ দিন বিবেকানন্দ রোডে ভাঙা উড়ালপুলের আশেপাশে প্রচারে জোর দিয়েছিলেন। ২৫ নম্বর ওয়ার্ডে কাউন্সিলর স্মিতা বক্সী, এলাকার নেতা সঞ্জয় বক্সীরা সকলেই ‘সুদীপদা’র সঙ্গী। আঁতিপাঁতি ঘুরে সকলের সঙ্গে কথা বলতেই দুপুর গড়িয়ে গেল। কলকাতা দক্ষিণের তৃণমূল প্রার্থী মালা রায়ের কাছেও দিনটা আর-পাঁচটা ভোট-প্রচারের দিনের মতোই। গোটা এলাকাকে প্রচারের আওতায় আনতে বড় বড় রোড শোয়ে জোর দিচ্ছেন। সকালে ১২৩ নম্বর ওয়ার্ডে শখেরবাজার, জেমস লং সরণিতে ঘোরার পরে সন্ধ্যায় মালাকে দেখা গেল গড়িয়াহাট-বালিগঞ্জ এলাকায়।

তবে সন্ধ্যায় একটি ব্যতিক্রমী ছবি দেখা গেল গোল পার্ক থেকে যাদবপুরের পথে। নাগরিক সমাজের একাংশের গান-মিছিলে পুরনো স্মৃতি উস্কে দিল নানান গণসঙ্গীতের সুর। সংস্কৃতি জগতের কিছু চেনা মুখও সেই মিছিলে শামিল হয়েছিলেন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement