হাঁসফাঁস গরমে মিছিল ও যানজটে নাজেহাল মহানগর

ঘড়িতে তখন দুপুর দু’টো। মহাত্মা গাঁধী রোডে বাসের ভিতরে বসে দরদর করে ঘামছিলেন বছর তিরিশের অভিরূপ বিশ্বাস। প্রায় পনেরো মিনিট ধরে একই জায়গায় ঠায় দাঁড়িয়ে বাসটি। প্রচণ্ড গরমে একই অবস্থা দাঁড়িয়ে থাকা এক ট্যাক্সির মাঝবয়সী যাত্রীরও। বুধবার দুপুরে দুর্ভোগের এই ছবিটা শুধু মহাত্মা গাঁধী রোডেই নয়, ফুটে উঠেছিল মধ্য কলকাতার একটা বড় অংশে। সৌজন্যে কলেজ স্কোয়ার থেকে ধর্মতলামুখী একটি মিছিল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১০ এপ্রিল ২০১৪ ০১:০৮
Share:

যানজটের গেরোয়। বুধবার ধর্মতলায়।—নিজস্ব চিত্র

ঘড়িতে তখন দুপুর দু’টো। মহাত্মা গাঁধী রোডে বাসের ভিতরে বসে দরদর করে ঘামছিলেন বছর তিরিশের অভিরূপ বিশ্বাস। প্রায় পনেরো মিনিট ধরে একই জায়গায় ঠায় দাঁড়িয়ে বাসটি। প্রচণ্ড গরমে একই অবস্থা দাঁড়িয়ে থাকা এক ট্যাক্সির মাঝবয়সী যাত্রীরও।

Advertisement

বুধবার দুপুরে দুর্ভোগের এই ছবিটা শুধু মহাত্মা গাঁধী রোডেই নয়, ফুটে উঠেছিল মধ্য কলকাতার একটা বড় অংশে। সৌজন্যে কলেজ স্কোয়ার থেকে ধর্মতলামুখী একটি মিছিল। পুলিশ জানিয়েছে, এ দিন দুপুরে বিভিন্ন অর্থলগ্নি সংস্থার এজেন্ট ও আমানতকারীরা একটি মিছিল করেন। সেটি কলেজ স্কোয়ার থেকে নির্মলচন্দ্র স্ট্রিট, ওয়েলিংটন, এস এন ব্যানার্জি রোড হয়ে ধর্মতলায় পৌঁছয়। কলেজ স্ট্রিট থেকেই অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের একটি মিছিল একই রাস্তা ধরে ধর্মতলার রানি রাসমণি অ্যাভিনিউয়ে পৌঁছয়। তার জেরেই মধ্য কলকাতায় যানজট হয়। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে বিকেল গড়িয়ে যায়।

ট্রাফিক পুলিশ সূত্রের খবর, অর্থলগ্নি সংস্থার মিছিলে যোগ দিতে কলেজ স্কোয়ারে হাজার দুয়েক মানুষ জড়ো হয়েছিলেন। জমায়েতের ফলে কলেজ স্ট্রিট ও মহাত্মা গাঁধী রোডে গাড়ি চলাচল থমকে যায়।

Advertisement

দুপুর সওয়া একটা নাগাদ মিছিল কলেজ স্কোয়ার থেকে ধর্মতলার উদ্দেশে রওনা দেয়। কলেজ স্ট্রিট হয়ে নির্মলচন্দ্র স্ট্রিটের দিকে এগোনোর সময়ে বন্ধ হয়ে যায় বি বি গাঙ্গুলি স্ট্রিটের গাড়ি চলাচল। যখন যে পথ ধরে এগিয়েছে মিছিল দু’টি, সেখানে থমকে গিয়েছে গাড়ি। কলকাতা পুলিশ সূত্রের খবর, প্রথম মিছিলটি এস এন ব্যানার্জি রোড দিয়ে ধর্মতলায় যাওয়ার সময়ে শিয়ালদহ থেকে ধর্মতলামুখী যান চলাচল সাময়িক ভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। তাতেও নাকাল হন যাত্রীরা। আলিপুরের আবহাওয়া দফতর সূত্রের খবর, এ দিন কলকাতা শহরে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৬.৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তার সঙ্গে বাতাসে যথেষ্ট পরিমাণে আর্দ্রতাও ছিল। তাই ভরদুপুরে বাসে-ট্রামে আটকে পড়ে হাঁসফাঁস করেছেন সকলে।

যানজটের কথা স্বীকার করে নিয়েছেন লালবাজারের ট্রাফিক কর্তারাও। তবে তাঁদের বক্তব্য, পরিস্থিতি সামাল দিতে মিছিলের রাস্তার যানবাহন অন্য রাস্তা দিয়ে ঘুরিয়ে দেওয়া হয়। তবে তাতেও যে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়নি, তা স্বীকার করে এক পুলিশকর্তার বক্তব্য, “মধ্য কলকাতার রাস্তার যে পরিসর, তাতে মিছিলের যানজট এড়ানো প্রায় অসম্ভব।” ট্রাফিক পুলিশ সূত্রের খবর, বিকেল তিনটে নাগাদ অর্থলগ্নি সংস্থার মিছিলটি ধর্মতলা পৌঁছয়। তার পরে পরিস্থিতি ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হতে শুরু করে।

সন্ধ্যায় ফের যানজট দেখা দেয় উত্তর কলকাতার একাংশে। পুলিশ জানায়, সন্ধ্যায় পাইকপাড়া থেকে একটি ধর্মীয় মিছিল বেরোয়। পাইকপাড়া বাস ডিপো থেকে বেরিয়ে বি টি রোড, নর্দার্ন অ্যাভিনিউ হয়ে দমদমে পৌঁছয় সেটি। এর ফলে বি টি রোড ও সংলগ্ন অঞ্চলে যানজট হয়।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement