রবিবাসরীয় দুর্ভোগ

ভিড়ে ফের বেআব্রু মেট্রোর পরিকাঠামো

দেখতে দেখতে কেটে গিয়েছে ৩১ বছর। কিন্তু উন্নতি বলতে ৮ কিলোমিটার যাত্রাপথ বৃদ্ধি এবং সঙ্গে ১৩টি ‘খোঁড়া’ এসি রেক। যা দিল্লির তুলনায় উন্নতির নিরিখে মাত্র এক শতাংশ। কিন্তু এটুকু পরিকাঠামো বাড়াতে গিয়েই যাত্রী পরিষেবার রেখচিত্রের মান নেমে গিয়েছে অনেকটাই। ফলে রবিবারের মতো ছুটির দিনে ভিড় বাড়লেই যাত্রীদের নাভিশ্বাস উঠছে যাতায়াত করতে গিয়ে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৯ মার্চ ২০১৫ ০২:১৯
Share:

দেখতে দেখতে কেটে গিয়েছে ৩১ বছর। কিন্তু উন্নতি বলতে ৮ কিলোমিটার যাত্রাপথ বৃদ্ধি এবং সঙ্গে ১৩টি ‘খোঁড়া’ এসি রেক। যা দিল্লির তুলনায় উন্নতির নিরিখে মাত্র এক শতাংশ। কিন্তু এটুকু পরিকাঠামো বাড়াতে গিয়েই যাত্রী পরিষেবার রেখচিত্রের মান নেমে গিয়েছে অনেকটাই। ফলে রবিবারের মতো ছুটির দিনে ভিড় বাড়লেই যাত্রীদের নাভিশ্বাস উঠছে যাতায়াত করতে গিয়ে। যাত্রীদের অভিযোগ, স্বাচ্ছন্দ্য বিষয়টাই উবে গিয়েছে মেট্রো থেকে।

Advertisement

রবিবার ব্রিগেডে ছিল সিপিএমের সমাবেশ। ফলে এমনিতেই রাজনৈতিক সমর্থকদের ভিড় হওয়ার কথা মেট্রোয়। সঙ্গে নিত্যযাত্রীরা তো রয়েছেনই। এ কথা মেট্রো কর্তৃপক্ষ জানতেন না এমনও নয়। কিন্তু এ দিনও সকাল ১০টা থেকে সেই আধ ঘণ্টা অন্তর মেট্রো চালানোয় সাধারণ যাত্রীরা চরম দুর্ভোগে পড়েন। ভিড়ের চাপে বিশেষ করে মহিলা ও শিশুদের ট্রেন থেকে নামতে বা উঠতে হিমশিম খেতে হয়।

যাত্রীদের অভিযোগ, এ দিন বেলা ১২টা পেরোতে না পেরোতেই মেট্রোয় পা রাখা দায় হয়ে ওঠে। ঠিক ওই সময়েই ভিড় বাড়িয়ে দেন ব্রিগেড সমাবেশে যোগ দিতে আসা কলকাতা ও পার্শ্ববর্তী এলাকার মানুষজনেরা। সঙ্গে নিত্যযাত্রীরা তো ছিলেনই। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ভিড়ের চাপে শহরের পাতালপথ কার্যত অগম্য হয়ে ওঠে। ভিড়ের জন্য তখন বহু মেট্রোর দরজাও বন্ধ হচ্ছিল না। যার জেরে বেলা দুটো পর্যন্ত অনেক মেট্রোই সময় সারণি মেনে চলতে পারেনি।

Advertisement

যাত্রীদের আরও অভিযোগ, রাজনৈতিক দলের সমর্থকদের ভিড়ে যেমন বহু যাত্রীই এ দিন নির্দিষ্ট স্টেশনে নামতে পারেননি, তেমনই প্ল্যাটফর্মে থাকা বহু যাত্রী মেট্রোয় উঠতেও পারেননি। ব্রিগেড লাগোয়া স্টেশনগুলির অবস্থা আরও সঙ্গীন হয়ে ওঠে। একটি ট্রেনের যাত্রীরা প্ল্যাটফর্ম ছেড়ে বেরোনোর আগেই পরের ট্রেন ঢুকে যাওয়ায় ময়দান, পার্ক স্ট্রিটের মতো ষ্টেশনে ভিড়ের চাপে কার্যত নাভিশ্বাস ওঠে যাত্রীদের।

কিন্তু যে কলকাতা মেট্রো এক দিন দেশের গৌরব ছিল তার এমন অবস্থা কেন? মেট্রোকর্তা ও কর্মীদের একাংশের কথায়, নড়বড়ে প্রশাসন ও দুর্বল পরিকাঠামো তো আছেই, সঙ্গে যোগ হয়েছে কর্মীদের একাংশের কাজে অনীহা। সব মিলে মেট্রো ক্রমশ নুয়ে পড়ছে। এখন এমন অবস্থা, রেলবোর্ডও আর কলকাতা মেট্রো নিয়ে ভাবছে না। না হলে জেনারেল ম্যানেজারের মতো পদ দীর্ঘ দিন ধরে অস্থায়ী রাখা হত না।

দু’বছর আগেও রবিবার মেট্রো চলত দুপুর দুটো থেকে। যাত্রীরা বার বার বললেও মেট্রোকর্তারা সময় পরিবর্তনের আবেদনে সে ভাবে গা-করেননি। পরে সংসদীয় কমিটির সদস্যেরা তীব্র ভর্ৎসনা করায় বাধ্য হয়ে রবিবার সকাল ১০টা থেকে মেট্রো চালানো শুরু হয়। কিন্তু সে সময় বার বার বলা হয়েছিল, যে হারে যাত্রী সংখ্যা বাড়ছে তাতে সকাল ১০টা থেকে দুপুর ২টো পর্যন্ত আধ ঘণ্টা অন্তর মেট্রো চালানোর বদলে অবিলম্বে এই ব্যবধান কমিয়ে আনতে হবে।

কিন্তু কোথায় কী? বরং গত পুজোতেও মেট্রো বন্ধ রাখা হয় সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত। এ নিয়ে তখন ক্ষোভও উগরে দেন যাত্রীরা। যাত্রীদের অভিযোগ, এ দিনও মেট্রো জেনেশুনে সেই একই কাজ করেছে। এত বড় সমাবেশ থাকা সত্ত্বেও মেট্রো চালানো হল আধঘণ্টার ব্যবধানেই। আর তাতেই ভুগলেন যাত্রীরা। যদিও মেট্রোকর্তাদের যুক্তি, চাইলেও ব্যবধান কমানোর মতো পরিকাঠামো তাঁদের নেই। রেক বাড়ানো না হলে সময়ের ব্যবধান কমানো যাবে না। কারণ, ছুটির দিন বেশির ভাগ রেকের মেরামতি করা হয়।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement