মহাত্মা গাঁধী রোডের এটাই পরিচিত ছবি। ছবি: স্বাতী চক্রবর্তী।
বারাসত থেকে বাসে হাওড়া আসছিলেন দেবব্রত দাস। মহাত্মা গাঁধী রোডে বড়বাজারে ঢোকার আগে ঘুমে চোখ জড়িয়ে গিয়েছিল। প্রায় তিরিশ মিনিট পরে তীব্র হর্নের শব্দে তাঁর ঘুম ভাঙল। ভাবলেন হাওড়া এসে গিয়েছে। তার পরেই ভুল ভাঙল। দেখলেন বাস তখনও বড়বাজারেই। সামনে লাইন দিয়ে বাস ও ট্যাক্সি দাঁড়িয়ে আছে। আরও কিছু ক্ষণ অপেক্ষা করলেন। কিন্তু বাস এগলো না। শেষ পর্যন্ত হেঁটে হাওড়া স্টেশনে গেলেন তিনি।
দেবব্রতবাবুর মতো অনেকেই প্রতি দিন বড়বাজারের কাছে মহাত্মা গাঁধী রোডে তীব্র যানজটে নাকাল হন। প্রতি দিনই এই অঞ্চলে তীব্র যানজট হয়। কলেজ স্ট্রিট এলাকা থেকে এই যানজট শুরু হয়। চলে প্রায় স্ট্র্যাণ্ড রোড পর্যন্ত। ধর্মতলা থেকে হাওড়াগামী সব বাস স্ট্র্যাণ্ড রোড দিয়েই যায়। ব্রাবোর্ন রোডের উড়ালপুলের নীচে যানজট তীব্র আকার নেয় বলে পুলিশ সূত্রের খবর। এক পথচারী সুফল দাস বলেন, “রাস্তায় তীব্র যানজট। ফুটপাথ দিয়েও হাঁটা যায় না। এ রাস্তায় প্রতি দিন যাতায়াত করাই মুশকিল।”
বড়বাজার ব্যবসার কেন্দ্র। রবিবার ছাড়া প্রতি দিনই ভিড় উপচে পড়ে। মাল নিয়ে যাওয়ার জন্য রয়েছে প্রচুর ঠেলাগাড়ি। ঠেলাগাড়ির জন্যই যানজট চরম আকার নেয় বলে পুলিশের মত। পুলিশ সূত্রের খবর, এমনিতেই দ্বিমুখী এই রাস্তাটি সঙ্কীর্ণ। তার উপরে দু’ধারে ঠেলা দাঁড়িয়ে থাকে। মাঝে ট্রামলাইন। অধিকাংশ পথচারী রাস্তা দিয়েই চলাফেরা করেন। পুলিশ সূত্রের খবর, পথচারীদের সচেতনতার অভাবও এই যানজটের জন্য দায়ী।
কলকাতা পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের এক কর্তার মতে, যে ভাবে দোকান, ক্রেতা এবং গাড়ির সংখ্যা বাড়ছে তাতে এই সরু রাস্তা যানজট মুক্ত করা কার্যত অসম্ভব। নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক ট্রাফিক বিভাগের এক কর্তা বলেন, “কলেজ স্ট্রিট পর্যন্ত কোনও উড়ালপুল তৈরি করা না গেলে এই অঞ্চলকে যানজট মুক্ত করা অসম্ভব।” যদিও রাজ্য প্রশাসন সূত্রে খবর, আপাতত এই অঞ্চলে উড়ালপুল তৈরির কোনও পরিকল্পনা নেই।