ধরা পড়েও ফের প্রতারণা করে গ্রেফতার

প্রতারণার পরে ধরা পড়ে সব কিছু ফেরতের প্রতিশ্রুতি দিয়েও ফের প্রতারণা! নিজেকে সিআইডি অফিসার দাবি করে কম দামে ভাল ফ্ল্যাট ও প্রতারিতের সন্তানদের পুলিশে চাকরির টোপ দিয়েছিল অভিযুক্ত। প্রতারককে বিশ্বাস করে তাকে লক্ষাধিক টাকা ও কিছু গয়নাও দিয়েছিলেন অভিযোগকারিণী। পরে তিনি কাগজে দেখেন, প্রতারণার অভিযোগে পুলিশের হাতে ধরা পড়েছে ওই অভিযুক্ত।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০২:২৭
Share:

প্রতারণার পরে ধরা পড়ে সব কিছু ফেরতের প্রতিশ্রুতি দিয়েও ফের প্রতারণা!

Advertisement

নিজেকে সিআইডি অফিসার দাবি করে কম দামে ভাল ফ্ল্যাট ও প্রতারিতের সন্তানদের পুলিশে চাকরির টোপ দিয়েছিল অভিযুক্ত। প্রতারককে বিশ্বাস করে তাকে লক্ষাধিক টাকা ও কিছু গয়নাও দিয়েছিলেন অভিযোগকারিণী। পরে তিনি কাগজে দেখেন, প্রতারণার অভিযোগে পুলিশের হাতে ধরা পড়েছে ওই অভিযুক্ত। সঙ্গে সঙ্গে তিনি থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। কিন্তু আলিপুর আদালত চত্বরে দাঁড়িয়ে অভিযুক্ত ব্যক্তি ওই মহিলাকে কথা দেয়, তাঁর টাকা-গয়না ফেরত দিয়ে দেবে। এর পরে ওই মহিলা অভিযোগ তুলে নেন। কিন্তু তা সত্ত্বেও কিছু ফেরত না পাওয়ায় তিনি ফের প্রথমে সার্ভে পার্ক ও পরে আলিপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। আলিপুর থানা ঘটনার তদন্তভার হাতে নিয়ে রবিবার রাতে দুই অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে।

ঠিক কী ঘটেছিল?

Advertisement

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, সার্ভে পার্কের বাসিন্দা কৃষ্ণা পাইন এক বেসরকারি সংস্থায় কাজ করতেন। সেই সূত্রে ২০১২ সালে তাঁর সঙ্গে পরিচয় হয় অভিযুক্ত কৌশিক চক্রবর্তীর। কৌশিক নিজেকে সিআইডি-র ইনস্পেক্টর হিসেবে পরিচয় দেয়। এর কিছু দিন পরেই মৃত্যু হয় কৃষ্ণাদেবীর স্বামীর। অভিযোগ, সুযোগ বুঝে কৃষ্ণাদেবীর বিশ্বাস অর্জন করে তাঁকে বিমা করার জন্য চাপ দিতে থাকে কৌশিক। কৃষ্ণাদেবীকে ফ্ল্যাট ও তাঁর সন্তানদের পুলিশে চাকরিরও প্রতিশ্রুতি দেয়। কৃষ্ণাদেবীও বিশ্বাস করে কৌশিকের হাতে কয়েক লক্ষ টাকা এবং কিছু গয়না তুলে দেন।

কিন্তু ২০১৩ সালের মাঝামাঝি কাগজে কৃষ্ণাদেবী দেখেন, পুলিশ অফিসার সেজে প্রতারণার অভিযোগে ধরা পড়েছে কৌশিক। সঙ্গে সঙ্গে কৃষ্ণাদেবীও সার্ভে পার্ক থানায় প্রতারণার অভিযোগ দায়ের করেন কৌশিকের বিরুদ্ধে।

তদন্তকারী অফিসারেরা জানান, এর পরেই ঘটনার মোড় ঘুরে যায়। মামলা চলার সময়ে কৌশিকের এক সঙ্গী শম্ভু কর্মকার যোগাযোগ করে কৃষ্ণাদেবীর সঙ্গে। সে কৃষ্ণাদেবীকে আশ্বাস দেয়, তিনি অভিযোগ তুলে নিলে তাঁর টাকা ফেরত দেওয়া হবে। কথা মতো আলিপুর আদালত চত্বরে শম্ভু কৃষ্ণাদেবীর হাতে কিছু সোনা তুলেও দেয়। পুলিশের দাবি, শম্ভুকে বিশ্বাস করে কৃষ্ণাদেবী অভিযোগ তুলে নেন। ফলে জামিন পেয়ে যায় কৌশিক। কিন্তু তার পরেও বহু দিন কিছু ফেরত না পাওয়ায় কৃষ্ণাদেবী ফের কৌশিক ও শম্ভুর সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেন এবং ব্যর্থ হন। এর পরেই তিনি জানতে পারেন, তাঁকে যে সোনা বন্ধক হিসেবে শম্ভু দিয়েছিল তা নকল।

পুলিশ জানিয়েছে, বিষয়টি জানার পরেই গত বছরের এপ্রিলে কৃষ্ণাদেবী প্রথমে সার্ভে পার্ক থানায় যোগাযোগ করেন। কিন্তু ঘটনাস্থল আলিপুর আদালত চত্বর হওয়ায় আলিপুর থানায় ফের প্রতারণার অভিযোগ দায়ের করেন তিনি। এক তদন্তকারী অফিসার জানান, তদন্ত শুরু হওয়ার পরে দেখা যায় ওই অভিযুক্তদের মোবাইলগুলি বন্ধ। যে নামে মোবাইল কানেকশন নেওয়া হয়েছিল, তা-ও ভুয়ো। এর পরেই রবিবার পুলিশ বসিরহাটের এক জায়গায় শম্ভুর খোঁজ পায়। রাতেই গ্রেফতার করা হয় তাকে। পুলিশের দাবি, শম্ভুর সোনার দোকান রয়েছে।

তদন্তকারীদের দাবি, জেরায় শম্ভু তাদের জানিয়েছে, রবিবার রাতেই মুকুন্দপুরের একটি বাড়িতে আসার কথা ভুয়ো পুলিশ অফিসার কৌশিকের। সেই মতো রাতেই সেখানে হানা দিয়ে কৌশিককে গ্রেফতার করে পুলিশ। যদিও ধৃতদের থেকে কিছু উদ্ধার হয়নি। এই ঘটনার সঙ্গে আর কেউ জড়িত কি না, খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement