নিখোঁজ হওয়ার প্রায় উনিশ ঘণ্টা পরে শুক্রবার বিকেলে বাগবাজার ঘাটে ভেসে উঠল বছর পঁচাশির বৃদ্ধের মৃতদেহ। পুলিশ জানায়, ভবানীপুরের বাসিন্দা ওই ব্যক্তির নাম মুন্সী সিংহ। বৃহস্পতিবার রাতে তাঁর পরিবারের তরফে ভবানীপুর থানায় তাঁর নিখোঁজ ডায়েরি করা হয়েছিল।
পুলিশ সূত্রে খবর, শম্ভুনাথ পণ্ডিত রোডে মুন্সীবাবুর একটি হোটেল রয়েছে। হোটেলের দায়িত্ব ছেলে ধনরাজ সিংহের উপরে থাকলেও নিয়মিত সেখানে যেতেন তিনি। বৃহস্পতিবারও তিনি সেখানে গিয়েছিলেন এবং সন্ধ্যা সাড়ে ৮টা নাগাদ গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে যান। তার পর থেকেই নিখোঁজ ছিলেন তিনি।
ঘটনাচক্রে বৃহস্পতিবার রাতে টহলদারির সময়ে দ্বিতীয় হুগলি সেতুর উপর রেলিং ঘেঁষে একটি লাল রঙের মারুতি গাড়ি দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে পুলিশ। পরিত্যক্ত গাড়িটি নিয়ে যাওয়া হয় হেস্টিংস থানায়। গাড়ির ভিতর চশমার বাক্স, লাঠি, জলের বোতল ছিল বলে জানিয়েছে পুলিশ। লালবাজার ট্রাফিক কন্ট্রোল রুম থেকে গাড়ির নম্বরের সূত্র ধরে মুন্সীবাবুর বাড়ির ঠিকানা খুঁজে সেখানে খবর দেওয়া হয়।
ধনরাজ শুক্রবার জানান, মুন্সীবাবুর স্ত্রী আগেই মারা গিয়েছেন। ভবানীপুরের নন্দন রোডের একটি ফ্ল্যাটে মুন্সীবাবু একাই থাকতেন। এক বছর আগে তাঁর প্রস্টেট ক্যানসার ধরা পড়ে। বেসরকারি একটি হাসপাতালে তাঁর চিকিৎসা চলছিল। সেখানেই তাঁর অস্ত্রোপচারও হয় দু’বার। তবে, বৃদ্ধকে এই রোগের কথা জানানো হয়নি বলে জানান ধনরাজ। কিন্তু তিনি বলেন, “দিন দশেক আগে বাবা কী ভাবে যেন ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার কথা জেনে যান। বোধহয় কারও সঙ্গে ডাক্তারের প্রেসক্রিপশন নিয়ে আলোচনা করেছিলেন।”
পুলিশ অনুমান, ক্যানসারের কথা জানতে পেরে হয়তো মানসিক ভাবে অবসাদগ্রস্ত হয়ে পড়েন মুন্সীবাবু। তার জেরেই তিনি হয়তো বিদ্যাসাগর সেতু থেকে গঙ্গায় ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। পুলিশ জানায়, প্রাথমিক ভাবে মৃতদেহে কোনও আঘাতের চিহ্ন মেলেনি। দেহটি ময়না তদন্তে পাঠানো হয়েছে।