কুপ্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় রাস্তায় ফেলে এক মহিলার হাত ও মুখ ব্লেড দিয়ে ক্ষতবিক্ষত করে দেওয়ার অভিযোগ উঠল এক যুবকের বিরুদ্ধে। পুলিশ জানায়, ঘটনাটি ঘটেছে সোমবার সন্ধ্যায় ঠাকুরপুকুর থানা এলাকার কদমতলায়। অভিযুক্ত যুবকের নাম পাঁচু নষ্কর। সে শকুন্তলা পার্ক-আনন্দপুর রুটে মিনিবাসের কন্ডাক্টর বলে জানিয়েছেন ওই মহিলা। ঘটনার পরে আহত মহিলাকে প্রথমে বিদ্যাসাগর হাসপাতালে ও পরে বাঙুর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। মঙ্গলবার রাতেই অবশ্য অভিযুক্ত পাঁচুকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
পুলিশ জানায়, ওই মহিলা কদমতলা গ্যারাজের কাছে একটি বাড়িতে আয়ার কাজ করেন। রাত আটটা থেকে সকাল ছ’টা পর্যন্ত তাঁর কাজের সময়। প্রতি দিনের মতো সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ছ’টা নাগাদ কাজে আসছিলেন তিনি। সে সময়ে একটি গলির কাছে পাঁচু রাস্তা আটকে ওই মহিলাকে কুপ্রস্তাব দেয় বলে অভিযোগ। এর পরে তাঁর হাত ধরে টেনে নিয়ে যায় পাশের একটি গলিতে। সেখানে গিয়ে ফের কুপ্রস্তাব দেয়। কিন্তু মহিলা রাজি না হওয়ায় তাঁকে রাস্তায় ফেলে এলোপাথাড়ি ব্লেড চালায় ওই যুবক। মহিলার চিৎকার শুনে ছুটে আসেন স্থানীয় লোকজন। স্থানীয় বাসিন্দারাই তার পরে পুলিশে খবর দেন। পুলিশ এসে রক্তাক্ত অবস্থায় ওই মহিলাকে প্রথমে বিদ্যাসাগর হাসপাতাল ও পরে রাতে বাঙুর হাসপাতালে ভর্তি করে।
মঙ্গলবার দুপুরে হাসপাতালে শুয়ে ওই অভিযোগকারিণী জানান, কয়েক বছর আগে তিনি স্বামীর ঘর ছেড়ে চলে আসেন। তিনি বলেন, “স্বামী আমার উপরে অত্যাচার করত। তাই আমি একমাত্র ছেলেকে নিয়ে ঘর ছেড়ে চলে আসি।” মহিলা জানিয়েছেন, কয়েক মাস আগে হরিদেবপুরে একটি আয়া সেন্টারে কাজ করার সময়ে পাঁচুর সঙ্গে তাঁর পরিচয় হয়। তার পর থেকে পাঁচু মাঝেমধ্যেই কুপ্রস্তাব দিত বলে অভিযোগ। ওই মহিলা বলেন, ‘‘আমি জেনেছিলাম পাঁচুর বিয়ে হয়েছিল। কিন্তু সে বৌয়ের সঙ্গে ও থাকে না।” পাঁচুর নজর এড়িয়ে তিনি ঠাকুরপুকুরে একটি আয়া সেন্টারে যোগাযোগ করেন। বর্তমানে সেখানেই কাজ করেন তিনি। পরে দক্ষিণ শহরতলির বিষ্ণুপুরে একটি বাড়ি ভাড়া নেন। সেখানেই দশ বছরের ছেলেকে নিয়ে থাকেন ওই মহিলা। তিনি আরও বলেন, ‘‘আমি ভেবেছিলাম ঠাকুরপুকুরে এসে পাঁচুর হাত থেকে নিস্তার পাব। কিন্তু ও এখানেও আমার পিছু নেয়।”
তাঁর অভিযোগ, “সোমবার কাজে আসার সময়ে আমাকে একটি গলির ভিতর নিয়ে গিয়ে কুপ্রস্তাব দিয়েছিল পাঁচু। আমি রাজি না হওয়ায় জোর করতে থাকে। আচমকাই গলির ভিতরে টেনে নিয়ে গিয়ে গালিগালাজ করে ব্লেড দিয়ে এলোপাথাড়ি আক্রমণ করে। আমি রাস্তায় পড়ে যাওয়ার পরেও ও থামেনি। হাত ও মাথা ক্ষতবিক্ষত করে দেয়।”