ডোমজুড়ে সেই গুদাম।
রিজার্ভ ব্যাঙ্কের অব্যবহৃত টাকার কুচির ‘সিকিউরিটি থ্রেড’ ব্যবহার করেই কারবারিরা জাল টাকাকে আসল রূপ দেওয়ার চেষ্টা করতেন বলে দাবি গোয়েন্দাদের। তদন্তকারীরা জানান, নিয়ম মতো ওই পুরনো টাকার কুচি নিলামের মাধ্যমে রেজিস্টার্ড ঠিকাদারের হাতে তুলে দেওয়ার কথা। এর পরেই তা অন্য কাজে ব্যবহার করার কথা ওই ঠিকাদার সংস্থার। কোনও মতেই তা বাইরের কারও হাতে পৌঁছনোর কথা নয়।
জাল টাকা-সহ ধৃত লোহার ছাঁট ব্যবসায়ী চন্দ্রশেখর জায়সবালকে জেরা করে তদন্তকারীদের দাবি, মানিকতলার বাড়িতে টাকা ছাপানোর পরে ওই সিকিউরিটি থ্রেড বসানো হত। কলকাতা পুলিশের স্পেশ্যাল টাস্ক ফোর্সের তদন্তকারীদের অনুমান, ঠিকাদার সংস্থা থেকেই টাকার কুচি কিনতেন চন্দ্রশেখর। সেই ঠিকাদার কে, তা জানতে চাইলে নিরুত্তর থেকেছেন তিনি। লালবাজার সূত্রের খবর, এসটিএফ রিজার্ভ ব্যাঙ্কের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে। তাদের উত্তর পেলে ওই রহস্যের জট খোলা সম্ভব বলে দাবি তদন্তকারীদের। পুলিশ যোগাযোগ করেছে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থাগুলির সঙ্গেও। আসল টাকা তৈরিতে যুক্ত কারও সঙ্গে চন্দ্রশেখরের যোগাযোগ ছিল বলে দাবি পুলিশের। তাঁদের হদিস পাওয়ার চেষ্টা চলছে।
টাকার কুচি।
গত চার দিন ধরে এসটিএফের তদন্তে উদ্ধার হওয়া জাল ভারতীয় নোটের আর্থিক মূল্য প্রায় ১০ কোটি টাকা। সেই সঙ্গে উদ্ধার হওয়া জাল বিদেশি মুদ্রার আর্থিক মূল্য কয়েক হাজার কোটি টাকা বলে মনে করছেন লালবাজারের কর্তারা। জাল টাকা ছাপানোর যন্ত্র, শিট, নকশা ও রাসায়নিকের পাশাপাশি মোবাইলের সিম কার্ড, ইন্টারনেট ডঙ্গলও মিলেছে ধৃতের কাছ থেকে॥
স্থানীয় এক চা বিক্রেতা জানান, প্রায় প্রতি দিনই চন্দ্রশেখর তাঁর দোকানে আসতেন। তবে কথাবার্তায় কিছু আঁচ করা যায়নি। তিনি বলেন, “শুক্রবার বেলা এগারোটা নাগাদ আমার দোকান থেকে চা খান পাপ্পু। তার পরে আর তাঁকে দেখা যায়নি।”
—নিজস্ব চিত্র।