গঙ্গায় চলছে তল্লাশি। বৃহস্পতিবার রাতে, ফেয়ারলি প্লেস ঘাটে। ছবি: স্বাতী চক্রবর্তী Sourced by the ABP
গঙ্গায় ঝাঁপ দিয়ে নিখোঁজ হয়ে গেলেন এক তরুণ। বৃহস্পতিবার বিকেলে ঘটনাটি ঘটেছে ফেয়ারলি প্লেস ঘাটে। পুলিশ জানিয়েছে, ওই তরুণের নাম আলতামাস ইরফান (২২)। তাঁর বাড়ি তপসিয়ায়। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ফেয়ারলি প্লেস ঘাটে চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। উত্তর বন্দর থানার পুলিশ জানিয়েছে, ওই ঘাটে ডুবুরি নামিয়ে আলতামাসের সন্ধান চালানো হচ্ছে। এখনও পর্যন্ত তাঁর খোঁজ মেলেনি।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ফেয়ারলি প্লেস ঘাটের কাছে এ দিন ওই তরুণের সঙ্গে তাঁরই বয়সি আর এক তরুণ ও এক তরুণী ঘোরাঘুরি করছিলেন অনেক ক্ষণ ধরে। ফেয়ারলি প্লেস ঘাট সংলগ্ন মিলেনিয়াম পার্কের গেটের কাছে দাঁড়িয়ে কথা বলছিলেন তাঁরা। স্থানীয় বাসিন্দা ঊর্মিলা শর্মা বলেন, ‘‘ওই তিন জনের মধ্যে মাঝে মাঝেই কথা-কাটাকাটি হচ্ছিল। ওঁদের মধ্যে এক জন কথা-কাটাকাটির সময়ে একটু বেশি মাত্রায় উত্তেজিত হয়ে ছোটাছুটি করছিলেন। হঠাৎ দেখি, ওই তরুণ অন্য দুই তরুণ-তরুণীর সঙ্গে ঝগড়া করতে করতেই দৌড়ে জেটির দিকে এগিয়ে গেলেন। আমরা সবাই হইহই করে উঠি। কিন্তু কিছু বুঝে ওঠার আগেই জেটিতে দাঁড়িয়ে থাকা একটি লঞ্চে উঠে সোজা গঙ্গায় ঝাঁপ দেন তিনি।’’ পুলিশের অবশ্য দাবি, আলতামাসের সঙ্গে এক তরুণীকেই দেখা গিয়েছিল। তরুণের কথা তারা শোনেনি।
স্থানীয়েরা জানাচ্ছেন, তখন ভাটা চলছিল। ঘাটের কাছে যাঁরা ছিলেন, তাঁদের কেউ কেউ গঙ্গায় নেমে খোঁজ শুরু করেন। কিন্তু ওই তরুণকে পাওয়া যায়নি। কিছু ক্ষণের মধ্যেই পুলিশ আসে। বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর ডুবুরিও জলে নেমে খোঁজ শুরু করেন। স্থানীয় বাসিন্দা রাজ যাদব বলেন, ‘‘ছেলেটা আমাদের পাশ দিয়েই ছুটে গেল ঘাটের দিকে। তখনও বুঝতে পারিনি যে, ও জলে ঝাঁপ দিতে যাচ্ছে। ভাবলাম, লঞ্চ ধরার জন্য তাড়াহুড়ো করছে। কারণ, ঘাটে তখন বাগবাজারমুখী একটি লঞ্চও দাঁড়িয়ে ছিল।’’ আর এক প্রত্যক্ষদর্শী জানিয়েছেন, বচসার মধ্যেই ওই তরুণ তাঁর ব্যাগের ভিতর থেকে একটি কাচের বোতল বার করেন। তার পরে সেই বোতলটি মাটিতে আছড়ে ভেঙে ফেলেন। ওই প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, ‘‘কথা-কাটাকাটি চলছিল ঠিকই। কিন্তু তা বলে ওই যুবক যে এর মধ্যেই দৌড়ে গিয়ে গঙ্গায় ঝাঁপ দেবেন, তা আমরা কল্পনাও করতে পারিনি।’’ পুলিশ জানিয়েছে, কোনও তরফেই রাত পর্যন্ত কোনও অভিযোগ জমা পড়েনি। আলতামাস একটি দোকানে অন্দরসজ্জার কাজ করেন বলে জানতে পেরেছে পুলিশ।
উত্তর বন্দর থানার পুলিশ জানিয়েছে, তদন্তে তারা জানতে পেরেছে, শহরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে স্নায়ুরোগের চিকিৎসা চলছে আলতামাসের। এ দিন সকালে তিনি বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন। তার পর থেকে তাঁর সঙ্গে বাড়ির কারও যোগাযোগ হয়নি।