ঝুমা দাস
এক ছেলে। আগামী কাল, রবিবার তার জন্মদিন। স্বামী পেশায় গা়ড়িচালক। যোগব্যায়াম শিখিয়ে তিনিও উপার্জন করেন। স্কুটিতে চেপে এ দিক-সে দিক যেতেন যোগব্যায়াম শেখাতে। সেই স্কুটি দুর্ঘটনার জেরেই শুক্রবার সকালে ট্যাঙ্কারের চাকায় পিষ্ট হয়ে মৃত্যু হল বেহালার সরশুনার বাসিন্দা ঝুমা দাসের।
তিরিশ বছর বয়সী ওই তরুণী এ দিন সকাল ১১টা নাগাদ বেহালার পাঠকপাড়া হয়ে সরশুনায় ফিরছিলেন। পুলিশ জানায়, পাঠকপাড়ার কাছে একটি গাড়ি ঝুমার স্কুটিটিকে ধাক্কা মেরে পালায়। ঝুমা স্কুটি নিয়ে রাস্তায় ছিটকে পড়লে পিছন থেকে এসে একটি তেলের ট্যাঙ্কার তাঁকে চাপা দেয়। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ট্যাঙ্কারটি দ্রুত গতিতে আসছিল। পুলিশ ট্যাঙ্কারটিকে চালক-সহ আটক করলেও প্রাইভেট গাড়িটি ধরা পড়েনি।
এ দিন ওই দুর্ঘটনাস্থলে দেখা যায় রাস্তার এক পাশে কাত হয়ে পড়ে রয়েছে একটি সাদা স্কুটি। পাশে ঘিয়ে রঙের প্যান্ট, কালো টি-শার্ট পড়া তরুণীর রক্তাক্ত নিথর দেহ। মাথা থেঁতলে গিয়েছে। সাদা একটা চট কেউ চাপা দিয়ে দিয়েছে মাথার উপর।
ঝুমার আত্মীয়েরা জানান, তাঁর স্বামী মলয় দাস প্রাইভেট গাড়ির চালক। সরশুনার গ্রিনপার্কে তাঁদের বাড়ি। রোজ সকাল সাড়ে ৫টা–৬টা নাগাদ ঝুমা বাড়ি থেকে বেরোতেন। বালিগঞ্জ, গড়িয়াহাট, নিউ আলিপুর-সহ বেশ কয়েকটি জায়গায় বাড়িতে গিয়ে যোগব্যায়াম শেখাতেন ওই তরুণী। শুক্রবার তিনি নিউ আলিপুরের একটি বাড়ি থেকে যোগব্যায়াম শিখিয়ে ফিরছিলেন। তখনই ওই দুর্ঘটনা ঘটে। পুলিশ রক্তাক্ত অবস্থায় ওই তরুণীকে উদ্ধার করে বিদ্যাসাগর স্টেট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
শুক্রবার সন্ধ্যায় মৃতার ননদ টিঙ্কু ঘোষ জানান, নিউ আলিপুরের যে বাড়ি থেকে যোগ-ব্যায়াম শিখিয়ে ঝুমা ফিরছিলেন সেখানে ঝুমার স্বামী গাড়িচালকের কাজ করেন। টিঙ্কু বলেন, ‘‘এখন ওঁদের ছেলেটার কী হবে কে জানে।’’